দেশে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যাটা ৩০০ বেশি। পরিস্থিতি সামাল দিতে গত ২৪ মার্চ মধ্যরাত থেকে দেশে লকডাউন শুরু হয়েছে। পরিস্থিতি যা তাতে আগামী ১৪ এপ্রিল লকডাউন ওঠার কোনও সম্ভাবনা নেই। একাধিক রাজ্য সরকার ২ সপ্তাহের জন্য লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছে । কেন্দ্রীয় সরকারও একই পথে হাঁটছে। কিন্তু লকডাউন চললেও জীবন থেমে থাকে না। নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর জন্য ছুটতে হচ্ছে সেই বাজারেই। আর এখান থেকেই সংক্রমণ ছড়ানোর সবচেয়ে বেশি আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা আবার বলছেন, খোলা বাজারের তুলনায় ডিপার্মেন্টল স্টোরগুলিতে সংক্রমণের আশঙ্কা অনেক বেশি।
Asianet News Bangla | Published : Apr 13, 2020 7:00 AM IST / Updated: Apr 13 2020, 12:31 PM IST
বর্তমান সময়ে অনেকেই বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টাল স্টোর থেকে জিনিস কেনা পছন্দ করেন। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্টোরগুলিতে একই ছাদের তলায় পাওয়া যায় সব সামগ্রী। কষ্টহীন ও পরিশ্রমহীন সেই শপিংয়ের জনপ্রিয়তা স্বভাবতই বেশি।
তবে করোনা আতঙ্কের মাধে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ সংক্রমণ এড়াতে এড়িয়ে চলুন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্টোরগুলি। তার বদলে বাজার করুন খোলা আকাশের নীচে।
খোলা বাজারে গিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার পরামর্শ দিলেও বিশেষজ্ঞরা মানুষের থেকে দূরত্ব বজায় রাখার কথা বারাবার বলছেন।
বিভিন্ন সমীক্ষা বলছে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত দোকানগুলিতে বদ্ধ বাতাসে ঘুরে বেড়ায় ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র এয়ারবোন পার্টিকলস। যা ক্রেতা বিক্রেতা উভয়ের শরীরেই খুব সহজে প্রবেশ করতে পারে। যার ফলে হাঁচি, কাশি, সর্দির মত রোগগুলির সৃষ্টি।
বদ্ধ দোকানের মধ্যে হাঁচলে বা কাশলে মানবদেহের ভিতরে থাকা ক্ষতিকর ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র এয়ারবোন পার্টিকলস বেরোতে পারে না। ফলে সহজে এক শরীর থেকে আরেক শরীরে প্রবেশ করে নিঃশ্বাসের মাধ্যমে।
সেন্ট্রালাইজড এসিতে দোকানে প্রবেশ করে না খোলা বাতাস বা সূর্যের আলো। ফলে বদ্ধ হাওয়াতেই ঘুরে বেড়ায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এয়ারবোন পার্টিকলস। খুব সহজেই তাই সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
সমীক্ষা বলছে, এই এয়ারসোলগুলিতেই থাকে প্যাথোজেনস, যা বহন করে কোভিড-১৯-এর মতো ভাইরাস। এই সমস্যা নেই খোলা বাজারে। সেখানে যথেচ্ছ বাতাস ও আলো থাকায় সংক্রমণের আশঙ্কা অনেকটাই কম।
বিশেষজ্ঞরা এই পরীক্ষা করেছেন থ্রিডি ভিজ্যুয়ালাইজশনের মাধ্যমে। দেখা গিয়েছে, ২০ মাইক্রোমিটারের থেকেও ছোট পার্টিকলস মাটিতে বসে যায় না। হাওয়ায় ভেসে বেড়ায়। যা শুষ্ক কাশি তৈরি করে। ফলে সুস্থ মানুষেরও অসুস্থ বা সংক্রামিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
লিডিয়া বোরোইবা নামের এক বিজ্ঞানী জার্নাল অফ আমেরিকান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনে প্রকাশ করেছেন আরেকটি সমীক্ষা। ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির এই গবেষক জানান, কোনও ব্যক্তি হাঁচলে বা কাশলে সেখান থেকে উৎপন্ন টারবুলেন্ট গ্যাস প্রবেশ করে পরিষ্কার বাতাসে। বদ্ধ ঘরে তা ঘুরে বেড়ায় ও অন্যের শরীরে প্রবেশ করে। সমীক্ষা বলছে এই ধরণের গ্যাস ২৩ থেকে ২৭ ফিট বা ৭-৮ মিটার পর্যন্ত উচ্চতায় ঘুরে বেড়ায়। খুব সহজেই শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানব শরীরে প্রবেশ করে।
তাই ডিপার্টমেন্টাল স্টোর নয়, বরং কেনাকাটা করার জন্য বেছে নিন খোলা বাজারকেই।