হ্যাকারদের হাত থেকে কীভাবে বাঁচাবেন ফোন, মেনে চলুন কয়েকটি সহজ টিপস
ফোন হ্যাকিংকে কেন্দ্র করে এখন উত্তাল গোটা দেশ। চারিদিকেই ফাঁদা রয়েছে হ্যাকিংয়ের ফাঁদ। আপনার অজান্তেই কখন যে হ্যাকারদের হাতে সব গোপন তথ্য চলে যাবে তা আপনি টেরও পাবেন না। যখন হয়তো আপনি ঘুমাচ্ছেন ঠিক তখনই আপনার সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চলে গেল হ্যাকারের হাতে। তাই এখন ব্যক্তিগত তথ্য সামলাতে ব্যস্ত সবাই। তাহলে দেখে নিন কীভাবে হ্যাকারদের হাত থেকে বাঁচাবেন আপনার ফোনকে।
Maitreyi Mukherjee | Published : Aug 1, 2021 4:15 AM IST / Updated: Aug 01 2021, 10:11 AM IST
হ্যাকারদের হাত থেকে ফোনকে বাঁচাতে অনেক ধরনের পথ রয়েছে। তবে সবথেকে বড় বিষয় হল সব সময় চোখ কান খোলা রাখা। একটু বুদ্ধির সঙ্গে হ্যাকারদের পাতা ফাঁদে পা না দিলেই আপনার ফোন থেকে ব্যক্তিগত তথ্য কখনওই হাতিয়ে নিতে পারবে না তারা। তার জন্য মেনে চলুন কয়েকটি টিপস।
কখনও আপনার ফোন ফেলে রেখে কোথাও যাবেন না। বাড়িতে থাকলে ঠিক আছে। কিন্তু, ধরুন অফিসে গিয়েছেন বা কারও বাড়িতে। কখনওই নিজের ফোন কাছছাড়া করবেন না। আর ফোন লক না করে একেবারেই রাখবেন না। তেমন হলে যতটা কঠিনভাবে লক করতে পারেন সেটাই করুন। এতে কিছুটা হলেও আপনার ফোন সুরক্ষিত থাকবে। সহজে কেউ আপনার ফোনের লক খুলতে পারবে না।
ফোন কেনার পর আমাদের একটা আলাদা ভালো লাগা কাজ করে। তখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা আমরা ফোন নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করি। কীভাবে নতুন নতুন পদ্ধতিতে ফোন লক করা যায় সেগুলি নিয়ে চিন্তাভাবনা করি। কিন্তু, ফোন একটু পুরোনো হয়ে যাওয়ার পর অনেকেই ফোন নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করা ছেড়ে দেন। ফলে সেই কবেকার দেওয়া পাসওয়ার্ডই দিনের পর দিন ধরে চলে যায়। এটা একেবারেই করবেন না। কাজ থেকে সময় বের করে মাঝে মধ্য়েই পাসওয়ার্ড চেঞ্জ করুন।
ব্লুটুথ সব সময় খোলা রাখবেন না। যখন আপনি ব্লুটুথ ব্যবহার করবেন তখনই একমাত্র তা অন করুন। তারপর কাজ শেষ হয়ে গেলে আবার বন্ধ করে দিন। আর অপরিচিত কারও সঙ্গে ব্লুটুথ একেবারেই ব্যবহার করবেন না। কারণ এর মাধ্যমেও অনেক সময় হ্যাকাররা আপনার ফোনের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে।
ব্যাংকিং এখন ফোনের মাধ্যমেই হয়ে যায়। তাই আমাদের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমরা ফোনের মধ্যেই রেখে থাকি। আর পাসওয়ার্ড যাতে ভুলে না যাই সেটাও অনেকেই ফোনের মধ্যেই লিখে রাখেন। ওই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি ফোনে না রাখার চেষ্টা করুন। তেমন হলে কোনও ডায়েরি ব্যবহার করতে পারেন। যেখানে সেগুলি লেখা থাকবে। আর ফোন যদি সেগুলি সেভ করতেই হয় তাহলে এমন ভাবে সেভ করুন যাতে আপনি ছাড়া সহজে তা কেউ উদ্ধার করতে না পারে।
এখন বিভিন্ন জায়গাতেই ওয়াইফাইয়ের সুবিধা পাওয়া যায়। রাস্তা ঘাটে ইচ্ছে করলেই মেলে ফ্রি ওয়াইফাই। আর অনেকেই মনের আনন্দে সেগুলি ব্যবহার করেন। তবে যতটা পারবেন সেগুলি এড়িয়ে চলুন। কারণ অনেক সময় এই ওয়াইফাইগুলির মধ্যে ফাঁদ পেতে বসে থাকে হ্যাকাররা। আর যখনই আপনি ওই ওয়াইফাই ব্যবহার করে কাজ করতে যাবেন তখনই আপনার ফোনে তারা ঢুকে পড়বে। তাই রাস্তায় নিজের ফোনের ডাটা ব্যবহার করুন। ওয়াইফাই একেবারেই ব্যবহার করবেন না।
প্রতিদিন ফোনের হিস্ট্রি, কুকিস সব ডিলিট করে দিন। এগুলি না ডিলিট করে কোনওভাবেই দিন শেষ করবেন না। কারণ ওইগুলির মধ্যে দিয়েও অনেক সময় হ্যাকার আপনার ফোনের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে। তাই এই বিষয়ে আগেভাগে সচেতন হন। ফোনের পাশাপাশি ল্যাপটপ বা ডেস্কটপের ক্ষেত্রেও একই কাজ করুন। কারণ আপনার তথ্য কীভাবে সুরক্ষিত থাকবে সেটা নির্ভর করছে আপনার উপরেই।
এছাড়া ফোনের গোপনীয়তা রক্ষা করার একটি সহজ উপায় বাতলে দিয়েছেন এক মার্কিন সাইবার বিশেষজ্ঞ আংগুস কিং। হ্যাকারদের হাত থেকে নিজের ফোনকে বাঁচানোর জন্য দুটি সহজ নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তাহলেই তথ্য চুরি হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই মিটবে বলে জানিয়েছেন।
নিয়ম মেনে মোবাইল সুইচ অফ ও সুইচ অন করুন। প্রতি সপ্তাহে একবার করে ফোন রিবুট করতে হবে। তাহলেই ধাক্কা খাবে হ্যাকারদের তথ্য চুরির প্রক্রিয়া। কেউ যদি মনে করে আপনার ফোন থেকে তথ্য চুরি করবে, তাহলে তার সেই প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করা যাবে ফোন অফ করার মাধ্যমে। ফোন অফ করে দিলে কিছুক্ষণের জন্য সব তথ্য তার নাগালের বাইরে চলে যাবে।
বেশ কিছুক্ষণ পর আবার ফোন অন করুন। এর ফলে হ্যাকারকে হ্যাকিং প্রক্রিয়া আবার প্রথম থেকে শুরু করতে হবে। যা অনেকটাই সময়সাপেক্ষ। আর সেই কারণেই আংগুস কিংয়ের পরামর্শ প্রতি সপ্তাহে নয় ফোন বন্ধ করে দিন প্রতিদিন। তেমন হলে দিনে দু'বার করেও ফোন সুইচ অফ করে দিতে পারেন। তাহলে সহজেই আটকানো যেতে পারে হ্যাকিং প্রক্রিয়া। তাহলে আর দেরি কেন হ্যাকারদের হাত থেকে ফোনকে বাঁচাতে আজ থেকেই মেনে চলুন এই টিপসগুলি।