বয়স সমস্যা না পারিবারিক বিবাদ, কেন ৯ বছর সংসারের পর ডিভোর্স হল শিখর-আয়েশার, জানুন আসল কারণ
ভারতীয় ক্রিকেটের সব থেকে রোমান্টিক জুটির মধ্যে অন্যতম ধরা হত শিখর ধওয়ান ও আয়েশা মুখোপাধ্যায়কে। ছেলে জোরাবারকে নিয়ে ছিল সুখের সংসার। কিন্তু কী এমন হল যে হঠাৎ বিবাহ বিচ্ছেদ পর্যন্ত পৌছে গেল শিখর-আয়েশার সম্পর্ক। জানুন তাদের ডিভোর্সের সম্ভাব্য কারণগুলি।
Sudip Paul | Published : Sep 8, 2021 8:41 AM IST / Updated: Sep 08 2021, 02:22 PM IST
আইপিএল ও টি২০ বিশ্বকাপের আগে হঠাৎ এমন একটা খবর আসবে তা হয়তো অনেকেই ভাবেনি। সমস্যা কিছু থাকলেও তা যে বিবাহ-বিচ্ছেদ পর্যন্ত পৌছে যাবে তা সকলের কাছে ছিল কল্পনাতীত। ভারতীয় দলের তারকা ক্রিকেটার শিখর ধওয়ান ও আয়েশা মুখোপাধ্যায়ের ডিভোর্সের খবরে হতবাক সকলেই।
এ যেন ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসে এক বিনা মেঘে বজ্রপাতের মত খবর। সেদিনকার হাসিখুশি দম্পতির বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে। একে অন্যকে ছেড়ে থাকার নির্ণয় করেছেন শিখর ও আয়েশা। দীর্ঘ ৯ বছরের সম্পর্ক ভেঙে গেল এক নিমেষে।
সোমবার নিজের ইনস্টাগ্রামে একটা লম্বা পোস্টের মাধ্যমে আয়েশা জানিয়ে দেন শিখরকে ডিভোর্স দিয়েছেন তিনি। ভারতের তারকা ক্রিকেটারের সঙ্গে ৯ বছরের ‘রোম্যান্টিক-ইনিংস’ শেষ হচ্ছে জানিয়ে দেন আয়েশা মুখোপাধ্যায়।
নিজের ইনস্টা পোস্টে আয়েশা লেখেন,'ডিভোর্স শব্দটাকে খুব ভয় পেতাম। কিন্তু কাকতালীয় ভাবে এই নিয়ে দু’বার আমার বিবাহ বিচ্ছেদ হল। প্রথম বিয়ে ভাঙার মতো দ্বিতীয় বিয়ে ভাঙার সময়েও খুব ভয় লাগছিল। মনে হল যেন জীবনটা আবার তছনছ হয়ে গেল। জানি না কেন বিয়ে শব্দটার সঙ্গে আমার এত খারাপ সম্পর্ক।'
এছাড়াও আয়েশ লেখেন,'তবে আগে যেভাবে শব্দটাকে ভয় পেতাম, এখন এর অন্য মানেও খুঁজে পেয়েছি। এর মানে একটা সম্পর্ক থেকে অনেক কিছু শেখা। এর মানে কোনও কিছুর জন্য নিজের সেরাটা করা। কিন্তু ব্যর্থ হলেও ভেঙে না পড়া। ডিভোর্স মানে আরও শক্তিশালী হয়ে বাঁচার চেষ্টা করা। ডিভোর্স থেকে আপনি নিজের মতো করে নানা মানে বের করতে পারেন।'
নিজের ডিভোর্সের বিষয় নিয়ে এখনও কোনও মুখ খোলেননি শিখর ধওয়ান। তবে ক্রিকেটই তার এখন ধ্যান জ্ঞান সেকথা পরিষ্কার করে দিয়েছেন তিনি। ইনস্টাতে নিজের ছবি পোস্ট করে সেই বার্তা দিয়েছেন শিখর ধওয়ান।
ইনস্টাগ্রামে নিজের হাসি মুখে ভরা একটি ছবি পোস্ট করে শিখর লেখেন,'কঠোর পরিশ্রম করতে হয় নিজের পেশায় সফল হতে হলে। সব সময় নিজের কাজকে ভালবাসতে হয়। আমি আরও খাটব যাতে আমার সমস্ত স্বপ্ন সোনালি বাস্তবে পরিণত হয়।'
