বন্ধুদের চক্রান্তে জুটেছিল পর্নস্টার তকমা, বাবার বেদম মার, তবু হার মানেননি উরফি

ভারতীয় মিডিয়ার বিনোদন জগৎ জুড়ে এখন ছেয়ে রয়েছেন উরফি জাভেদ। তিনি কি পরলেন, কী স্টাইল ফ্যাশন আনলেন, কোন বিতকর্কিত মন্তব্য করলেন- এই সব নিয়ে এখন তোলপাড় ভারতীয় মিডিয়া জগৎ। রোজই ভাইরাল হচ্ছে তাঁর ফোটো শ্যুটের ছবি। উরফি একজন অভিনেত্রী। কিন্তু, সেখানে তাঁর কতটা পসার হচ্ছে তা নিয়ে কারও কোনও আগ্রহ নেই। গ্ল্যাম জগতের হালহকিকত নিয়ে জানতে আগ্রহীদের অধিকাংশই পড়েছেন উরফি-কে নিয়ে। অবশ্য উরফিও কম যান না। তিনি ভালোই জানেন ডিজিটাল যুগে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে কীভাবে ফ্যানেদের মাত করে রাখতে হয়। আর সেই কাজটা এখন পর্যন্ত তিনি সফলভাবেই করতে পেরেছেন। তবে, হাসিখুশি-গ্ল্যামারের ঝলকে দেওয়ার চেহারার পিছনেও যে এক বিষাদমাখা কাহিনি রয়েছে, তার খবর কয় জন রাখেন। 

Web Desk - ANB | Published : Jun 14, 2022 5:21 AM IST / Updated: Jun 14 2022, 11:00 AM IST

18
বন্ধুদের চক্রান্তে জুটেছিল পর্নস্টার তকমা, বাবার বেদম মার, তবু হার মানেননি উরফি

উরফি জাভেদ একবার এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে তাঁর বাবা অত্যন্ত অত্যাচারী ছিলেন। বাড়িতে যতক্ষণ থাকতেন ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁর অত্যাচারে টেকা দায় ছিল। উরফি-র মা-এর উপরেও নাকি হাত তুলতেন তাঁর বাবা। মেয়েদের সামনেই স্ত্রী-কে তিনি মারধর করতেন। ছোট থেকেই বাবা-র এই রূপ দেখেই নাকি বড় হয়েছিলেন উরফি এবং তাঁর বোনেরা। যাক ফলে বাবা-কে নিয়ে ছোট থেকে উরফিদের মনে এক ভয়ানক অভিজ্ঞতা সঞ্চিত হয়ে রয়েছে। 

28

উরফি এই মুহূর্তে দেশের একজন নামকরা সেলিব্রিটি। অভিনয় জগতে সেভাবে এখনও কোনও ছাপ না ফেললেও সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে এখন নবপ্রজন্মের ছেলে-মেয়ের কাছে উরফি এক স্টাইল আইকন। তাঁর ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে এখন মিলিয়ন মিলিয়ন ভক্তদের ভিড়। এই জায়গায় পৌঁছতে উরফি-কে যথেষ্ট কসরত করতে হয়েছে। এই সংগ্রামের পিছনে এমন এক কাহিনি রয়েছে যা অনেকটাই আজ মনে করতে চান না উরফি। দুঃস্বপ্ন ভেবে সেগুলো থেকে দূরে থাকতে চান। কিন্তু, সবসময় যে তা হয় না তা নিজেও মানেন উরফি। কোথাও না কোথাও, কোনও না কোনওভাবে অতিত উঁকি মেরে যায় তাঁর প্রাত্যহিক জীবনে। 
 

38

উরফি-র মতে যে অত্যাচার ছোট থেকে তাঁকে সইতে হয়েছে তার জন্য তাঁর বাড়ির কথা সেভাবে মনে আসে না। বাড়ির জন্য এক ডুকরে ওঠা কষ্ট হৃদয়কে এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেয়। কিন্তু, সেই বাড়িতে তাঁর উপরে হওয়া অত্যাচারের কথা স্মরণ করলে বাড়ির প্রতি সেই আবেগ যেন আটকে যায়। এমনও বলেছিলেন উরফি। ছোট থেকে যে পরিমাণ নিগ্রহের শিকার তাঁকে হতে হয়েছে তা ভারতীয় সমাজে খুব কম মেয়েকেই সইতে হয়েছে বলে একটা সময় বলেছিলেন উরফি। 

