লাল বাহাদুর শ্রীবাস্তব থেকে 'শাস্ত্রী', জন্মবার্ষিকীতে জেনে নিন তাঁর সম্পর্কে ১০টি অজানা তথ্য

Published : Oct 02, 2021, 02:12 PM ISTUpdated : Oct 02, 2021, 04:43 PM IST

২ অক্টোবর। এই দিনটি ভারতীয়দের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এইদিনেই জন্ম হয়েছিল দেশের দুই জনপ্রিয় জাতীয়তাবাদী নেতা মহাত্মা গান্ধী ও লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর। এই দিন দেশের সর্বত্রই তাঁদের স্মরণ করা হয়ে থাকে। ১৯০৪ সালে আজকের দিনে মুঘলসরাইতে জন্ম হয়েছিল লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর। তিনি ছিলেন ভারতের দ্বিতীয় প্রধানমন্ত্রী এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের একজন দলনেতা। ১৯২০ সালে তিনি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগদান করেন। দেশের স্বাধীনতার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন তিনি। দেশগঠনে তাঁর অবদান অস্বীকার করা যায় না। জন্মজয়ন্তীতে জেনে নিন তাঁর সম্পর্কে ১০টি অজানা তথ্য। 

PREV
111
লাল বাহাদুর শ্রীবাস্তব থেকে 'শাস্ত্রী', জন্মবার্ষিকীতে জেনে নিন তাঁর সম্পর্কে ১০টি অজানা তথ্য

খুব ছোট বয়সেই বাবাকে হারিয়ে ছিলেন লাল বাহাদুর শাস্ত্রী (Lal Bahadur Shastri )। এরপর মায়ের সঙ্গে মামার বাড়ি মির্জাপুরে চলে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই তাঁর শৈশব কেটেছে। প্রাথমিক শিক্ষাও লাভ করেছেন সেখান থেকেই। অনেক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে তাঁকে শিক্ষা লাভ করতে হয়েছিল। বলা হয়, প্রতিদিন সাঁতার কেটে স্কুলে (School) যেতেন শাস্ত্রী। কারণ সেই সময় গ্রামের মধ্যে স্কুল খুব বেশি পরিমাণে ছিল না। ফলে অনেক দূরে গিয়ে স্কুলে পড়তে হত। 

211

১৯১৭ সাল। তখন শাস্ত্রীর বয়স ছিল মাত্র ১২ বছর। এই বয়সেই ভারতের জাতি ব্যবস্থার প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন তিনি। নিজের টাইটেল 'শ্রীবাস্তব' ত্যাগ করেছিলেন। এরপর স্নাতক হওয়ার পর তাঁকে 'শাস্ত্রী' উপাধি দেওয়া হয়েছিল। যার অর্থ হল পণ্ডিত।

311

১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট পুলিশ ও পরিবহন মন্ত্রী হন শাস্ত্রী। তাঁর শাসনকালে  প্রথমবার মহিলা কন্ডাক্টর নিয়োগ করা হয়েছিল। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য লাঠির পরিবর্তে ওয়াটার জেট ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। তার আগে পর্যন্ত বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার জন্য লাঠিচার্জ করা হত। 

411

সরকারি কাজে ব্যবহারের জন্য তাঁর একটি শেভ্রোলে ইম্পালা গাড়ি ছিল। একবার তাঁর পুত্র গাড়িটি চালানোর জন্য ব্যবহার করেছিলেন। যখন এই বিষয়টি তিনি জানতে পেরেছিলেন তখনই তিনি তাঁর চালককে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে এই গাড়িটি ব্যক্তিগতভাবে কতটা ব্যবহার করা হয়েছে। যতটা পথ সেই গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছিল সেই টাকা তিনি সরকারি অ্যাকাউন্টে দিয়ে দিয়েছিলেন। 

511

১৯৫২ সালে শাস্ত্রী রেলমন্ত্রী হন। কিন্তু, ১৯৫৬ সালে তামিলনাড়ুতে একটি ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা হয়েছিল। তাতে প্রায় ১৫০ জনের মৃত্যু হয়। এই ঘটনার পরই রেলমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। দুধের উৎপাদন ও সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য শ্বেত বিপ্লবের (White Revolution) সূচনা করেছিলেন তিনি। আর ওই একই সময় দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সবুজ বিপ্লবের সূচনা করেছিলেন।

611

লাল বাহাদুর শাস্ত্রী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর ১৯৬৫ সালে সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হয়েছিল। সেই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দেশকে রক্ষা করেছিলেন তিনি। সৈনিক ও কৃষকদের গুরুত্ব বোঝানোর জন্য তিনি 'জয় জওয়ান জয় কিষাণ' স্লোগান দিয়েছিলেন।

711

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৫১ দিল্লিতে চলে যান লাল বাহাদুর শাস্ত্রী। সে সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার একাধিক দফতরের দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধে। একে একে সামলাতে শুরু করেন রেল, পরিবহণ ও যোগাযোগ, শিল্প ও বাণিজ্য, স্বরাষ্ট্র সহ বিভিন্ন দফতর। নেহরুর অসুস্থতার সময় তাঁকে দফতরবিহীন মন্ত্রীও ঘোষণা করা হয়েছিল। 

811

১৯২৮ সালে ললিতা দেবীর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন শাস্ত্রী। যৌতুক গ্রহণে তিনি স্বীকৃতি দেননি। তবে শ্বশুরবাড়ির অনুরোধে তিনি মাত্র পাঁচ গজ খাদি কাপড় এবং স্পিনিং হুইলকে যৌতুক হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন।

911

যখন তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখন তাঁর পরিবার তাঁকে একটি গাড়ি কিনতে বলেছিল। সেই সময় ফিয়াট গাড়ি কিনেছিলেন তিনি। সেই সময় যার দাম ছিল ১২ হাজার টাকা। কিন্তু, তাঁর কাছে তখন ওই পরিমাণ টাকা ছিল না। ব্যাঙ্কে মাত্র ৭ হাজার টাকা ছিল। সেই কারণে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক থেকে ৫ হাজার টাকা ঋণের জন্য তিনি আবেদন করেছিলেন। সেই গাড়িটি আজও দিল্লির শাস্ত্রী মেমোরিয়ালে রাখা আছে।

1011

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় দেশে খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছিল। দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি হয়েছিল দেশে। ওই সংকটের মুহূর্তে নিজের বেতন নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। আর দেশের সাধারণ মানুষকে সপ্তাহে একটা দিন উপোস করার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। তাঁর এই আবেদন ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছিল। প্রতি সপ্তাহের সোমবার দিন সন্ধেতে রেস্তোরাঁগুলি তাঁদের দোকান বন্ধ করে দিত। পরে এর নাম দেওয়া হয় 'শাস্ত্রী ব্রত'। 

1111

১৯৬৬ সালের জানুয়ারিতে তাসখন্দ চুক্তি সম্পন্ন করতে সেখানে গিয়ে মে মাসের ১১ তারিখ রাতে হোটেলের ঘরেই তাঁর মৃত্যু হয়। সরকারিভাবে জানানো হয় তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। কিন্তু, তাঁর পরিবারের সদস্যরা এই মৃত্যুর পিছনে রহস্য আছে বলে বারে বারেই তাঁরা ‘গোপন’ ফাইল প্রকাশের দাবি তুলেছেন। 

click me!

Recommended Stories