সীমান্তে দখলদারির চেষ্টা অব্যাহত চিনের, নিরবচ্ছিন্ন নজরদারি চালাতে দরকার আরও ৪ থেকে ৬টি স্যাটেলাইট

 


হটস্প্রিং থেকে সরে গেলেও চিনা সেনা এখনও অবস্থান করছে প্যাংগংয়ে। সেখানকার গ্রিন টপ থেকে ভারতের গতিবিধর উপর নজর রাখছে লাল ফৌজ। লাদাখে ভারত-চিন উত্তেজনা কমার কোনও নাম নেই। যেই প্যাংগং সো নিয়ে এত বিতর্ক, সেখানে চিনা সেনারা ফিঙ্গার ৫ এ ফিরে এসেছিল, তবে তারা এখনও ফিঙ্গার ৪-এর রিজলাইন দখল করে রয়েছে। চিনা সেনারা ফিঙ্গার ৪ থেকে ফিঙ্গার ৮-এর মধ্যকার ৮-কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকাজুড়ে তাদের তৈরি কাঠামোগুলিকেই এলএসি বলে দাবি করে যাচ্ছে এখনও। এই পরিস্থিতিতে  চিনের লোলফৌজের কার্যকলাপ জানতে আরও ৪ থেকে ৬টি স্যাটেলাইটের প্রয়োজন বলেই মনে করছে দেশের নিরাপত্তায় থাকা সংস্থাগুলি।

Asianet News Bangla | Published : Aug 7, 2020 6:34 AM IST / Updated: Aug 07 2020, 12:13 PM IST

110
সীমান্তে দখলদারির চেষ্টা অব্যাহত চিনের, নিরবচ্ছিন্ন নজরদারি চালাতে দরকার আরও ৪ থেকে ৬টি স্যাটেলাইট

প্যাংগং লেকের উত্তরের একটা বড় অংশ, গালওয়ান নদী উপত্যকা, দেপসাং সমতলভূমি, গোগরা, হট স্প্রিং সহ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর বেশ কিছু এলাকায় চিনের লাল ফৌজের তৎপরতা এখনও রয়েছে। বিশেষত দুই দেশের সেনা কম্যান্ডার পর্যায়ের বৈঠকের পরেও গালওয়ান নদী উপত্যকা থেকে সামরিক পরিকাঠামো এখনও সরায়নি চিনের বাহিনী। এর মধ্যেই তিব্বত এবং আকসাই চিনে নতুন করে সেনা মোতায়েন শুরু করেছে চিন। তৈরি হচ্ছে হেলিপ্যাড, সামরিক কাঠামো। ভারতের উপগ্রহচিত্রে এমনই ছবি ধরা পড়েছে।

210


চিন সেনা সরানোর দাবি করলেও বারবার ভারতের উপগ্রহ চিত্র চিনের আসল ছবিটা তুলে নিয়ে আসছে। সেই উপগ্রহ চিত্রকে সামনে রেখেই ভারতের দাবি করছে  পূর্ব লাদাখে সীমান্ত বরবার এখনও প্রায় ৪০ হাজার সেনা মোতায়েন রেখেছে চিন। অথচ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বারবার লাদাখের ওই অঞ্চল থেকে সেনা সরানোর কথা বলেছিল বেজিং। বাস্তবে তেমনটা কোনওভাবেই করছে না চিন।

310

চিন-ভারত সীমান্তের দৈর্ঘ্য চার হাজার কিলোমিটার। এর চার ভাগের এক ভাগ অরুণাচল প্রদেশে। আর এই বিস্তির্ণ এলাকায় নজরদারি চালাতে প্রয়োজন স্যাটেলাইট। চিনের লোলফৌজের কার্যকলাপ জানতে তাই আরও ৪ থেকে ৬টি স্যাটেলাইটের প্রয়োজন বলেই মনে করছে ভারতের নিরাপত্তায় থাকা সংস্থাগুলি।
 

410

এমনিতে বর্তমানে ভারত চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় নজরদারিতে রয়েছে কৌটিল্য। ভারতের এমিস্যাট  নামের এক গোয়েন্দা স্যাটেলাইট চিনের দখলে থাকা তিব্বতের উপর দিয়ে গেছে। এই স্যাটেলাইটে কৌটিল্য নামের ইলেক্ট্রনিক্স ইন্টেলিজেন্স সিস্টেম  লাগানো আছে। এই সিস্টেমের কাজ হল, হাজার হাজার কিমি দূর মহাকাশ থেকে মাটির এক মিটার পর্যন্ত হয়ে চলা গতিবিধির স্পষ্ট ছবি তুলতে পারে।

