সৌরজগতের বাইরে অপেক্ষায় ৫০০০ বিশ্ব, কয়েকটি হুবহু পৃথিবী - মহাবিশ্বে মানুষ কি একা

আকাশের দিকে তাকালেই মাথায় আসে সেই প্রশ্ন, এই বিশাল মহাবিশ্বে আমরা কি একা? বহু প্রাচীন সময়ে মহাকাশ চর্চা শুরু করেছিল মানুষ। তারপর, সূর্যের চারপাশে ঘোরা গ্রহগুলি আবিষ্কার হয়েছে। প্রতিদিন আরও কত নতুন নতুন তথ্য জানা চলছে, সেইসব মহাজাগতিক বস্তুর সম্পর্কে। এবার, সৌরজগতের সেই গণ্ডি ছাড়িয়ে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল মার্কিন মহাকাশ চর্চা কেন্দ্র নাসা (NASA)। তারা, জানিয়েছে, দূর মহাকাশে অন্তত ৫,০০০ টিরও বেশি পৃথিবী রয়েছে আমাদের অপেক্ষায়।
 

Web Desk - ANB | Published : Mar 22, 2022 4:24 PM IST

18
সৌরজগতের বাইরে অপেক্ষায় ৫০০০ বিশ্ব, কয়েকটি হুবহু পৃথিবী - মহাবিশ্বে  মানুষ কি একা

সম্প্রতি নাসা, আরও ৬৫ টি নতুন গ্রহ আবিষ্কার করেছে। ফলে, আমাদের সৌরজগতের বাইরের অন্যান্য নক্ষত্রের চারপাশে আবর্তিত হওয়া ৫০০০ টিরও বেশি পৃথিবী-সম গ্রহের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েছে। এই গ্রহগুলির প্রত্যেকটির বুকে জল, জীবাণু ও গ্যাসের উপস্থিতি, এমনকি ভিনগ্রহী প্রাণীও থাকতে পারে। এগুলিকে বলা হয় এক্সোপ্ল্যানেট (Exoplanets)।
 

28

নাসা জানিয়েছে, একাধিক সনাক্তকরণ পদ্ধতি বা বিশ্লেষণাত্মক কৌশল ব্যবহার করে, তারপরই এই গ্রহগুলির বিষয়ে নিশ্চিত সিদ্ধান্তে আসা হয়েছে। প্রত্যেকটি এক্সোপ্ল্যানেটই একেকটি নতুন জগৎ, একেবারে নতুন ধরণের গ্রহ। কয়েকটি আকারে ধরণে, একেবারে আমাদের পৃথিবীর মতো হলেও, কয়েকটি অনেকটাই অন্যরকম।
 

38

এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত ৫০০০টি এক্সোপ্ল্যানেটের মধ্যে রয়েছে পৃথিবীর মতো ছোট আকারের পাথুরে গ্রহ। রয়েছে, বৃহস্পতির থেকেও আকারে বহুগুণে বড় গ্যাসে ভরা গ্রহ। আবার রয়েছে, 'সুপার-আর্থ' অর্থাৎ, আমাদের গ্রহের থেকে বড় আকারের পাথুরে জগৎ। রয়েছে 'মিনি-নেপচুন'ও। অর্থাৎ, যেগুলি প্রকৃতিতে আমাদের সৌরজগতের নেপচুনের মতো, তবে আকারে ছোট।
 

48

গত তিন দশক ধরে আবিষ্কৃত এই গ্রহগুলি মধ্যে কয়েকটি রয়েছে, যেগুলি একসঙ্গে জোড়া নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে। আবার, এমন গ্রহও রয়েছে, যেগুলির নক্ষত্র ইতিমধ্যেই মৃত। তাও, তার ধ্বংসাবশেষের চারপাশে প্রদক্ষিণ করে চলেছে সেই একগুঁয়ে গ্রহ। 
 

58

তবে, ৫০০০টি গ্রহ সবে মাত্র শুরু। কারণ, এগুলি প্রত্যেকটিই মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি বা আকাশগঙ্গা ছায়াপথের অংশ। সম্প্রতি জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপে তোলা একটি চিত্রেই হাজার হাজার ছায়াপথ ধরা পড়েছে। কাজেই, শত শত কোটি গ্রহ এখনও অনাবিষ্কৃত থেকে গিয়েছে। তবে, নাসার এক্সোপ্ল্যানেট আর্কাইভের প্রধান, জেসি ক্রিশ্চিয়ানসেন বলেছেন, ৫০০০ কোনও সংখ্য়া নয়। প্রত্যেকটি গ্রহ নিয়েই আমরা উত্তেজিত। কারণ সেগুলি সম্পর্কে আমরা প্রায় কিছুই জানি না।
 

68

১৯৯৫ সালে প্রথম সৌরজগতের বাইরের কোনও গ্রহ আবিষ্কৃত হয়েছিল। সেটি ছিল বৃহস্পতির মতো আকারে বড় এবং উত্তপ্ত একটি গ্রহ। এই 'গ্যাস দৈত্য' কক্ষপথ তার নক্ষত্রের খুবই কাছে ছিল। মাত্র চার দিনে সেখানে বছর হয়। আগে, গ্রহের আবিষ্কার একটি দীর্ঘ, শ্রমসাধ্য প্রক্রিয়া। পৃথিবীতে লাগানো এবং মহাকাশে রাখা টেলিস্কোপগুলি থেকে পাওয়া তথ্য বছরের পর বছর বিশ্লেষণ করে, তবে এই গ্রহগুলির সন্ধান পাওয়া যেত। 
 

78

তবে, পৃথিবীর মতো ছোট আকারের পাথুরে গ্রহ খুঁজে বের করার জন্য এক্সোপ্ল্যানেট খোঁজার প্রযুক্তিতে বদলের দরকার ছিল। জ্যোতির্বিজ্ঞানী উইলিয়াম বোরুকি প্রথম একটি টেলিস্কোপের সঙ্গে অত্যন্ত সংবেদনশীল আলো আবিষ্কারক সংযুক্ত করেছিলেন। এই টেলিস্কোপ কোনও একটি নক্ষত্রের দিকে ধরা হয়। তাকে আবর্তন করে গ্রহগুলি, টেলিস্কোপের সামনে আসলে, সেই আলোর পথ আটকা পড়ে। সেই আলো না আসা দেখেই গ্রহ সনাক্ত করা হয়। একে 'ট্রানজিট' পদ্ধতি বলে। 
 

88

এখনও পর্যন্ত অন্য কোনও বুদ্ধিমান প্রাণী, অন্য কোনও গ্রহ থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। সেই দিক থেকে আমরা সত্যিই একা। তবে, ১৯৯৫ সালে প্রথম গ্রহ এক্সোপ্ল্যানেট আবিষ্কারের পর থেকে গত তিন দশকে ৫০০০ গ্রহ আবিষ্কার হয়েছে, যার অনেকগুলিই পৃথিবীর মতো। কাজেই, বিশ্বব্যাপী জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, এই পৃথিবী-সম গ্রহগুলি থেকেই অদূর ভবিষ্যতে আমরা আমাদের প্রতিবেশীদের খুঁজে পাব। আর, মহাবিশ্বে গ্রহের সংখ্য়ার ব্যপ্তি, সেই সম্ভাবনা আরও উজ্জ্বল করে দেয়। 
 

Read more Photos on
Share this Photo Gallery
click me!
Recommended Photos