48

এই প্রসঙ্গে উরফি একবার স্মরণ করেছিলেন একটি কাহিনি। স্কুলের বন্ধুদের কয়েক জন একবার উরফি-র ছবি কোনও অ্যাডাল্ট পর্ন সাইটে আপলোড করে দিয়েছিল। সেই ছবি এরপর সকলের নজরে আসে। উরফি যে শহরে থাকতেন সেই শহরেও রটে যায় এই খবর। সেই সময় উরফি তাঁর পাশে কাউকেই পাননি। তিনি যতই বলার চেষ্টা করেছিলেন যে এটা তাঁর কাজ নয়। কেউ শোনেনি। উল্টে নিজের পরিবার থেকে প্রতিবেশী এবং পারিবারিক বন্ধু এবং স্কুলের বন্ধু-বান্ধবীদের অধিকাংশই মনে করেছিলেন যে এটা উরফি-র বিকৃত মানসিকতার পরিচয়। কেউ আসল সত্যটা সেই সময় জানারই চেষ্টা করেনি বলে সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন উরফি। 

58

অ্যাডাল্ট পর্ন সাইটে মেয়ের ছবি আপলোডের খবর পৌঁছেছিল উরফি বাবা-র কানেও। বিষয়টি জানতে পেরেছিলেন পরিবার-পরিজনরাও। সকলে ছি-ছি করে উঠেছিল। বাবার তীক্ষ্ণ গালিগালাজে ভেঙে পড়েছিলেন উরফি। কেমন ছিল সেই গালিগালাজ- আজ আর স্মরণ করতে চান না উরফি। তবে এইটুকু বলেছেন নিজের বাবা-র মুখে এমন অশ্রাব্যভাষার প্রয়োগ শুনে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। একজন বাবার কাছে তাঁর মেয়ে একটা সম্পদ। কিন্তু, সেই বাবা যখন মেয়েকে এমন সব ভাষায় আক্রমণ করতে পারে তা নাকি আজ ভেবে কষ্ট পান উরফি। বাবা গালিগালাজ করেই যে থেমে গিয়েছিলেন এমনটা নয়। উরফি জানিয়েছেন বাবা-র হাতে প্রবলভাবে মার খেয়েছিলেন তিনি। শারীরিক নিগ্রহের সেই অভিজ্ঞতা ছিল ভয়ঙ্কর। 
 

68

উরফি আরও জানিয়েছিলেন যে তাঁর আত্মীয়-স্বজন আবার বলেছিলেন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট চেক করতে। কারণ তাঁদের দাবি ছিল অ্যাডাল্ট সাইটে নগ্ন ছবি প্রদর্শন করে আসলে আয় করছেন উরফি। পরিবার এবং প্রিয়জনদের এই কথা তাঁকে এতটাই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করেছিল যে তিনি বহু বছর মানসিক বিকারগ্রস্ত রোগীতে পরিণত হয়েছিলেন। একটা মেন্টাল ট্রমা তাঁকে আস্টেপিষ্টে ধরেছিল। দীর্ঘদিন ঠিক করে গলা দিয়ে স্বর বের করতে পারেননি। নিজের গলার আওয়াজ শুনলেও আতঙ্ক লাগতো। কথা না বলে বলে নিজের গলার আওয়াজও অপরিচিত হয়ে গিয়েছিল উরফি-র কাছে। নিজের নামটা পর্যন্ত ভুলে গিয়েছিলেন। কেউ নাম জিজ্ঞেস করলে অনেক চিন্তা করে উত্তর দিতে হত। সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন উরফি। 

78

উরফি এই বিশেষ সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন যে তাঁর বাবা-ই বাড়ির সব নিয়ম এবং বিধিনিষেধ ঠিক করতেন। বাড়ির মেয়েরা কোনও সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এতে বাবা-র নাকি সায় ছিল না। এমনকী তিনি মেয়েদের সিদ্ধান্তকে নাকচ করে দিতেন। তিনি বলে দিয়েছিলেন, তাঁর কথা মেনেই সবাইকে চলতে হবে। বাড়ির মেয়েদের সিদ্ধান্তে তিনি ভরসা করেন না বলেও নাকি জানিয়ে দিয়েছিলেন উরফি-র বাবা। একমাত্র পরিবারের পুরুষরাই বাড়ির যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলেও জানিয়ে দিয়েছিলেন উরফি-র বাবা। 

88

একবার সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে উরফি বলেছিলেন যে তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। কারণ, বাড়িতে তাঁর উপরে হওয়া অত্যাচার কোনওভাবেই তিনি সইতে পারছিলেন না। বাড়ি থেকে পালিয়ে তিনি এবং তাঁর বোন দিল্লি গিয়েছিলেন বলেও এই সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন উরফি। তাঁরা দিল্লি-র একটি পার্কে কয়েক দিন ধরে ছিলেন। খোলা আকাশের নিচে কেটেছিল তাঁদের জীবন। রাতে এই পার্কের বেঞ্চে শুয়ে থাকতেন। এমন সময় উরফি একটি কল সেন্টারে কাজ পান। কলে সেন্টারের সেই অর্থে তিনি এবং তাঁর বোন দিল্লিতে একটি বাড়ি ভাড়াও নিয়েছিলেন। 
 

Read more Photos on
Share this Photo Gallery
click me!
Recommended Photos