ভারত-চিনের মধ্যে কর্পস কমান্ডার-পর্যায়ের দশম দফার আলোচনা হবে শনিবার। তার ঠিক আগের দিনই, গালওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষের ফুটেজ বলে দাবি করে একটি ভিডিও প্রকাশ করল চিনা প্রচার যন্ত্র। বলাই বাহুল্য এই ভিডিওটি একেবারেই প্রোপাগান্ডামূলক। এর আগে শুক্রবার সকালে, চিনা সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে স্বীকার করা হয় যে তাদের পক্ষেও ৪ সেনা কর্তা ও সদস্য নিহত হয়েছে।
এতদিন ধরে তাদের পক্ষের হতাহতের বিষয়টি অস্বীকার করার পর শুক্রবার সকালে বেজিং সরকারিভাবে গালওয়ান সংঘর্ষে তাদের সেনা কর্তা-কর্মীদের মৃত্যুর বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়ায়, চিনের মূল ভূখণ্ডে এই নিয়ে গভীর ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আর তা ঠেকাতেই চিন সরকারের প্রচার সংস্থা এমন একটি ফুটেজ প্রকাশ করেছে, যেখানে স্পষ্টতই ভারতীয় সেনাদের আক্রমণকারী হিসাবে দেখানো হচ্ছে।
তবে, ওই রাতে ভারতীয় সৈন্যরা ঘটচনাস্থলে গিয়েছিলেন সেনা প্রত্যাহারের বিষয়টি চিন কতটা মানছে তা যাচাই করতেই। ঘটনার একদিন আগেই স্থানীয় কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে সম্মত হয়েছিল দুই পক্ষ।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, চিনারা এদিন যে প্রথমবারের মতো ৪ সৈন্যের মৃত্যুর কথা স্বীকার করে নিল, তা সম্ভবত এক প্রকার বাধ্য হয়েই। ওই সংঘর্ষে প্রাণ হারানো ২০ জন সেনা সদস্যকে ভারত যেভাবে সম্মান জানিয়েছে, তার পাশাপাশি তাদের হতাহতদের নিয়ে বেজিং-এর উদাসীনতায় চিনের মূল ভূখণ্ডে ক্ষোভ বাড়ছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে তারপরও চিনা কর্তৃপক্ষ অবাস্তব দাবি করেছে বলে মনে করছেন সামরিক বিশেষজ্ঞরা। অনেক কমিয়ে দেখানো হয়েছে হতাহতের সংখ্যা। কিছুদিন আগেই বেজিংয়ের থেকে এক রুশ সংবাদ সংস্থার করা প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল ওই সংঘর্ষে চিনের হতাহতের সংখ্যা ৪৫। দিনতিনেক আগে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর নর্দার্ন কমান্ডের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াইকে জোশীও বলেছেন, সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থল থেকে ৬০টি স্ট্রেচারে চিনা সেনাদের হতাহতদের বহন করে নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছিল।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে, প্যাংগং তসো এলাকায় দুই পক্ষের সেনা প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এখন, ২০ ফেব্রুয়ারি চিনের মলডো-তে, গোগড়া, হট স্প্রিংস এবং দেপসাং অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহারের বিষয়ে সিনিয়র কমান্ডার-স্তরের আলোচনা হবে।