২৯ জানুয়ারি আইএসএলে (ISL) মরসুমের দ্বিতীয় ডার্বি (Derby)। এটিকে মোহনবাগান (ATK Mohun Bagan) ও এসসি ইস্টবেঙ্গলের (SC East Bengal) ম্য়াচ ঘিরে চড়ছে উন্মাদনার পারদ। জয় পেতে মরিয়া জুয়ান ফেরান্দো (Juan Ferrando), মারিও রিভেরার (Mario Rivera)দল।
শনিবার বাংলার ফুটবলের মহারণ। আরও একবার সেই চিরাচরিত ঘটি-বাঙাল, ইলিশ-চিংড়ির লড়াই। আইএসএলের (ISL) ফিরতি ডার্বিতে (Derby)মুখোমুখি হতে চলেছে দুই চিরপ্রতীদ্বন্দ্বী ক্লাব এসসি ইস্টবেঙ্গল ও এটিকে মোহনবাগান (ATK Mohun Bagan vs SC East Bengal)। লিগের প্রথম দফার ডার্বিতে ৩-০ গোলে জয় পেয়েছিল সবুজ-মেরুণ ব্রিগেড। তবে প্রথম লেগ আর দ্বিতীয় লেগের ডার্বির মধ্যে দুই দলেরই অনেক কিছু পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। এসসি ইস্টবেঙ্গলের কোচ দিয়াজের পরিবর্তন হয়ে, অন্তবর্তীকালান কোচ রেনেডি সিংয়ের হাত ঘুড়ে এখন দায়িত্বে মারিও রিভেরা (Mario Rivera)। দলেও হয়েছে একাধিক পরিবর্তন। তবে দল এখনও পুরোপুরি ছন্দে ফেরেনি। লিগ টেবিলে অবস্থান ১১ নম্বরে। অপরদিকে, অ্য়ান্টোনিও লোপেজ হাবাসের পর এটিকে মোহনবাগানের দায়িত্বে নিয়েছেন জুয়ান ফেরান্দো (Juan Ferrando)। তবে প্রথম লেগে কয়েকটি ম্য়াচে যে দুরন্ত ফর্মে ছিল এটিকে মোহনবাগান তারপর থেকেই ফর্ম ওঠা নামা শুরু করে রয় কৃষ্ণা, হুগো বুমোসদের। বর্তমানে লিগ টেবিলে অবস্থান ৮ নম্বরে। তবে অন্যান্যদের থেকে ৩টি ম্য়াচ কম খেলেছে এটিকে মোহনবাগান। এই পরিস্থিতিতে মরসুমের দ্বিতীয় ডার্বি ঘিরে চড়ছে উন্মাদনা, উত্তেজনার পারদ। জয়ের লক্ষ্যেই ঝাপাতে চলেছে দুই দল।
ঘুড়ে দাঁড়াতে মরিয়া লাল-হলুদ-
মরসুমের ১১ ম্য়াচ পর প্রথম জয়ের স্বাদ পেয়েছিল এসসি ইস্টবেঙ্গল। দলের দায়িত্ব নিয়েই প্রথম ম্য়াচে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে জয় এনে দিয়েছিলেন লাল-হলুদের নতুন কোচ মারিও রিভেরা। কিন্তু তারল পর ম্য়াচেই হায়দরাবাদ এফসির বিরুদ্ধে ৪-০ গোলে লজ্জার হারের সম্মুখীন হতে হয়েছে এসসি ইস্টবেঙ্গলকে। ফলে গোয়ার বিরুদ্ধে জয়কে ফ্লুক বলছে অনেকেই। একদিকে মরসুম জুড়ে খারাপ ফর্ম, প্রথম ডার্বিতে লজ্জার হার, গোয়ার বিরুদ্ধে জয়কে ফ্লুক তকমা। সব মিলিয়ে আইএসএলের দ্বিতীয় ডার্বি লাল-হলুদ ব্রিগেডের কাছে সত্যিকারের ঘুড়ে দাঁড়ানোর, নিজেদের