করোনা-র মধ্যেই ধেয়ে আসছে আরেক বিপত্তি, ২৯ এপ্রিলই কি মানব সভ্যতার ইতি

২০২০ সালেই কি মানব সভ্যতার ইতি ঘটবে? ঘটনাক্রম যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে ক্রমে সেই ভয়ই জাঁকিয়ে বসছে। বিশ্বব্যপী করোনাভাইরাস-এর প্রাদুর্ভাবে এমনিতেই টালমাটাল মানব সভ্যতা। পাল্টে গিয়েছে চেনা পৃথিবীটা।  এতদিন কোনও দেশ অপর কোনও দেশের উপর হামলা চালিয়েছে, এবার সব দেশকে একসঙ্গে লড়তে হচ্ছে এক সাধারণ শত্রুর বিরুদ্ধে। এরমধ্যে আবার ২৯ এপ্রিল পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে আরও এক বিপদ। যে বিপদ ইতি ঘটিয়েছিল ডাইনোসরদের। তাহলে কি এবার মানব জাতির পালা?

 

amartya lahiri | Published : Mar 30, 2020 7:57 AM IST / Updated: Mar 30 2020, 04:41 PM IST

15
করোনা-র মধ্যেই ধেয়ে আসছে আরেক বিপত্তি, ২৯ এপ্রিলই কি মানব সভ্যতার ইতি
নাসা জানিয়েছে, ২৯ এপ্রিল পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে চলে যাবে একটি বিশালাকার অ্যাস্ট্রয়েড বা গ্রহাণু। কত বড়? বিজ্ঞানীরা বলছেন হিমালয় পর্বতের থেকেও বড় এই গ্রহাণু। দৈর্ঘ্য-প্রস্থে ১.৮ কিলোমিটার থেকে ৪.১ কিলোমিটার। নাসার বিজ্ঞানীরা অনেকদিন ধরেই এই গ্রহাণুর ওপর নজর রাখছেন। তাঁরা এর নাম দিয়েছেন ১৯৯৮ওআর (1998OR)। তাঁদের গণনা বলছে, ২৯ এপ্রিল তারিখে এই বিশাল গ্রহাণু পৃথিবীর ৬৩ লক্ষ মিলিয়ন কিলোমিটারের মধ্যে চলে আসবে, যা পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্বের প্রায় ১৬ গুণ। আর নাসার এই ঘোষণার পরই বিশ্বজুড়ে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মধ্যে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। এক ধরণের শঙ্কা তৈরি হয়েছে বলা যায়।
25
গ্রহানুটি যদি পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্বের ১৬ গুণ দূর দিয়েই চলে যায়, তাহলে এত ভয় কিসের? সেটা বুঝতে গেলে ৬.৬ কোটি বছর পিছিয়ে যেতে হবে। ওই সময়ই লক্ষ লক্ষ বছর ধরে রাজত্ব করার পর আচমকা উধাও হয়ে গিয়েছিল ডাইনোসররা। গবেষণায় বেরিয়েছে, ওই সময় এখন যেখানে মেক্সিকো, তার উত্তর দিকে একটি বিশালাকায় গ্রহাণু এসে পড়েছিল। তাতে প্রাথমিক যে শক ওয়েভ তৈরি হয়েছিল, তাতেই বিশাল সংখ্য়ক ডাইনোসরের মৃত্যু হয়েছিল। আর সেই সংঘর্ষের অভিঘাতে যে ধুলোক ঝড় উঠেছিল, তাতে ঢেকে গিয়েছিল গোটা পৃথিবী। যার ফলে পরের দশ বছর প্রায় পৃথিবীতে সূর্যালোক সেভাবে পৌঁছায়নি। যার ফলস্বরূপ পৃথিবীতে নেমেছিল তুষাড়যুগ। ঠান্ডা রক্তের ডাইনোসররা বাঁচেনি। আরও অনেক প্রাণীই অবলুপ্ত হয়েছিল।
35
তারপর থেকেই গ্রহাণুদের চলাফেরার উপর নজর রাখেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। কোন গ্রহাণুগুলি বিপদ ডেকে আনতে পারে, সেগুলিকে চিহ্নিত করেছে নাসা। এদের বলা হয় 'পোটেনশিয়ালি হ্যাজার্ডাস', অর্থাৎ 'সম্ভাব্য বিপজ্জনক'। তাদের মধ্যেও আবার শ্রেণীবিভাগ আছে। মার্কিন মহাকাশ সংস্থা মতে, গ্রহাণু এবং ধূমকেতুগুলির আকার যদি ১৫০ মিটারের বেশি হয়, আর তারা পৃথিবীর ৭৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে দিয়ে যায় তাহলে তাদের 'সম্ভাব্য বিপজ্জনক'-এর ক্যাটেগরি ৪-এ ফেলা হয়। অর্থাৎ অতি বিপজ্জনক।
45
এবার ভাবুন, কোথা ১৫০ মিটার, আর কোথায় ৪.১ কিলোমিটার। কোথায় ৭৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরত্ব, আর কোথায় ৬৩ লক্ষ কিলোমিটারের দূরত্ব। বিজ্ঞানীরা বলছেন ৬৩ লক্ষ কিলোমিটার, শুনতে অনেকটা মনে হলেও মহাজাগতিক দূরত্বের হিসাবে তা ৬৩ সেন্টিমিটারের মতো। এখনও অবধি সে যে পথে আছে, তাতে পৃথিবীর সঙ্গে সংঘর্ষ হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে, কিন্তু নিশ্চিন্ত হওয়া যাচ্ছে না। কারণ, কোনওভাবে গ্রহাণুটির পথ একচুল এদিক-ওদিক হয়ে যায় তাহলেই পৃথিবীর বুকে সজোরে আছড়ে পড়তে পারে সে।
55
তাই এখন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা ২৪ ঘন্টাই এই গ্রহাণুর চলনের উপর নজর রাখছেন। ইতালির ভার্চুয়াল টেলিস্কোপ প্রকল্পের অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট জিয়ানলুকা মাসি গত ২৪ মার্চ গ্রহাণুটির একটি ছবি তুলেছেন। তিরচিহ্ন দিয়ে তিনি গ্রহাণুটিকে চিহ্নিত করে দিয়েছেন বোঝার সুবিধার জন্য। সেই সময় পৃথিবী থেকে প্রায় ২৫ মিলিয়ন কিলোমিটার অর্থাৎ ২৫০ লক্ষ কিলোমিটার দূরে ছিল গ্রহাণুটি।
Share this Photo Gallery
click me!
Recommended Photos