যার বাবা অমিতাভ বচ্চন তাঁর আবার কিসের সংগ্রাম। অভিষেক তো খুব সহজেই বলিউডে সুযোগ পেয়ে গেছেন, এমনটা অনেকেই মনে করেন। তবে জানলে অবাক হবেন একটা সময় অভিষেক বচ্চনকেও কাজ পাওয়ার জন্য রীতিমতো বেগ পেতে হয়েছে। একের পর এক না শুনতে শুনতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তবে কখনোই হাল ছাড়েননি। পরিচালকের সঙ্গে সহজে সাক্ষাত করতে পারলেও, বাড়ি ফিরতে হত না শব্দটি শুনেই। অভিষেকের কথায়, তাঁর প্রথম সিনেমা দেখার পর একজন মহিলা এসে তাকে চর মেরে বলেন ‘তুমি তোমার পরিবারের নাম খারাপ করছ, দয়া করে অভিনয় বন্ধ করো’।
অভিষেক তাঁর কলেজের পড়াশুনা শেষ করে, এম বি এ পড়তে বিদেশে পারি দেন। এই সময় বিগ-বি এর প্রোডাকশন কোম্পানি এবিসিয়েল (ABCL ) এর বাজারে অনেক টাকার দেনা হয়ে পড়ে। যার ফলে অভিষেককে মাঝপথেই তাঁর পড়াশুনা বন্ধ করে ফিরে আসতে হয়।
210
ফিরে এসে অভিষেক নিজেদের প্রোডাকশনে সহকারী হিসেবে কাজ শুরু করেন। প্রোডাকশনের খারাপ অবস্থার কারণে বেশ কিছু দিন পরিচালকের ড্রাইভারের ভূমিকাও পালন করেন অভিষেক।
310
সেই সময় থকেই মনে ইচ্ছে জাগে অভিনেতা হওয়ার। তাই প্রোডাকশন কোম্পানিতে কাজ করার পাশাপাশি অভিষেক অভিনয়য়ের প্রশিক্ষণ নেন। এর পর থেকেই শুরু হয় পরিচালকদের সঙ্গে দেখা করার পর্ব।
410
আর এই সময় থেকেই না শব্দটির সাথে তাঁর পরিচয় হয়। না করার কোন কারণ থাকতো না পরিচালকদের কাছে। কিছু পরিচালক একথাও বলেন ‘অমিতাভ বচ্চনের পুত্রকে লঞ্ছ করার দায়িত্ব নিতে পারব না’।
510
ওই সময় তাদের প্রোডাকশন কোম্পানি এবিসিয়েল (ABCL) এর অবস্থা খুবই শোচনীয় ছিল। স্বভাবতই রীতিমতো আর্থিক সমস্যায় ভুগছিলেন গোটা বচ্চন পরিবার। এরই মাঝে অভিষেকের কাজ না পাওয়া এবং বাড়িতে আর্থিক সাহায্য করতে না পারা, তাকে গুমরে খাচ্ছিল।
610
টানা ৩ বছর না শোনার পর, অভিষেক তাঁর বন্ধু রাকেশ মেহেরা সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করলেন তারা একসঙ্গে একটি সিনেমা বানাবেন। সেই সময় রাকেশ মেহেরা ছোট ছোট বিজ্ঞাপন পরিচালনার কাজ করতেন। তারা দুজনে মিলে ‘সমঝোতা এক্সপ্রেস’ নামে একটি গল্প লেখেন। তবে সেই গল্প অধরাই থেকে যায়।
710
এর পর একটি অনুষ্ঠানে পরিচালক যেপি দত্তার সাথে অভিষেকের পরিচয় হয়। যেপি দত্তা ঠিক করেন তিনি অভিষেকে দিয়ে সিনেমা করাবেন। এর পরই ২০০০ সালে মুক্তি পাই অভিষেকের প্রথম ছবি ‘রিফিউজি’। ওই সময় অভিষেকের মনে হয় এবার তিনি পর পর সিনেমা পাবেন। যা ছিল তাঁর সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। রিফিউজিকে দর্শকেরা রিফিউজ করে দেয়। কিন্তু অভিষেকের অভিনয় সাবাসি পায়।
810
এর পরবর্তী সময়ে মে প্রেম কি দিবানি হু, ওম জয় জাগদিস, যামিন, রান – এর মতো প্রায় ১৫ টা সিনেমা বক্স-অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ে। অভিষেকের ওপর ফ্লপ স্টারের তকমা পড়লো। তাঁর ক্যারিয়ার শেষ বলেই ধরে নিয়েছিলেন সবাই। এতো কিছুর পরেও হার মানেনই।
910
এর পর এলো সেই সময়, যেই সময়টার জন্য এতো দিন ধরে অভিষেক লড়াই করছিল। ২০০৪ সালে মুক্তি পেল তাঁর প্রথম হিট ছবি ‘ধুম’। এর পর তাঁর জীবনে আরও একটি চমৎকার ঘটলো। আমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেলেন তিনি।
1010
বাবার সঙ্গে পর পর দুটো সিনেমা বান্তি বাবলি ও সরকার বক্স-অফিসে সফল হয়। এর পর আর তাকে পিছনে ঘুরে তাকাতে হয়নি। তবে আজও নেটিজেনদের বিগ-বি এর সঙ্গে অভিষেকের তুলনা করা দুঃখজনক। অভিষেকের মতে কেউ কারোর মতো হতে পারে না, প্রত্যেকেরই আলাদা নিজস্বতা থাকে।