শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে লড়াই অব্যাহত, গোঘাটের প্রবীর স্যারের একমাত্র মনোবাসনা 'মমতাদর্শন'

  • হুগলির গোঘাটে আজ অসম্ভবকে সম্ভব করার নামই প্রবীর পাল
  • ছোট থেকেই পোলিওতে দেহের নিম্নাঙ্গ অসাড় তাঁর
  • প্রায় ২০ বছর ধরে তিনি চাতরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খুদে ছাত্র ছাত্রীদের পড়িয়ে চলেছেন
  • গোঘাটের প্রবীর স্যারের একমাত্র মনোবাসনা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একবার দেখা করা

উত্তম দত্ত, হুগলি: শিক্ষক দিবসে এ এক অন্যরকমের ছবি যা নাড়া দেবে প্রত্যেককে। এমনও সম্ভব? এ প্রশ্নও হয়তো উঁকি দিতে পারে অনেকের মনেই। কিন্তু হুগলির গোঘাটে আজ অসম্ভবকে সম্ভব করার নামই প্রবীর পাল। শিক্ষক দিবসের দিনেও যাকে দেখা গেল বাসন ধুতে। 

আসলে এটা তাঁর দৈনন্দিন অভ্যাস। কেউ তাঁকে বলে না, কিন্তু স্কুলকে তিনি প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসেন। স্কুলের ছাত্ররাও তাঁর কাছে প্রাণাধিক প্রিয়। এরকম শিক্ষক কে শ্রদ্ধা না করে পারা যায়? প্রতিবারের মতো এবারেও প্রিয় প্রবীর স্যারকে ফুল দিয়ে সম্মান জানালো গোঘাট চাতরা প্রাইমারি স্কুল পড়ুয়ারা। 

Latest Videos

রাণুর গান মন দিয়ে শুনলেন সলমন খান, শোনালেন আরও অনেককেই, দেখুন ভিডিও

১৯৪৮ সালে স্থাপিত এই স্কুলে রয়েছেন ৪জন শিক্ষক। ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১২০। এই স্কুলই এককথায় প্রবীর স্যারের জীবন। সেই ছোট থেকেই পোলিওতে দেহের নিম্নাঙ্গ অসাড় তাঁর। তাই স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে অক্ষম। কিন্তু জীবনযুদ্ধে হার মানার পাত্র তিনি নন। চাকরি জোটেনি কপালে । কিন্তু তাতে কি? ছোট থেকেই ইচ্ছে ছিল শিক্ষকতা করার। তাই পাড়ার প্রাইমারী স্কুলে পড়াতে শুরু করেন তিনি। তবে সম্পূর্ণ অবৈতনিকভাবে। 

প্রায় ২০ বছর ধরে তিনি চাতরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খুদে ছাত্র ছাত্রীদের পড়িয়ে চলেছেন। শুধু পড়ানোই নয়, সবার চেয়ে আগে তিনি বিদ্যালয়ে এসে সমস্ত ঘরদোর নিজে হাতে ঝাঁট দেন। বিদ্যালয়ের বাগান তিনিই পরিস্কার করেন। বাগানে আনাজের চাষ করা, গাছের পরিচর্যা করা সব ব্যাপারেই প্রবীর স্যার। পাশাপাশি মিড ডে মিল খাওয়া হয়ে গেলে সমস্ত ছাত্রছাত্রী দের বাসনপত্র তিনি নিজেই মাজেন। না ..এর জন্য কেউ জোর করেনি কোনওদিন। সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় তিনি এসব করেন। তাই তো ছাত্রছাত্রীদের নয়নের মণি প্রবীর স্যার। 

সম্প্রতি একটি ক্লাব থেকে তাঁকে ট্রাইসাইকেল দেওয়া হয়, তিনি তাতে চেপেই আসেন বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়ের বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী তাঁকে বাড়ি থেকে নিয়ে আসে গাড়ি ঠেলে। কিন্তু চলে কেমন করে তাঁর? ৪৩ বছর বয়স্ক প্রবীর বাড়িতে বৃদ্ধা মা-কে নিয়ে থাকেন। পাশেই তাঁর দাদা বৌদিরা থাকেন। আয় বলতে কিছু টিউশনি আর সরকার থেকে ১০০০ টাকা প্রতিবন্ধী ভাতা। এই করেই দিন কাটিয়ে দিচ্ছেন সবার প্রিয় প্রবীর স্যার। 

কথায় কথায় তিনি জানান,  তাঁর ইচ্ছে ছিল ওই বিদ্যালয়ে প্যারা টিচার হিসেবে স্বীকৃতি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেই সুযোগ তাঁর আসেনি। তবে তাঁর একটাই ইচ্ছে একবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি দেখা করবেন। তবে সেই মনোবাসনা কবে পূর্ণ হবে সেই নিয়ে যদিও সংশয় রয়েছে গোঘাটের শিক্ষক প্রবীর পালের। 

Share this article
click me!

Latest Videos

‘Chinmoy Krishna-কে আমি মুক্ত করবোই’ নির্ভীক Bangladeshi আইনজীবী Rabindra Ghosh-এর চরম প্রতিশ্রুতি
Rashifal : আজ আপনার ভাগ্য কি বলছে? দেখুন শুক্রবারের রাশিফল | Astro | Friday | Horoscope
আরে ওরা কি করবে, সেদিন আমি ওদের সামনে আরতি করে বুঝিয়ে দিয়েছি : শুভেন্দু | Suvendu Adhikari
নয়া মোড় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়! পার্থ-অর্পিতাদের বিরুদ্ধে শুরু হলো চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া!
মাত্র এক মাসের সংসার! যৌতুক না দিতে পারায় এইরকম পরিণতি, শুনলে আঁতকে উঠবেন | South 24 Parganas News