Published : Aug 26, 2021, 10:35 PM ISTUpdated : Aug 26, 2021, 10:37 PM IST
ব্রিটিশ শাসনের ভয়াবহ স্মৃতি আজও উস্কে দেয় জালিয়ানওয়ালাবাগ। সেই জালিয়ানওয়ালাবাগের স্মারক কমপ্লেক্সটি সংস্কারের পর আগামী ২৮ অগাস্ট আবার নতুন করে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে উৎস্বর্গ করবেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমেই গোটা অনুষ্ঠান হবে। কেন্দ্রীয় সরকার আশা করছেন জালিয়ানওয়ালাবাগকে কেন্দ্র করে পঞ্জাব ও সংলগ্ন এলাকার পর্যটন শিল্প আরও উন্নত হবে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জালিয়ানওয়ালাবাগ কমপ্লেক্সটি নতুন করে শনিবার সন্ধ্যে ৬টা ২৫ মিনিটে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন। একই সঙ্গে তিনি উদ্বোধন করবেন গ্যালারি আর মিউজিয়ামেরও। গোটা কমপ্লেক্সটি নতুন করে সংস্কার করা হয়েছে।
211
জালিয়ানওয়ালাবাদ কমপ্লেক্সের অপ্রয়োজনীয় আর অব্যাহারিত ভাবনগুলি সংস্কার করে চারটি মিউজিয়া তৈরি করা হয়েছে। গ্যালারিগুলিতে স্থান পেয়েছে ওই সময়ের পঞ্জাবের ইতিহাস। ঐতিহাসিক আর দুমূল্য নথি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যার পর্যটন আর ইতিহাস পডুয়াদের উৎসাহিত করবে। পাশাপাশি দেশের অতীত সম্পর্কেও একাধিক তথ্য সামনে নিয়ে আসবে।
311
প্রজেকশন ম্যাপিং, থ্রিডি উপস্থাপনার ব্যবস্থা রয়েছে। শিল্প আর ভাস্কর্য উপস্থাপনায় অডিও -ভিশ্যুয়ার প্রযুক্ত ব্যবহার করা হবে। লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের মাধ্যমে ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিলের সেই ভয়াবহ ঘটনাও তুলে ধরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যা দর্শকদের আকৃষ্ট করবে বলেও দাবি করেছেন উদ্যোক্তারা।
411
জালিয়ানওয়ালাবাগ কমপ্লেক্স উন্নয়নে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পঞ্জাবের স্থানীয় স্থাপত্য শৈলী ব্যবহার করে সাজানো হয়েছে গোটা কমপ্লেক্সকে। শহিদ কূপটিও মেরামত করা হয়েছে। শিখাস্তম্ভ ও শহিদ স্তম্ভও সংস্কার করা হয়েছে। পর্যটকদের ভিড়ের কথা মাথায় রেখে রাস্তাগুলিকে আরও চড়াও করা হয়েছে। জলায়শকে লিলি পুকুর হিসেবে পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছে।
511
জালিয়ানওয়ালাবাগ কমপ্লেক্সে পর্যটক আর দর্শনার্থীদের কথা মাথায় রেখে বেশ কিছু আধুনিক ব্যবস্থা করা হয়েছে। গোটা চত্ত্বরকেই সুন্দর করে আলো দিয়ে সাজান হয়েছে। একই সঙ্গে বৃক্ষরোপন আর সবুজায়নের দিকেও বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। মোটকথা গোটা এলাকাকে সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।
611
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের পাশাপাশি হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড আর হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীরাও থাকবেন। পঞ্জাবের সমস্ত বিধায়ক আর সাংসদদেরও আমন্ত্রণ জানান হয়েছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন জালিয়ানওয়ালাবাগ ন্যাশানাল মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সদস্যরাও।
711
জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড ভারতীয় উপমহাদেশের সবথেকে নৃশংশ গণহত্যা। ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল অমৃতসরের সেইসময়ের ইংরেজ সেনানায়ক জেনারেল ডায়ারের নির্দেশেই বিভৎস হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছিল। নিরস্ত্র একদল মানুষের ওপরে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল ইংরেজ সৈন্যরা।
811
ইংরেজ সরকারের গুলি মহিলা, শিশু, বৃদ্ধ কিছুই মানেনি। জালিয়ানওয়ালাবাগ মাঠটি সেই সময় তিন দিক ঘেরা ছিল। যাতায়াতের রাস্তাটি বন্ধ করে নির্বিচারে গুলি চালান হয়েছিল। সেই সময় প্রাণ বাঁচাতে অনেকেই স্থানীয় একটু কুঁয়ো ঝাঁপ দেন। সেই কুঁয়োটি বর্তমানে শহিদ কুঁয়ো।
911
জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাউটহুড উপাধি ত্যাগ করেছিলেন। হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জেলারেল ডায়ারের রিপোর্টই বলছেন তিনি ১০০ জন গুর্খা সৈন্য আর ২টি সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে নিরস্ত্র মানুষদের ওপর চড়াও হয়েছিলেন। প্রায় ২০০০ হাজার মানুষকে হত্যা করেছিলেন। ১৬৫০ রাউন্ড গুলি চালিয়েছিলেন।
1011
জালিয়ানওয়ালাবাগ ব্রিটিশ শাসনের অত্যাচার নগ্নরূপটি সামনে এনেছিল। দেশবাসীর পাশাপাশি বিদেশেও সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল ব্রিটিশরাজকে। প্রতিবাদে গরজে উঠেছিল গোটা দেশ। একপরই জাতীয় কংগ্রেস উদ্যোগী হয়। একটি ট্রাস্ট গঠন করে। সেই ট্রাস্টই ১৯২০ সালে জালিয়ানওয়ালাবাদের জমি কিনে নিয়েছিল স্মারক নির্মাণের জন্য।
1111
এই ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন ব্রিটেনের রানী এলিজাবেথ। তিনি বলেছিলেন এই ঘটনা অত্যান্ত দুঃখজন আর জঘন্য। জানিয়ানওয়াবাবাদ গত্যাকাণ্ডের নায়ক ডায়ারও কিছুদিন পরে আত্মহত্যা করেছিলেন।