প্রসঙ্গত, ৪৬ বছরের আয়েশা মুখোপাধ্যায় প্রথম জীবনে অস্ট্রেলিয়ান এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেছিলেন। যেখানে তার দুটি কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করে। ২০০০ সালে তার প্রথম কন্যা আলিয়াহ এবং ২০০৫ সালে তাঁর দ্বিতীয় কন্যা রিয়ার জন্ম হয়।
কিন্তু তারপর প্রথম স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে যায় আয়েশার। ফেসবুকের মাধ্যমেই প্রথমবার আয়েশার সঙ্গে কথা হয় শিখরের। তারপর ২০১২ সালের ৩০ অক্টোবর দু’জনে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের জোরাবর নামে একটি ছেলেও রয়েছে। কিন্তু নয় বছর পর সেই সম্পর্কে ছেদ পড়ল।
শিখর ধওয়ান ও আয়েশা মুখোপাধ্যায়ের ডিভোর্সের খবরে রীতিমতত হতবাক 'গব্বরের' ভক্তরা। কিন্তু কারণে হঠাৎ এত বড় সিদ্ধান্ত নিলেন শিখর ও আয়েশা তা নিয়ে আলোচনা চলছে ক্রিটে দুনিয়া ও নেট দুনিয়ায়।
গত বছরও তাদের সম্পর্কের ফাটলের খবর পাওয়া গিয়েছিল। দুজনেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একে অপরকে আনফলো করেছেন। এর পাশাপাশি, আয়েশা তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে শিখরের ছবিও সরিয়ে দিয়েছিলেন।
সূত্রের খবর বেশ কিছুদিন ধরে তাঁদের মধ্যে সব কিছু ঠিক চলছিল না৷ ধাওয়ানের স্ত্রী আয়েশা মুখোপাধ্যায় নিজের ভেরিফাইড ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট সেখানেই ধাওয়ান তাঁর সেই সময়ের স্ত্রী কে ট্যাগ করতেন৷ কিন্তু কিছুদিন আগেই এই অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দিয়েছেন তিনি৷
এরই সঙ্গে গত বছর নভেম্বরে আয়েশা মুখোপাধ্যায় নতুন ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট বানিয়েছেন। সেই অ্যাকাউন্টে ধওয়ানকে রাখেননি। এই অ্যাকাউন্টে তিনি নিজের দুই মেয়ে ও ছেলের সঙ্গে বেশ কিছু ছবি শেয়ার করেছেন৷ কিন্তু ধাওয়ানের সঙ্গে কোনও ছবিই রাখেননি৷
ইনস্টাগ্রামে যে বায়ো লিখেছেন তাতে নিজের স্বাতন্ত্র্য ও স্বাধীন সত্ত্বার কথা উল্লেখ করেছেন৷ পাশাপাশি মহিলাদের সাহায্য করার কথাও তিনি লিখেছেন৷ ফলে আলাদা হওয়ার কথা দীর্ঘ দিন ধরেই ভাবছিলেন আয়েশা তা পরিষ্কার।
তাদের পারিবারিক জীবনেও নান ধরনের সমস্যা চলছিল বলেও জানা গিয়েছিল। তাদের মানসীকতাও মিলছিল না বলে সূত্রের খবর। একাধিকবার জামেলাতেও জড়িয়েছেন। বয়সের ব্যবধান প্রধান সমস্যায় কিনা তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
তবে নিজেদের সম্পর্ক শষের কথা জানিয়ে দিয়েছেন আয়েশ মুখোপাধ্যায়। শিখরের মন্তব্য থেকও পরিষ্কার তিনি আগামি দিনে ক্রিকেটকেই পাখির চোখ করে এগোতে চাইছেন।