রাজধানীর স্মৃতি ফিরিয়ে আনতেই বেঙ্গালুরুতে সংঘর্ষ, হামলার ছক পূর্ব পরিকল্পতি বলছে কর্ণাটক সরকার
মঙ্গলবার রাতে ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল তথ্যপ্রযুক্তি নগরী কর্ণাটক। তবে এই সংঘর্ষ পূর্ব পরিকল্পিত ছিল বলেই ইজ্ঞিত দিচ্ছে কর্ণাটক সরকার। এই বিষয়ে বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজনকেও চিহ্নিত করেছে বেঙ্গালুরু পুলিশ।
Asianet News Bangla | Published : Aug 13, 2020 10:31 AM IST / Updated: Aug 13 2020, 06:21 PM IST
বেঙ্গালুরুর হিংসার ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে দু'জন এসডিপিআই সদস্যকে। তাদের মধ্যে একজন এসডিপিআই-এর নেতা মুজ্জামিল পাশা। জানা গিয়েছে এই পাশার ডাকেই মঙ্গলবার রাতে বেঙ্গালুরুর রাস্তায় নেমেছিল বিক্ষোভকারীরা। এবং যে বিতর্কিত পোস্টে ঘিরে এই হিংসার সূত্রপাত, সেই পোস্টটি হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই শহরের ২০০ থেকে ৩০০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
বেঙ্গালুরুর হিংসার ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে দু'জন এসডিপিআই সদস্যকে। তাদের মধ্যে একজন এসডিপিআই-এর নেতা মুজ্জামিল পাশা। জানা গিয়েছে এই পাশার ডাকেই মঙ্গলবার রাতে বেঙ্গালুরুর রাস্তায় নেমেছিল বিক্ষোভকারীরা। এবং যে বিতর্কিত পোস্টে ঘিরে এই হিংসার সূত্রপাত, সেই পোস্টটি হওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই শহরের ২০০ থেকে ৩০০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
ফেসবুক পোস্ট ঘিরে হিংসা ছড়িয়ে পড়তেই পরিস্থিতি সামাল দিতে গুলি চালাতে হয় পুলিশকে। সেই গুলিতে তিনজন নিহত হন। এই সহিংসতার ঘটনায় ৬০ পুলিশকর্মীও জখম হন। এরপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১১০ জনকে গ্রেফতারও করা হয়। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার সন্ধেয় বেঙ্গালুরুতে গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনা সম্পূর্ণ ভাবে পূর্ব পরিকল্পিত বলে জানাচ্ছে কর্ণাটকের মন্ত্রী সিটি রাভি। এই সংঘর্ষে যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা দোষীদের থেকেই আদায় করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্নাটকের সরকার। এর আগে উত্তর প্রদেশে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে গোলমাল ছড়িয়ে পড়লে দোষীদের থেকেই ক্ষতিপূরণ আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যোগী আদিত্যনাথ সরকার।
ঠিক কী ভাবে মঙ্গলবার বেঙ্গালুরুতে গোলমাল ছড়িয়ে পড়েছিল, তা এখনও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে ইতোমধ্যেই এই বিষয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে কর্নাটকের শাসক দল বিজেপি এবং বিরোধী দল কংগ্রেসের মধ্যে। কর্নাটকের মন্ত্রী সিটি রাভি জানিয়েছেন, 'পুরো গোলমালটা পূর্ব পরিকল্পিত। জিনিসপত্র নষ্ট করার জন্য পেট্রল বোমা ও পাথর ব্যবহার করা হয়। ৩০০-র বেশি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।'
মঙ্গলবার সন্ধেয় পূর্ব বেঙ্গালুরুর কেজি হাল্লি এবং ডিজি হাল্লি এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। দুটি পুলিশ স্টেশন এবং এক কংগ্রেস বিধায়কের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। ডিজি হাল্লি পুলিশ স্টেশনের বেসমেন্টে রাখা ২০০টি বাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ভাঙচুর করা হয় পুলিশ স্টেশনেও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গুলি চালালে তিন জনের মৃত্যু হয়। গোলমালে আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশকর্মীও।
কংগ্রেস বিধায়ক শ্রীনিবাস মূর্তির এক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি ফেসবুকে একটি আপত্তিকর পোস্ট করেন বলে অভিযোগ। সেই নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত।
সংঘর্ষ বিধ্বস্ত এলাকায় কারফিউ জারি করতে হয়। রাজনৈতিক নেতা মন্ত্রীরা বারবার করে শান্তিরক্ষার আবেদন জানান। মঙ্গলবার রাতের ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কর্নাটক সরকার।
কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পার সঙ্গে বৈঠকের পরে কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মানি জানান যে এই সংঘর্ষের তদন্তে সিআইডি বা বিশেষ তদন্তকারী দল গঠনের বিষয়ে আলোচনা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় তদন্তেরই নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ দেখে দোষীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
কর্ণাটকের আরও এক মন্ত্রী আর অশোকও বলেন, এই ঘটনা পরিকল্পিত। এই ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
হামলার পেছনে এসডিপিআই রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এসডিপিআই হল ইসলামিক কট্টরপন্থী সংগঠন পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গ। সিএএ সংক্রান্ত বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময়ও এরা প্রচুর হিংসা ছড়িয়েছে দেশে। তাছাড়া দেশের জনগণের মধ্যে বিভেদ তৈরি করার ক্ষেত্রেও এরা ছড়িয়ে দিচ্ছে বিষ। এর আগে সিএএ বিরোধী বিক্ষোভ চলাকালীন এই সংগঠনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি উঠেছিল।