
ভারতীয় সংগীত জগতের অন্যতম শক্তিশালী কণ্ঠশিল্পী সুনিধি চৌহানের (Sunidhi Chauhan) কেরিয়ারের শিখরে পৌঁছানোর আগেই ব্যক্তিগত জীবনে বড় ঝড়ের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। মাত্র ১৮ বছর বয়সে, বাবা-মায়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে নৃত্য পরিচালক ববি খানকে বিয়ে করার সাহসী সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এই সিদ্ধান্তের কারণে পরিবার তাকে ঘর থেকে বের করে দেয়। সুনিধির যৌবনের শুরুতেই একটি কঠিন অধ্যায়ের সূচনা হয়।
‘পেহলা নশা’ গানের সময় প্রেমের সূত্রপাত:
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘পেহলা নশা’ গানের প্রোজেক্টে একসাথে কাজ করার সময় সুনিধি এবং ববি খান একে অপরের প্রতি আকৃষ্ট হন। দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে, তবে এই সম্পর্কের তীব্র বিরোধিতা করে উভয় পরিবার। তবুও, একসাথে থাকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এই জুটি ২০০২ সালে সাত পাকে বাঁধা পড়েন। বিয়ের পর সুনিধি ববির পরিবারের সাথে থাকতে শুরু করেন।
এক বছরেই ভেঙে যায় বিয়ে:
শুরুতে সবকিছু ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু, কিছুদিনের মধ্যেই ধর্মীয় মতবিরোধ এবং সাংস্কৃতিক পার্থক্য তাদের দাম্পত্য জীবনে ফাটল ধরাতে শুরু করে। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ববি খান তার পরিবারের কথায় রাজি হয়ে এই সম্পর্ক শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন। ফলস্বরূপ, বিয়ের মাত্র এক বছরের মধ্যেই সুনিধি এবং ববির বিচ্ছেদ ঘটে। এই ধাক্কার পর, সুনিধি তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরে যান এবং তাদের সাথে সম্পর্ক ঠিক করেন।
সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন সঙ্গীত পরিচালক অনু মালিক:
২০০৩ সালে বিবাহবিচ্ছেদের পর সুনিধি চৌহানের জীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। সেই সময় তার কেরিয়ার এখনও ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ফলে, হাতে টাকা না থাকায়, থাকার জন্য নিজের বাড়ি না থাকায় তাকে কষ্ট করতে হয়। এই কঠিন সময়ে তার পাশে দাঁড়ান বিখ্যাত সঙ্গীত পরিচালক অনু মালিক। তিনি সুনিধিকে সমর্থন দিয়ে সংগীত ক্ষেত্রে আবার দাঁড়াতে সাহায্য করেন।
আবার প্রেম পেলেন সুনিধি:
তিক্ত অভিজ্ঞতার পর, সুনিধি আবার প্রেমে বিশ্বাস স্থাপন করেন। প্রায় দুই বছর ধরে সঙ্গীত সুরকার হিতেশ সোনিকের সাথে ডেটিং করার পর, ২০১২ সালে তারা বিয়ে করেন। এই দম্পতির এখন ‘তেগ’ নামে একটি সুন্দর ছেলে আছে, সুনিধির জীবনে সুখ এবং স্থিতি ফিরে এসেছে।
প্রতিকূলতা আমাকে শক্তিশালী করেছে: সুনিধি
এক সাক্ষাৎকারে তার জীবনের কঠিন সময়ের কথা স্মরণ করে সুনিধি বলেন, “আমার জীবনে এত তাড়াতাড়ি যা কিছু ঘটেছে তার জন্য আমি ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ। সেই সময় আমি কষ্টে থাকলেও, আমি জানতাম আমি ভুল জায়গায় আছি এবং এই সময় বেশিদিন স্থায়ী হবে না।
তাই, সেই পরিস্থিতি আমি উপভোগ করতাম। এখন সেই দিনগুলি পেরিয়ে অনেক বছর হয়ে গিয়েছে। সেই তিক্ত ঘটনাগুলি আমাকে একজন ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। অতীতের প্রতিকূলতা আমাকে আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী করে তুলেছে”।