সোশ্যাল মিডিয়ার বাড়বাড়ন্তে ফেক নিউজের দাপট প্রবলভাবে বেড়ে গিয়েছে। প্রতি মিনিটেই বিশ্বজুড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্তত কয়েক লক্ষ মিথ্যা তথ্য হয় লিখে অথবা ভিডিও-র আকারে অথবা গ্রাফিক্সের মাধ্যমে আপলোড করে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এইসব খবরের না আছে কোনও ভিত্তি না আছে কোনও বাস্তবসম্মত প্রমাণ।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিরাপত্তা বিঘ্ন হওয়ার ঘটনার পর থেকেই তৎপরতা বেড়ে গিয়েছে খালিস্তানীপন্থীদের। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় খালিস্তানিপন্থীরা যেভাবে একের পর এক ফেক নিউজ, ফেক ভিডিও এবং ফেক অডিও শেয়ার করছে তাতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ইতিমধ্যেই এই সব ফেক নিউজ-কে ঘিরে পাল্টা প্রত্যুত্তর দিতে শুরু করেছেন নরেন্দ্র মোদীর অনুরাগীরাও। অভিযোগ, বিশেষ করে টুইটারের একাধিক ভুয়ো অ্যাকাউন্ট থেকে এই সব মিথ্যা খবর ছড়ানো হচ্ছে। এরকম পরস্থিতিতে শুক্রবার দুপুরে টুইটারে একটি মর্ফড ভিডিও আপলোড করা হয়। আর তাই নিয়ে শুরু হয় শোরগোল।
এই মর্ফড ভিডিও তে যে অডিও ছিল তাও যথেষ্ট কাঁপা-কাঁপা এবং পরিস্কার নয়। এই মর্ফড ভিডিও-টি আপলোড করার সময় ক্যাপশনে লেখা হয় যে ভারত সরকারের দুই বিশিষ্ট মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর এবং এস জয়শঙ্কর নাকি সেনাবাহিনী থেকে শিখদের ছেঁটে ফেলার কথা বলেছেন। আর তাঁরা এই প্রস্তাব নাকি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তাবিষয়ক কমিটির বৈঠকে দিয়েছেন। যদিও অনুরাগ ঠাকুর মোদী সরকারের মন্ত্রী হলেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির সদস্য বলতে যা বোঝায় সেটা নন। এই মর্ফড ভিডিও পোস্ট সকলের নজরে আসতেই কড়া প্রতিক্রিয়া শুরু হয় ভারত সরকারের অন্দরমহল থেকে সেনাবাহিনীতে। ভারত সরকারের একটি সূত্রে কড়াভাবে এই ভিডিও-কে ফেক বলে জানিয়ে দেওয়া হয় এবং সেই সঙ্গে দেশবাসীকে এই ধরনের ফেক ভিডিও এবং ফেক নিউজ থেকে নিজেদের সচেতন থাকার আর্জিও রাখা হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ার বাড়বাড়ন্তে ফেক নিউজের দাপট প্রবলভাবে বেড়ে গিয়েছে। প্রতি মিনিটেই বিশ্বজুড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্তত কয়েক লক্ষ মিথ্যা তথ্য হয় লিখে অথবা ভিডিও-র আকারে অথবা গ্রাফিক্সের মাধ্যমে আপলোড করে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এইসব খবরের না আছে কোনও ভিত্তি না আছে কোনও বাস্তবসম্মত প্রমাণ। বিশ্বজুড়ে এই মুহূ্র্তে এক লক্ষেরও বেশি ফেক নিউজ-এর মামলার শুনানি চলছে। যত সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ডিজিটাল তথ্য পরিবেশনের প্রভাব বাড়ছে ততই ফেক নিউ-কে চিহ্নিত করার বিভিন্ন ধরনের প্রযুক্তিও সামনে আনা হচ্ছে। কিন্তু, এই ফেক নিউজ নিয়ে যতটা সচেতনতা বিস্তার হওয়া দরকার এখনও ততটা মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়নি। যারফলে ফেক নিউজের কারবারিদের থামানো সহজ হচ্ছে না। যদিও সাইবার বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ফেক নিউজের কারবারিদের অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে।
বুধবার পঞ্জাবের ফিরোজপুরে সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধনে যাওয়ার সময় কৃষকদের অবরোধে আটকে গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কনভয়। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা ২০ মিনিট ধরে বিঘ্নিত হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই দেশজুড়ে বিতর্ক তৈরি করেছে। এমতাবস্থায় বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বিঘ্ন হওয়ার বিষয়েও আলোচনা হয়। ভারত সরকার সূত্রে দাবি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে সবসময়েই দেশের উন্নয়ন এবং প্রকল্প, নতুন কর্মসূচি-এই সব নিয়েই আলোচনা হয়। সেখানে দেশের অখণ্ডতা এবং ঐক্যের পরিপন্থী এমন কোনও বিষয়ে আলোচনার প্রশ্নই আসে না। পৃথক খালিস্তানের দাবিদাররা একটা সময় ভারতবর্ষের বুকে একাধিক সন্ত্রাসের আঘাত হেনেছে। কিন্তু তাতে লাভ কিছুই হয়নি। খালিস্তানি সমস্যা কাটিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভারতের জয়গান বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে গিয়েছে। সুতরাং, খালিস্তানিপন্থীদের সোশ্যাল মিডিয়ায় বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের ষড়যন্ত্রের জাল বোনার চেষ্টা সফল হবে না বলেই মনে করছে ভারত সরকারের সূত্র।