প্রমাণ করার লড়াই। তবে এটিকে মোহনবাগানের আক্রমণ বিভাগের শক্তির কথা জানেন মারিও রিভেরা। তাই আক্রমণাত্মক ফুটবলে না গিয়ে রক্ষণ মজবুত করেই আক্রমণে যাওয়াই লক্ষ্য এসসি ইস্টবেঙ্গলের। বড় ম্য়াচের আগে অনুশীলনে নেমেছেনে দলের নতুন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার সোতা। বড় ম্য়াচে আবির্ভাবেই তিনি নায়ক হয়ে উঠতে পারেন কিনা সেদিকে নজর রয়েছে সমর্থকদের। পাশাপাশি মার্সেলো রিবেইরার কাছেও ভালো পারফরম্যান্স আশা করছে সমর্থকরা। সব মিলিয়ে মরসুমের যাবতীয় ব্যর্থতা ভুলে ডার্বিতে থেকে ঘুড়ে দাঁড়াতে মরিয়া এসসি ইস্টবেঙ্গল।
আত্মবিশ্বাসী সবুজ মেরুণ ব্রিগেড-
বিগত কয়েকটা সপ্তাহ নানা কারণে খুব একটা ভালো যায়নি এটিকে মোহনবাগানের। একদিকে দলে করোনার থাবা ও পরপর ৩টি ম্য়াচ বাতিলের পর প্রায় ৩ সপ্তাহের মাঠে নামলেও জয় অধরা থেকে গিয়েছে সবুজ-মেরুণ ব্রিগেডের। ওড়িশা এফসির বিরুদ্ধে শেষ ম্য়াচ গোলশূন্য ড্র হয়েছে। বড় ম্য়াচের আগে জোর কদমে অনুশীলন জুয়ান ফেরান্দোর দল। লিগ টেবিলের যা অবস্থা এই বড় ম্য়াচ জিততে পারলে ৮ নম্বর জায়গা থেকে সরাসরি প্রথম চারে পৌছে যাবে এটিকে মোহনবাগান। দলের রক্ষণ নিয়ে কিছুটা চিন্তা থাকলেও দলের আক্রমণ বিভাগ নিয়ে খুব একটা চিন্তা নেই জুয়ান ফেরান্দোর। তবে ডার্বিরর আগে এটিকে মোহনবাগানের কাছে সুখবর নির্বাসন কাটিয়ে এই ম্য়াচে দলে ফিরছেন মাঝমাঠের অন্যতম স্তম্ভ হুগো বুমোস। যার ফলে শক্তি অনেকটাই বাড়বে সবুজ-মরেুণ ব্রিগেড। এছাড়া এই ম্য়াচ জয়ের বিষয়ে যে দল আত্মবিশ্বাসী তা আগেই জানিয়েছেন প্রীতম কোটাল, শুভাশিস বসু, হুগো বুমোসরা। শক্তির বিচারে এটিকে মোহনবাগান এগিয়ে থাকলেও, প্রতিপক্ষ মারিও রিভারার দলকে যথেষ্ট সমীহ করছেন সবুজ-মেরুণ কোচ। তবে দলের উপর বিশ্বাস রাখছেন তিনি। সব মিলিয়ে মরসুমের দ্বিতীয় ডার্বিতে জয় ছাড়া কিছু ভাবতে নারাজ এটিকে মোহনবাগান।
ম্য়াচ প্রেডিকশন-
মরসুমের দ্বিতীয় ডার্বির আগে দুই দলের রক্ষণ, মাঝমাঠ ও আক্রমণের শক্তি বিচার করলে এসসি ইস্টবেঙ্গলের থেকে অনেকটাই এগিয়ে এটিকে মোহনবাগান সেবিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ফর্মের বিচারেও সবুজ-মেরুণ ব্রিগেড লাল-হলুদ ব্রিগেডের থেকে এগিয়ে। ফলে দ্বিতীয় ডার্বির আগে ফুটবল বিশেষজ্ঞরা এগিয়ে রাখছেন জুয়ান ফেরান্দোর দলকে।