কলকাতা মেট্রো ছত্রিশ ছুঁইছুঁই, ছবিতে ফিরে দেখা যাক সেই ইতিহাস
আজ বৃহস্পতিবার বহু প্রতীক্ষিত ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর শুভ উদ্বোধন। তবে আজ কলকাতা মেট্রোর উন্নতির পিছনে একটা বিশাল বড় ইতিহাস লুকিয়ে আছে। ১৯২১ সালে ব্রিটিশ আমলে এই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রথম প্রস্তাব ওঠে। তবে শেষ পর্যন্ত ১৯২৩ সালে তহবিলের অভাবে সেটি সম্ভব হয়নি। ভারতের স্বাধীনতার বহুবছর পর ১৯৮৪ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয় কলকাতা মেট্রোর যাত্রাপথ। বর্তমানে দিল্লি মেট্রো, হায়দরাবাদ মেট্রো, চেন্নাই মেট্রোর পরে ভারতের পঞ্চম দীর্ঘতম মেট্রো নেটওয়ার্ক হল কলকাতা মেট্রো। তাহলে ফিরে দেখে নেওয়া যাক কলকাতা মেট্রোর সবথেকে স্মরণীয় মুহূর্তগুলি।
Ritam Talukder | Published : Feb 13, 2020 6:11 AM IST / Updated: Feb 13 2020, 02:28 PM IST
কলকাতার প্রথম মেট্রোটি চালিয়েছিলেন তপন কুমার নাথ এবং সঞ্জয় সিল।
শহর কলকাতার জন্য় ইস্ট-ওয়েস্ট পাতাল রেলপথ প্রথম ১৯২১ সালে ব্রিটিশ রাজ আমলে হারলে ডাল্রিম্পল-হেই দ্বারা প্রস্তাবিত হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ১৯২৩ সালে তহবিলের অভাবে সেটি সম্ভব হয়নি।
১৯৫০ এর দশকের গোড়ার দিকে পশ্চিমবঙ্গের তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধান চন্দ্র রায় কলকাতার জন্য আন্ডারগ্রাউন্ড রেলপথ নির্মাণের ধারণাটি পুনরায় গ্রহণ করেছিলেন।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ বিধান চন্দ্র রায়-এর সেই আন্ডারগ্রাউন্ড রেলপথ নির্মাণের ধারণাটিকে বাস্তব করতে ফরাসী বিশেষজ্ঞদের একটি দল একটি সমীক্ষা করেছিল। তবে এ বিষয়ে সমাধান কিছুই আসেনি।
১৯৭২ সালের ২৯ ডিসেম্বর মেট্রো প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৪ সালে।
সেন্ট্রাল পার্কের মেট্রো স্টেশন থেকে দম দম বিমানবন্দরের দিকে সম্প্রসারণ হবে। এই সম্প্রসারণে, ভিআইপি রোডের হলদিরাম ক্রসিংয়ের একটি নতুন স্টেশনটি ২২ মিটার উচ্চতায় নির্মিত হয়েছে। যা দেশের সর্বোচ্চ অবস্থানে থাকতে চলেছে।
তবে হাজারও অসুবিধা সত্ত্বেও, ১৯৮৪ সালের ২৪ অক্টোবর মেট্রো পরিষেবা শুরু হয়েছিল। এসপ্ল্যানেড এবং ভবানীপুরের (বর্তমানে নেতাজি ভবনের) মধ্য়ে দিয়ে মোট পাঁচটি স্টেশন চালু ছিল।১৯৯৬ সালের ২৯ এপ্রিল যাত্রীবাহী পরিষেবা টালিগঞ্জ পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
ভারতীয় রেলওয়ের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত দেশের অন্য়তম কলকাতা মেট্রোর প্রতিদিন মোট ভ্রমণের সংখ্যা ২৮৪ এবং প্রতিদিন ৭০০০০০ এরও বেশি যাত্রী বহন করে কলকাতা মেট্রো।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো এর নির্মাণ কাজ ২০০৯ সালের মার্চ মাসে শুরু হয়েছিল। তবে জমি অধিগ্রহণ ও বস্তি স্থানান্তরের সমস্যার কারণে প্রকল্পটি বেশ কয়েকবার স্থগিত হয়েছিল।
বর্তমানে বিইএমএল র্যাকগুলি স্টেশনগুলির সুরক্ষা চেকের পাশাপাশি সংকেত এবং রুট ইন্টারলকিংয়ের পরীক্ষাও করেছে। ২০২০ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি অর্থাই আজ বৃহস্পতিবার, সল্টলেক সেক্টর-ভি থেকে সল্টলেক স্টেডিয়ামে কলকাতার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর শুভ উদ্ভোদন সম্পন্ন হবে।
সেক্টর ফাইভ স্টেশনে হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। প্রথম পর্যায়ে ইস্ট-ওয়েস্ট চলবে সেক্টর ফাইভ স্টেশন থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম স্টেশন পর্যন্ত। ৫.৮ কিলোমিটার এই পথে ট্রেন অতিক্রম করবে ৬ টি স্টেশন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখার জন্য় এলইডি পর্দারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের জায়গা ও স্টেশনকে নজর রাখা হবে। এর জন্য খোলা হচ্ছে বিশেষ কন্ট্রোল রুম।
যেখানে থাকবেন আরপিএফের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। উদ্বোধনের দিন স্টেশনে বম্ব ডিসপোজাল কর্মীদের সঙ্গে রাখা হবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরদের।জানা গিয়েছে, অনুষ্ঠানের জায়গাটির নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকবে আরপিএফের ওপর।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর মাধ্য়মে কলকাতাকে সঙ্গে হাওড়াকে সংযুক্ত করা হয়েছে । হুগলি নদীর তলদেশে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পে ৪৮৭৪.৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
আগামীকাল শুক্রবার থেকে বাণিজ্যিকভাবে এই ট্রেন চলবে সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। মেট্রো সূত্রে খবর, প্রাথমিকভাবে ঠিক করা হয়েছে ২০ মিনিট অন্তর ট্রেন চালানো হবে। পরে যাত্রী সংখ্যা বাড়লে ট্রেনের সময়সূচির পরিবর্তন হবে।