কাপড় সেলাই করে সংসার চালাতেন মা, বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সে রূপো জিতে স্বপ্নের উড়ান শৈলির

রিলে রেসে ব্রোঞ্জ ও রেস ওয়াকিংয়ে রূপো জিতে অনূর্ধ্ব ২০  বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে আগেই নজিরল সৃষ্টি করেছিলেন ভারতীয় অ্যাথলিটরা। এবার লং জাম্পে রূপো জিতে ইতিহাস তৈরি করলেন শৈলী সিং।
 

শৈলি ফাইনালে  ৬.৫৯ মিটার লাফিয়েছেন৷ মাত্র ১ সেন্টিমিটারের জন্য গোল্ড মেডেল হাতছাড়া হয়েছে শৈলির।  ৬.৬০ মিটার লাফিয়ে সোনা জিতেছেন সুইডেনের  মাজা আসকাগ।
 

শৈলি মহিলাদের লং জাম্পে ফাইনালে প্রথম ও দ্বিতীয় চেষ্টায় ৬.৩৪ মিটার লাফান কিন্তু তৃতীয় চেষ্টায় একধাপে ৬.৫৯ মিটার লাফান৷ যদিও তাঁর চতুর্থ ও পঞ্চম চেষ্টা ফাউল হয়েছে৷ তাতে তিনি ৬.৩৭ মিটার লাফিয়েছিলেন৷
 

টোকিও অলিম্পিক স্বর্ণপদক বিজয়ী নীরজ চোপড়া টুইটারে শেলিকে তার সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। মহাতারতার কাছ থেকে শুভেচ্ছা বার্তা পেয়ে খুশি ভারতীয় তকুণ অ্যাথলিট।
 

শৈলি সিং উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসি জেলার বাসিন্দা। তার মা ভানিতা সিং একজন 'সিঙ্গেল মাদার'।  তিনি অনেক কষ্টে শৈলিকে মানুষ করেছেন। শৈলীর তিন বোন আছে। তার মা ভানিতা সেলাইয়ের কাজ করেন। আর্থিক অভাবের মাঝে তিনি তার তিন মেয়েকে লালন -পালন করেছেন।
 

দারিদ্রতার কারণে শৈশবে পরার জন্য স্পাইক জুতো ছিল না শৈলির। শেলি লখনউয়ের স্পোর্টস হোস্টেলে নির্বাচিত হয়েছিল। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে নিজেকে তৈরি করেন শৈলী।
 

২০১৭ সালে যখন শৈলীর বয়স ১৪ বছর, তখন বিজয়ওয়াড়ায় জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিখ্যাত ক্রীড়াবিদ অঞ্জু ববি জর্জের স্বামী রবার্ট ববি জর্জ। শৈলী সেই প্রতিযোগিতায় পদক জিততে পারেনি, কিন্তু রবার্ট তার প্রতিভার স্বীকৃতি দিয়েছিল।

শৈলীকে বেঙ্গালুরুতে অঞ্জু ববি জর্জ অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণে ডেকেছিলেন রবার্ট। প্রাথমিকভাবে তার মা এ ব্যাপারে সম্মত ছিলেন না, কিন্তু রবার্ট তাকে বুঝিয়েছিলেন যে তার মেয়ে চ্যাম্পিয়ন ক্রীড়াবিদ হতে পারে।

তারপর থেকে শৈলি সিং ভারতের তারকা লং জাম্পার অঞ্জু ববি জর্জের অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। পাকাপাকিভাবে তার কোচ হন অঞ্জু ববি জর্জের স্বামী রবার্ট ববি জর্জ। 

অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্ব অ্যাথলেটিক্সে সাফ্লযের পর অঞ্জু ববি জর্জ বিশ্বাস করেন যে শৈলি আগামী দিনে তার রেকর্ড ভেঙে দেশের জন্য অলিম্পিক পদক জিতবে। শৈলিরও স্বপ্ন অলিম্পিক পোডিয়ামে দাঁড়ানো।