510

লাদাখের প্যাংইয়াং লেকের ফিঙ্গার ফোর নিয়ে হওয়ার ভারত-চিনের আলোচনা বিফল হওয়ার একদিন পর এই স্যাটেলাইট তিব্বতের সেই অংশের উপর দিয়ে যায়, যেই এলাকা চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির দখলে আছে। শোনা যাচ্ছে যে, এই স্যাটেলাইট তিব্বতে চিনের সাথে যুক্ত অনেক তথ্য সংগ্রহ করেছে। তিব্বতে ঠিক কত সংখ্যক চিনের সেনা আছে আর সেখানকার অবকাঠামো প্রকল্প গুলো নিয়ে তথ্য হাসিল করেছে। 

610

লাদাখের দুর্গম এলাকায় বিগত তিন মাস ধরে চিন আর ভারতের সেনা মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছে। চিন লাদাখের ৪ ফিঙ্গার এলাকায় অনুপ্রবেশ করেছিল। আর সেখানকার তিনটি এলাকা থেকে পিছু হটলেও, প্যাংইয়াং লেক থেকে পিছু হটার নাম নিচ্ছে না। সেখানে তাঁরা সৈন্য শক্তি আরও মজবুত করার কাজে জুটেছে। চিন শিনিজিয়াং এলাকাতেও নিজেদের সেনার সংখ্যা বাড়িয়েছে। এর সাথে সাথে তিব্বতের পাশে সাতটি এয়ারবেসে লড়াকু বিমান মোতায়েন করেছে। চীনের ষড়যন্ত্র দেখে ভারতও চিন সীমান্তে প্রচুর পরিমাণে সেনা আর অস্ত্র-শস্ত্র মজুত করেছে।

710

এহেন পরিস্থিতিতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার নিকটবর্তী অঞ্চলে পরমাণু অস্ত্র বহনকারী মিসাইল মোতায়েন করেছে চিন। সম্প্রতি এই তথ্য জানা গিয়েছে এক স্যাটেলাইট চিত্র প্রকাশ্যে আসার পর। জানা গিয়েছে চিনের এই মিসাইলের নাম ডিএফ-২৬/১১, যা লাদাখ সীমান্তবর্তী চিনের শিনজিয়াং প্রান্তের কোরলা আর্মি বেসে মোতায়েন রয়েছে।

810

এই পরিস্থিতিতে চিনকে রুখতে লাদাখের দুর্গম পথগুলো সুগম করে তুলতে কাজে লেগেছে ভারতীয় সেনার বর্ডার রোড অর্গনাইজেশন। জানা গিয়েছে শায়ক নদীর হিম শীতল জলের উপর দিয়ে ভারত বিশেষ ব্রিজ তৈরি করছে যা সারা বছর ব্যবহারের যোগ হবে। এবং স্ট্র্যাটেজিক ভাবে ভারতের এই ব্রিজ নির্মাণ এক বড় চাল।

910

জানা গিয়েছে ১৭ হাজার ফিট উচ্চতায় তৈরি এই ব্রিজের সাহায্যে লেহ থেকে দৌলত বেগ ওল্ডি এয়ার স্ট্রিপে যাওয়া আরও সহজ হবে যাবে। বিগত কয়েক মাস ধরে চলছে লাদাখ সীমান্তে ভারত ও চিনের মধ্যকার উত্তপ্ত পরিস্থিতি। চিনের দাবি ছিল, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার এপারে ভারতের দিকে পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ বন্ধ রাখা হোক৷ যা মেনে নিতে নারাজ ভারত৷

1010

ভারতের দিকে গত বছর তৈরি করা ২৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ডাবরুক-শিয়ক-ডিবিও রোড তৈরি করা নিয়েই চিনের মূল আপত্তি৷ এই রাস্তাটি তৈরির ফলে সীমান্তে ভারতীয় সেনাবাহিনীর যাতায়াত এবং নজরদারি চালানোর ক্ষেত্রে অনেক বেশি সুবিধে হয়েছে৷ তবে পরপর সংঘর্ষ ও চিনের আপত্তি সত্ত্বেও ভারত এই রাস্তা তৈরির কাজ জারি রাখবে বলে জানা গিয়েছে।
 

Share this Photo Gallery
click me!
Recommended Photos