ইউরোতে 'মহা অঘটন', বিশ্বজয়ী ফ্রান্সকে হারিয়ে শেষ আটে সুইৎজারল্যান্ড

ইউরো কাপের সব থেকে বড় অঘটনটা ঘটিয়ে দিল সুইৎজারল্যান্ড। প্রতিযোগিতার হট ফেভারিট ও ২০১৮ বিশ্বকাপ জয়ী ফ্রান্সকে হারিয়ে 'জায়েন্ট কিলার' তকমাটা পাকাপাকিভাবে নিজেদের নামে করে নিল সাকেরি, জাকা, এমবোলো, সেফেরোভিকরা। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে ৩-৩ ফলের পর টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে ৫-৪ ব্যবধানে হারায় সুইৎজারল্যান্ড।

ম্যাচের শুরুতেই সুইৎজারল্যান্ড বুঝিয়ে দিয়েছিল কোনও আন্ডারডগের মতো তারা এই ম্যাচ খেলতে নামেনি। ১৫ মিনিটের মাথাতেই জুবেরের সেন্টার থেকে হেডে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন সেফেরোভিচ। ম্যাচের প্রথমার্ধে সেই লিড ধরে রাখে সুইসরা।

খেলার রং বদলায় দ্বিতীয়ার্ধে। ৫৭ ও ৫৯ মিনিটে পরপর দুটি গোল করে ফ্রান্সকে ২-১ গোলে এগিয়ে দেন দুরন্ত ছন্দে থাকা করিম বেঞ্জিমা। সেই সময় ম্যাচের রাশ নিজেদের দখলে রেখছিল বিশ্বজয়ীরা।

ম্যচের ৭৫ মিনিটে গোল করে ফ্রান্সকে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন পল পোগবা। এবার ইউরোতে যেকটি গোলকে সেরার তালিকায় রাখা হবে সেখানে পোগবার গোল নিঃসন্দেহ উপরের দিকে থাকবে। চোখ ধাধানো গোল করেন ফরাসী তারকা।

সেই সময় ফ্রান্সের জয় যে একাবের নিশ্চিৎ ছিল তা ধরেই নিয়েছিলেন তাবড়া তাবড় ফুটবল বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সুইসরা হয়তো ক্রোটদের দেখে অনুপ্রাণিত ছিলেন। ম্যাচে লড়াই চালিয়ে যায় জাকা, সাকেরিরারা।

অবিশ্বাস্যভাবে ম্য়াচে ফেরে সুইৎজারল্যান্ড। ম্য়াচের ৮১ মিনিটে ফের হেডে গোল করে দলের হয়ে ব্যবধান কমান সেফেরোভিচ। এরপরই তৃতীয় গোল করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে সুইসরা।

ম্য়াচের একেবারে শেষ মুহূর্তে ৯০ মিনিটে গোল করে ম্যাচে ৩-৩ গোলে সমতা ফেরায় সুইজারল্যান্ডের মারিও গাভরানোভিচ। তখনই মানসিকভাবে অনেক বিধ্বস্ত দেখায় ফরাসী ব্রিগেডকে।

এরপর ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ৩০ মিনিটের খেলায় একাধিক গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল ফ্রান্স। কিন্তু এমবাপে-জিরুরা গোল করতে পারেননি। একটি শট পোস্টেও লাগে।

যার ফলে ১২০ মিনিট শেষ ম্যাচ গড়ায় টাই ব্রেকারে। আর সেখানেই ২০১৮ বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম নায়ক এমব্যাপে ২০২০ ইউরোতে ভিলেন হয়ে উঠলেন।

পেনাল্টি শুট আউটে ৫-৪ গোলে ম্যাচ জেতে সুইজারল্যান্ড। পেনাল্টি শুট আউটের শেষ শটটা মারতে গিয়েছিলেন এমবাপে। তাঁর শট বাঁচান সুইজারল্যান্ডের গোলকিপার ইয়ান সমার। আর তার ফলে এবারের ইউরো কাপে প্রি কোয়ার্টার ফাইনালেই বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের দৌড় থেমে গেল।

ইউরোতে অঘটন ঘটিয়ে সুইৎজারল্যান্ডের উচ্ছ্বাস ছিল বাধ ভাঙা। স্টেডিয়ামের দর্শকরাও আবেগে ভেসে যান। প্রথমবার দেশ ইউরোর শেষ আটে। পরবর্তী রাউন্ডে সুইসদের প্রতিপক্ষ স্পেন।