শিশির অধিকারী থেকে শুভেন্দু-দিব্যেন্দু, জেনে নিন গোটা 'অধিকারী পরিবারের' সম্পত্তির পরিমাণ

নন্দীগ্রামে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার জন্য ইতিমধ্যে নিজের মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেব শুভেন্দু অধিকারী। মনোয়নন পত্রের হলফনামায় নিজের স্থাবর-অস্থাবর সমস্ত সম্পত্তির হিসেব দিয়েছেন বিজেপি নেতা।

হলফনামায় নিজের সম্পত্তির পরিমাণ ৮০ লক্ষ টাকা বলে উল্লেখ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে যে হলফনামা দিয়েছিলেন শুভেন্দু তার থেকে অনেকটাই বেড়েছে সম্পত্তির পরিমাণ
 

নিজস্ব কোনো গাড়ি নেই বলে জানিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। ২০২১ সালের হলফনামা অনুযায়ী শুভেন্দু অধিকারীর হাতে নগদ রয়েছে মাত্র ৫০০০ টাকা।
 

শুভেন্দু অধিকারী মোট ১৫টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তাঁর স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ২১ লক্ষ ৩৫ হাজার ১০২ টাকা এবং অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৫৯ লক্ষ ৩১ হাজার ৬৪৭.৩২ টাকা। নন্দীগ্রামের গাংরা সহ কিছু এলাকায় তার নামে কিছু জমি রয়েছে।
 

শুভেন্দু অধিকারী ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য মনোনয়ন পত্রের সাথে হলফনামা জমা দেন তখন তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল মোট ৬৪ লক্ষ ৮০ হাজার ৭৬৭ টাকা। 
 

২০১৬ সালে সাসংদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রাম থেকে লড়াই করেন শুভেন্দু অধিকারী। ভোটে জিতে রাজ্যের মন্ত্রীও হয়েছিলেন। ২০১৬ সালের হলফনামা অনুযায়ী শুভেন্দ্প সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৬২ লক্ষ ৬০ হাজার ৭৪২ টাকা। 
 

পূর্ব মেদিনীপুরকে অধিকারী পরিবারের গড় বলা হয়। ২০২১ সালের নির্বাচনে মেজ ছেলে শুভেন্দুর পক্ষ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রবীণ সাংসদ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব শিশির অধিকারী। রবিবার যোগ দিচ্ছেন বিজেপিতে।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী খতিয়ান অনুযায়ী শিশির অধিকারীর সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি ৩৯ লক্ষ ৭৯ হাজার ৬৫০ টাকা মতো। যা ২০১৪ সালের নির্বাচন অনুযায়ী ছিল ১ কোটি ৯৪ লক্ষ ৯৮ হাজার ৩৮১ টাকা।
 

তিন পুত্র শুভেন্দু, দিবেন্দ্যু ও সৌমেন অধিকারি বর্তমানে মেদিনীপুরের নতুন রাজনৈতিক চালিকাশক্তি। দিবেন্দ্যু অধিকারী প্রথম ২০১৬ সালে তমলুক কেন্দ্র থেকে বাইপোলে জয়লাভ করে সাংসদ হন। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে যে খতিয়ান দেওয়া তাতে দেখা তাঁর সম্পত্তি ৩ কোটি ৭৬ লক্ষ ৮৭ হাজার ৮৬৭ টাকা। 

এছাড়া দিব্যেন্দু অধিকারীর দায়বদ্ধতা ৮৩ লক্ষ ৯৭ হাজার ৫০১ টাকা। ২০১৬ সালের উপনির্বাচনে দেওয়া খতিয়ান অনুযায়ী সেসময় দিব্যেন্দু অধিকারীর সম্পত্তি ছিল ১ কোটি ৮২ লক্ষ ২৪ হাজার ৩৭৮ টাকা। দায়বদ্ধতা ছিল ৮ লক্ষ ৫ হাজার ৮৬৯ টাকা।
 

অধিকারী পরিবারের ছোট ছেলে সৌম্যেন্দু অধিকারী তিনিও কাঁথি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। পরে তাকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। তারও সম্পত্তি অনেক গুণ বেড়েছে এক ভাই সৌমেন অধিকারি কাঁথি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান।

শুভেন্দু ও সৌমেন্দু বিজেপিতে যোগ দিলেও, অধিকারী পরিবারের বাকি দুটি পদ্ম এখনও ফোটেনি। তবে রাজনৈতিক গতি প্রকৃতি যেদিকে এগোচ্ছে তাতে খুব শীঘ্রই শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারীর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
 

অপরদিকে, সরকারি নথি অনুযায়ী অধিকারী পরিবারের যে সম্পত্তির হিসেব পাওয়া যাচ্ছে, তা মানতে নারাজ শাসক দল। অধিকারী পরিবারের সম্পত্তি আকাশছোয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে।
 

অপরদিকে,  পালটা মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পত্তির পরিমাণ নিয়ে সরব হয়েছে শুভেন্দু সহ বিজেপি নেতৃত্ব।  কয়লা, গরু পাচার কাণ্ডেও যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পদ্ম শিবির।
 

ফলে ভোটের আগে নন্দীগ্রামের লড়াই জমে উঠেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহত হওয়া তাতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী ভূমিপুত্র শুভেন্দু অধিকারীও। শেষ হাসি কে হাসবে তার জন্য অপেক্ষা ২ মে-র।