সুস্মিতা সেই সময়ের কথা তুলে ধরেছেন যখন তার কেরিয়ার সফলতার তুঙ্গে। সেই সময় অক্ষয় কুমারের বিপরীতে লিড রোলে অভিনয় করার সুযোগ পান তিনি। কাজও শুরু হয়। অথচ সেই ছবি মাঝপথে তাঁকে ছেড়ে চলে আসতে হয়েছিল।
'তালি'- এই ওয়েব সিরিজ আচমকাই সংবাদ শিরোনামে এনে দিয়েছে অভিনেত্রী সুস্মিতা সেনকে। অসাধারণ পারফরম্যান্স দিয়ে দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছেন সুস্মিতা। একজন বৃহন্নলার ভূমিকায় নিজেকে উজাড় করে দিয়েছে এই অভিনেত্রী। বরাবরের মতই তাঁর অভিনয় মন কেড়েছে ওয়েব সিরিজ দর্শক থেকে ফিল্ম সমালোচকদের। এই সিরিজে গৌরী সাওয়ান্তের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন এই অভিনেত্রী।
বরাবরই চ্যালেঞ্জিং চরিত্র নিয়ে যিনি জাগলিং করতে ভালোবাসেন, নিজের জীবনটাকেও যিনি বেঁধে নিয়েছেন আর পাঁচটা সাধারণ মেয়ের চেয়ে একেবারে বাঁধন ভাঙা অন্য ধারায় সেই সুস্মিতার কেরিয়ার প্রায় শেষ হতে বসেছিল। সেই ঘটনার কথা শেয়ার করলেন এই বঙ্গ তনয়া। বুক চিতিয়ে বিশ্বসুন্দরী অভিনয় করতে নেমেছেন তৃতীয় লিঙ্গের এক চরিত্রের ভূমিকায়। বলিউডের জন্য এ এক অনন্য নজিরও বলা চলে। সুস্মিতার জন্যও এটা একটা বড়সড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু দিন সবার সমান যায় না। এই সিরিজটি মুক্তির আগে, সুস্মিতার স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছিল। তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। সেই প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠে কাজে ফিরেছেন তিনি।
তালির নামডাকের পর এমন এক ঘটনার কথা শেয়ার করেছেন সুস্মিতা, যা দর্শকদের চমকে দিয়েছে। একথা সবাই জানেন যে সুস্মিতা বিবাহিত না হলেও দুই মেয়েকে দত্তক নিয়েছেন। দুই মেয়ের সাথেই তার বোঝাপড়া চমৎকার। কন্যাসন্তান লালন-পালনে কোনো কসরত রাখেননি এই অভিনেত্রী, কিন্তু কন্যার স্বার্থে নিজের ক্যারিয়ার নিয়েও আপোস করেছেন। সম্প্রতি নিজেই এ কথা জানিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি, সুস্মিতা সেই সময়ের কথা তুলে ধরেছেন যখন তার কেরিয়ার সফলতার তুঙ্গে। সেই সময় অক্ষয় কুমারের বিপরীতে লিড রোলে অভিনয় করার সুযোগ পান তিনি। কাজও শুরু হয়। অথচ সেই ছবি মাঝপথে তাঁকে ছেড়ে চলে আসতে হয়েছিল। তিনি জানতেন এই একটা ঘটনা তাঁর কেরিয়ার নষ্ট করে দেবে। আর কোনও দিনই হয়ত বিগ ব্যানারের ফিল্মে সুযোগ পাবেন না তিনি। তবু এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল তাঁকে। কারণ অভিনেত্রী নয়, তখন একজন মা হিসেবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সুস্মিতা।
তাঁর মেয়ে রেনির জন্য এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। সুস্মিতা বলেছিলেন যে অল্প বয়সে একজন কর্মজীবী মা হওয়ার জন্য বড় মূল্য দিতে হয়েছিল তাঁকে।
অভিনেত্রীর মতে, তিনি অক্ষয় কুমার এবং করিনা কাপুর খানের সাথে একটি ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছিলেন। কিন্তু, তার মেয়ে রেনিকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করায় তাকে শুটিং মাঝপথে ছেড়ে যেতে হয়েছিল। সুস্মিতা সেনের কথায়, 'ওখানে রেনির আমাকে দরকার ছিল। যখন সে আমার জীবনে এসেছিল তখন তার অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না। তার এমন মেডিকেল কন্ডিশন ছিল, যা খুবই গুরুতর। আর ঠিক সেই সময়েই আমি অক্ষয় ও করিনার সঙ্গে কানাডায় শুটিং করছিলাম।
সুস্মিতা বলেন, 'এটি একটি মাল্টিস্টার কাস্টের সিনেমা ছিল। এ কারণে আমার ওপরও চাপ ছিল। লোকেরা বলতে শুরু করেছিল যে তিনি ২৪ বছর বয়সে মা হয়েছেন। এখন সে তার কেরিয়ারকে সিরিয়াসলি নেবে। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে তা হয়নি। মা হিসেবে সেদিন আমি ঠিক ছিলাম। সুস্মিতা সেন আরও বলেন, 'মুম্বই থেকে ফোন পেয়েছিলাম। আমার বাবা রিনির যত্ন নিচ্ছিলেন। তারা আমাকে জানান, মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা গুরুতর। আমি সাথে সাথে ফ্লাইট নিয়ে ফিরে এলাম। আমি জানতাম এটাই আমার কেরিয়ারের শেষ। আমি সেদিনের ঘটনার জন্য পেশাদার হিসেবে দুঃখিত'। অভিনেত্রী আরও বলেন, 'আমি সবকিছু ছেড়ে আমার মেয়ের কাছে ফিরে এসেছি এবং সেখানে এক সপ্তাহ থাকলাম। ঠিক তার পরে যখন আমি কাজে ফিরে যেতে প্রস্তুত ছিলাম তখন সব শেষ হয়ে গিয়েছিল। অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। ছবিটি আমার হাত থেকে চলে গিয়েছিল।