বালাকোট এয়ার স্ট্রাইক, প্রত্য়য়ী প্রত্যাঘাতের এক বছর
১৪ ই ফেব্রুয়ারি ২০১৯ জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার লেথোপোড়ায় অবন্তীপাড়ার কাছাকাছি জম্মু শ্রীনগর জাতীয় সড়কে বেলা ৩ টে ১৫ নাগাদ নিরাপত্তা কর্মী বহনকারী একটি বাস বিস্ফোরক বহনকারী একটি গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা খায়। বিস্ফোরনে ৭৬তম ব্যাটালিয়নের সিআরপিএফের ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান শহিদ হন, আহত হন আরও অনেকে। ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ সারা দেশ জুড়ে এখ শোকের ছায়া নেমে আসে।
deblina dey | Published : Feb 26, 2020 5:36 AM IST / Updated: Feb 26 2020, 02:15 PM IST
পুলওয়ামার পাল্টা জবাবে আজকের দিনেই ২৬ ফেব্রুয়ারি ঠিক ১২দিনের মাথায় ভারতীয় বিমান বাহিনীর বারোটি মিরাজ ২০০০ জেট বিমান নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাকিস্তানের বালাকোটে ঢুকে এয়ার স্ট্রাইক করেন। জেট বিমান মিরাজ ২০০০ জইশ-ই-মহম্মদের ঘাটিতে হামলা চালায়।
ভারতীয় জেটগুলি এলওসি পেরিয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীর পেরিয়ে বালাকোট, চাকোটি এবং মুজফ্ফরাবাদে জঙ্গি ঘাঁটিতে অভিযান চালাল ১২টি মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান। বালাকোটে একটি জৈইশ-ই-মোহাম্মদ পরিচালিত জঙ্গি ঘাঁটি আক্রমণ করে এবং বিমান হামলায় প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ জঙ্গি নিহত হয়। পাকিস্তানের মতে, ভারতীয় সামরিক বিমান মুজফফরাবাদ কাছে তাদের আকাশ সীমা লঙ্ঘন করে এই হামলা করেছে।
জৈশ-এ-মহম্মদের মাদ্রাসার ওপর ভারতীয় বায়ুসেনার হানায় প্রতিটি বিমানে ক্ষেপণাস্ত্রের নিক্ষেপবিন্দুতে মোট বিস্ফোরক পরিমাণ নেট এক্সপ্লোসিভ কোয়ান্টিটি ছিল ৭০ থেকে ৮০ কেজি টিএনটি।
মঙ্গলবার ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ ১২টি মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের বালাকোটে ১০০০ কেজি ওজনের বোমা ফেলেছে। তাতে মারা গিয়েছে প্রায় ৩০০ জন জঙ্গি। মাত্র দেড় মিনিটেই তার মধ্যেই পাকিস্তানে ঢুকে ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান
এই হামলার দায় নিয়েছিল পাকিস্তানের জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদ। ভারতীয় বায়ুসেনার এই হামলায় অংশ নিয়েছিল মিরাজ ২০০০ জেট যুদ্ধবিমান। পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ হামলার কথা স্বীকার করলেও তাতে জঙ্গি নিধনের বিষয়টি মানেনি। তারা দাবি করেছিল, ভারতের এই হামলায় কয়েকটি গাছ ও কাকের মৃত্যু হয়েছে।
ভারতের সেই হামলায় পাকিস্তান কেঁপে গিয়েছিল, তার প্রমাণ পরের দিনই এফ-১৬ য়ুদ্ধবিমান নিয়ে ভারতে একইরকম বিমানহামলার চেষ্টা চালায় পাক তবে তা ব্যর্থ হয়। পাকিস্তানের হামলা ভেস্তে দিতে আকাশপথে যাত্রা করে ভারতীয় বায়ুসেনার দুটি মিগ-২১ বিমান।
তার মধ্যে একটি মিগ-২১ বিমান আটক হয় পাকিস্তানে। এরপরই পাক সেনার মুখপাত্রের তরফে দাবি করা হয়েছে যে, অভিনন্দন বর্তমান নামে এক ভারতীয় পাইলটকে তাদের হেফাজতে রাখা হয়েছে। এরপরই অভিনন্দনকে ফেরাতে তৎপর হয়ে ওঠে গোটা দেশ।
স্যোশাল মিডিয়া জুড়ে অভিনন্দন বর্তমান-কে দেশে ফিরিয়ে আনার আর্তি। পাক সেনার হাতে বন্দি থেকেও অসম্ভব সাহসিকতার পরিচয় দেন অভিনন্দন। ভাইরাল হওয়া একাধিক ভিডিওতে ফুটে উঠেছিল অভিনন্দনের বন্দি দশার চরম মুহূর্ত।
এরপর অভিনন্দনকে মুক্তি দেয় পাকিস্তান। সেই রাতে ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে দেশে ফেরেন অভিনন্দন। দেশে ফিরে আসার পর দিল্লিরই এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বায়ুসেনার এই উইং কমান্ডার। দেশে ফিরে একাধিক শারিরীক পরীক্ষায় পাশ করে সেই ঘটনার ৬ মাস পর আবার নিজের চেনা গণ্ডিতে ফিরে যাচ্ছেন অভিনন্দন বর্তমান।
এই ঘটনার এক বছর কেটে গেলেও আজও টাটকা স্মৃতি পুলওয়ামা বালাকোট হামলায় শহীদ ভারতীয় জওয়ানদের পরিবার। তাঁদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে ঠিক এক বছর আগে ঘটে যাওয়া এই ঘটনা। কত পরিবার তাঁদের ছেলে, স্বামী, ভাই-কে হারিয়েছে এই হামলায়। তবে সামরিক বাহিনী ছিল সদা প্রস্তুত প্রয়োজন পড়লে পাকিস্তানের মাটিতে গিয়েও যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত ছিল ভারত।