জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক, কতটাই বা কার্যকর এই ভ্য়াকসিন - জেনে নিন

শনিবার, ভারতে পঞ্চম করোনা ভ্যাকসিন হিসাবে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পেল জনসন অ্যান্ড জনসন সংস্থার তৈরি এক ডোজের করোনা ভ্য়াকসিন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য টুইট করেন খবরটি জানান। মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (Us CDC)-র অনুমোদিত েকাবের প্রথম দিকের ভ্যাকসিনগুলির অন্যতম। ই টিকার উচ্চ কার্যকারিতার জন্য, কোভিড রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার এবং মৃত্যুর সম্ভাবনা কম হয় বলে দাবি করেছে সংস্থা। তবে, ট্রাল পর্বের প্রতিশ্রুতি ধরে রাখতে পারেনি ভ্যাকসিনটি। একের পর এক বিতর্ক তৈরি হয়েছে েকে ঘিরে। জেনে নেওয়া যাক, ভারতের সাম্প্রতিকতম করোনা ভ্যাকসিনটি সম্পর্কে -
 

Asianet News Bangla | Published : Aug 7, 2021 11:22 AM IST

16
জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা নিয়ে রয়েছে বিতর্ক, কতটাই বা কার্যকর এই ভ্য়াকসিন - জেনে নিন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যদুই করোনা ভ্যাকসিন, মডার্না এবং ফাইজারের তৈরি করোনা ভ্যাকসিনগুলির থেকে জনসন অ্যান্ড জনসনের ভ্যাকসিনটি গঠনগতভাবে আলাদা। প্রথম দুই সংস্থার তৈরি টিকাগুলি যেখানে মেসেঞ্জার আরএনএ বা এমআরএনএ ব্যবহার করে মানবদেহে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা তৈরি করে, সেখানে জনসনের টিকা কোভিশিল্ডের মতো একটি অ্যাডেনোভেক্টর ভিত্তিক ভ্যাকসিন। এই ক্ষেত্রে, করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের জিন একটি অ্যাডেনোভাইরাসে যোগ করা হয়। অ্যাডেনোভাইরাস হল একটি সাধারণ ভাইরাস যা সর্দি-কাশি বা জ্বরের মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে। অ্যাডেনোভাইরাসের মাধ্যমে করোনার স্পাইক প্রোটিন মানবদেহে প্রবেশ করলে মানব কোষগুলিতে স্পাইক প্রোটিনকে আক্রমণ করার জন্য অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। তবে অ্যাডেনোভাইরাসটিকেও েমনভাবে প্রস্তুত করা হয়, যাতে তা কোষে প্রবেশ করে প্রতিলিপি সৃষ্টি করতে পারে না।

26

জনসন অ্যান্ড জনসেনের দাবি, এই ক্লিনিকাল ট্রায়ালে ভ্যাকসিনটি গুরুতর রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে  ৮৫ শতাংশ কার্যকারিতা দেখিয়েছে। এমনকী এই ভ্যাকসিন, করোনার ডেল্টা বিকল্প-সহ অন্যান্য উদীয়মান স্ট্রেনগুলির বিরুদ্ধেও সুরক্ষা দিতে সক্ষম। লার্জ স্কেল স্টাডি অর্থাৎ বড় মাপের গবেষণায় অবশ্য ততটাও কার্যকারিতা দেখাতে পারেনি ই করোনা টিকা। বিশ্বব্যাপী প্রায় ৪৪,০০০ অংশগ্রহণকারীর উপর টিকাটির পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে মাঝারি থেকে গুরুতর কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকাটি ৬৬ শতাংশ কার্যকর ছিল।

36

জনসনের ভ্যাকসিনটির মূল সূত্রটি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রায় এক দশক আগে তৈরি করা হয়েছিল। বেথ ইসরাইল ডিকোনেস মেডিকেল সেন্টারের ভাইরোলজিস্ট ড্যান বারউচ এবং তার দল গত দেড় দশক ধরে একটি 'ভেক্টর' বা বাহক তৈরি করছিলেন, যার মাধ্যমে কোনও অন্য রোগজীবাণুর জেনেটিক কোডের একটি অংশ মানুষের কোষে প্রবেশ করানো যাবে। করোনা মহামারি দেখা দিলে সেই ভেক্টরেই করোনার স্পাইক প্রোটিনের জেনেটিক কোড ভরে দেওয়া হয়েছে। 

46

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিশেষজ্ঞদের কৌশলগত উপদেষ্টা গোষ্ঠীর মতে, জ্যানসেন অ্যাড২৬.কোভ২.এস বা জনসন অ্যান্ড জনসনের তৈরি ভ্যাকসিনের এক ডোজ বা ০.৫ মিলিলিটার ইন্ট্রামাস্কুলার পদ্ধতিতে দিতে হবে। এছাড়া, অন্য কোনও স্বাস্থ্যগত কারণে অন্য কোনও ভ্যাকসিন নেওয়ার এবং এই ভ্যাকসিনটি নেওয়ার মধ্যে ১৪ দিনের ব্যবধান থাকতে হবে। 

56

জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকাটি একের পর এক বিতর্কে জর্জরিত হয়েছে। চলতি বছরের ১ এপ্রিল, মার্কিন সরকার ভ্যাকসিনটি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। বেশ কিছু ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন নেওয়ার পর রক্ত ​​জমাট বাঁধার অভিযোগ েসেছিল। টিকা নেওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যেই অভিযোগগুলি উঠেছিল। সেগুলি নিয়ে তদন্তের পর ২৩ এপ্রিল মার্কিন স্বাস্থ্য বিভাগের বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফের টিকাটিকে ছাড় দেওয়া হয়। 

আবার, সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করা হয়েছিল ভ্যাকসিনটিতে গর্ভপাতিত ভ্রূণের ডিএনএ অন্যতম উপাদান হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে। েরপর নিউ অরলিন্সের রোমান ক্যাথলিক চার্চ নৈতিকতার প্রশ্ন তুলেছিল। পরে সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভ্যাকসিনটিতে ভ্রূণ কোষের  গবেষণাগারে তৈরি প্রতিরূপ ব্যবহার করা হয়, ভ্রূণ কোষ নয়।

এছাড়া, সাম্প্রতিককালে এমন বেশ কিছু প্রতিবেদন এসেছে, যা বলছে টিকাকরণের ৪২ দিনের মধ্যে ভ্যাকসিনটি গুলেন-বারি সিনড্রোমের ঝুঁকি তৈরি করে। তরে ভ্যাকসিনটির জন্যই ব্যাধিটি দেখা দিচ্ছে, েমন কোনও কার্যকারী প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

66

ভারতের অনুমোদিত করোনা টিকাগুলির তালিকায় জনসন অ্যান্ড জনসনের অন্তর্ভুক্তি, দেশে কোভ্যাক্সিন, কোভিশিল্ড, স্পুটনিক ভি  এবং মডার্নার ভ্যাকসিন ছাড়া অন্য একটি বিকল্প তো দেবেই, সেই সঙ্গে টিকার ডোজের প্রাপ্যতাও আগের থেকে অনেকটাই বাড়বে। তার উপর এটি ১ ডোজের টিকা হওয়ার কারণে, একটি ডোজ নিলেই টিকার পুরো ডোজ নেওয়া হয়ে যাবে। তাই দেশের টিকাকরণে গতি আসবে। তাছাড়া সংরক্ষণ সগজ হওয়ায় দুর্গম এলাকাগুলিতেও টিকাটি পাঠানোর সুবিধা রয়েছে। 

Share this Photo Gallery
click me!
Recommended Photos