Mumbai Rapper: রিকশাচালকের ১৫ বছরের মেয়ের 'ব়্যাপিং'এ মুগ্ধ নেটদুনিয়া, দেখুন

Published : Dec 14, 2021, 12:40 AM IST
Mumbai Rapper: রিকশাচালকের ১৫ বছরের মেয়ের 'ব়্যাপিং'এ মুগ্ধ নেটদুনিয়া, দেখুন

সংক্ষিপ্ত

মুম্বইয়ের (Mumbai) গোভান্দি (Govandi) এলাকার এক রিকশাচালকের ১৫ বছরের মেয়ের ব়্যাপিং ভিডিও ভাইরাল (Viral Video)। কীভাবে ইচ্ছাশক্তির জোরে সব বাধা কাটালো সে, দেখুন৷

ব়্যাপ সঙ্গীত (Rapping) মূলত নিচু তলার মানুষের গান। শিকড় গাঁথা সেই ক্রীতদাস প্রথার সময়ে। কালো মানুষদের গান। তাদের পাওয়া-না পাওয়া তুলে ধরতেন এই বিশেষ শৈলির গানের মধ্য দিয়ে। আর এবার এই ব়্যাপ সঙ্গীতে ভর দিয়েই, আলোর দিকে উত্তরণের স্বপ্ন দেখছে, মুম্বইয়ের (Mumbai) গোভান্দি (Govandi) এলাকার এক রিকশাচালকের মেয়ে। বর্তমানে তাঁর ব়্যাপের ভিডিওগুলি তুমুল ভাইরাল (Viral Video) হচ্ছে, আর বিনোদন জগতে নিজের পরিচয় তৈরি করার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বছর ১৫-র এই কিশোরীও৷

তার নাম সানিয়া মিস্ত্রি (Sania Mistri), একাদশ শ্রেনীতে পড়াশোনা করে। তার বাবা একজন রিকশাচালক এবং মা বিভিন্ন বাড়িতে গৃহ পরিচারিকার কাজ করে সংসার চালান। সানিয়া র‌্যাপ করা শুরু করেছিল প্রায় তিন বছর আগে। তার বন্ধু তথা ঘনিষ্ঠ সহযোগী নাসরিন আনসারি জানিয়েছে, সানিয়া বরাবরই খুব সৃজনশীল ছিল। ছন্দ মিলিয়ে মিলিয়ে কথা বলতে পারত। কয়েক বছর আগে, বন্ধুরা তাকে ব়্যাপ করার জন্য চ্যালেঞ্জ করেছিল। আর সেটা সে গ্রহণ করেছিল। সেই যে শুরু করেছিল, তারপর আর থামেনি সানিয়া। ধীরে ধীরে শিল্পের এই কঠিনতর ক্ষেত্রে একজন পারদর্শী হয়ে উঠেছে সে। অথচ, পথে বাধা কম ছিল না।

সানিয়ার পরিবারে যে স্বচ্ছলতার অভাব ছিল, তা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। রিক্সাচালক বাবা ও গৃহ পরিচারিকা মায়ের কষ্টের রোজগারে দুবেলা দুমুঠো ভাতের সঙ্গে সঙ্গে, সানিয়ার স্কুলের পড়াশোনা চলে যেত। কিন্তু, তরুণ র‌্যাপারের নিজের কোনও ফোন ছিল না (এখনও নেই)। এই অবস্থায় সানিয়া তাঁর মায়ের ফোনে একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট (অ্যাকাউন্ট নাম 'saniya_mq') খুলেছিলেন। বন্ধুদের ফোনে তাঁর র‌্যাপিং-এর ভিডিও তৈরি করে, তিনি নিয়মিত সেই অ্যাকাউন্টে পোস্ট করতে থাকেন। এখন সেই ভিডিওগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।

তবে দীর্ঘদিন পর্যন্ত ব়্যাপ বিষয়টা কী, খায় না মাথায় দেয় - কিছুই বুঝতেন না সানিয়ার বাবা-মা এবং তার চারপাশের মানুষরা। তাদের কোনও ধারণাই ছিল না সঙ্গীতের এই ফর্ম সম্পর্কে। সানিয়াকে তাই প্রথমে তাঁর বাবা-মা ও অন্যান্য পরিচিতদের ব়্যাপ সঙ্গীত সম্পর্কে বিস্তারিত বলতে হয়েছিল। তাদের বোঝাতে হয়েছিল, র‍্যাপ করাটা কোনও খারাপ কাজ নয়। কীভাবে তা করা হয়, তাও আত্মীয় পরিজনদের ব্যাখ্যা করেছিলেন সানিয়া। তাঁর বাবা-মা কতটা তা ধরতে পেরেছিলেন জানা নেই, তবে, তাঁরা বুঝেছিলেন, ব়্যাপ জিনিসটা তাঁদের মেয়ে ঠিক কতটা পছন্দ করে। তাই আর বাধা দেননি। পরে, তাঁর মায়ের ব়্যাপিং বিষয়টা বেশ মনেও ধরে। 

তবে, সেই বাধা কাটলেও অন্য একটা মানসিক বাধা ছিল সানিয়ার। বাড়িতে তো ব়্যাপ করছেন, ঠিক আছে। সেই নিরাপদ জায়গা থেকে বেরিয়ে বাইরের পৃথিবীর সামনে নিজেকে প্রকাশ করলে, তারা তাকে কীভাবে নেবে, তাই নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল সানিয়ার মনে। নাসরিন জানিয়েছেন, সানিয়া যখন প্রথম মঞ্চে উঠেছিল, আশেপাশের ভিড় দেখে প্রথমে একটু ভয় পেয়ে গিয়েছিল। উপস্থিত কিছু লোকজন কটু মন্তব্যও করেছিল। কিন্তু, একবার ব়্যাপিং শুরু করে দেওয়ার পর, সকলের মন জিতে নিয়েছিল সে। ধীরে ধীরে আত্মবিশ্বাসের চরমে উঠেছিল সে। সানিয়ার মাকেও তার সেই পারফরম্যান্স দেখতে নিয়ে গিয়েছিলেন নাসরিন। তিনি মঞ্চের অনেক দূর থেকে মেয়ের পারফরম্যান্স দেখেছিলেন। নাসরিন জানিয়েছেন, তিনি খুবই খুশি হয়েছিলেন।

ধীরে ধীরে সব বাধাকে জয় করে এগিয়ে চলেছেন ১৫ বছরের কিশোরীটি। এখন, তাঁর সঙ্গে রয়েছে, তাঁর বাবা-মা এবং শিক্ষকদের সমর্থন। তাই, প্রত্যয়ের সঙ্গে সানিয়া মিস্ত্রি জানিয়েছে সে সফল ব়্যাপার হওয়ার স্বপ্ন দেখা ছাড়বে না। সানিয়া বলেছে, 'হ্যাঁ, আমার স্বপ্নটা অনেক বড় এবং আমি আশাবাদী যে ঈশ্বরের কৃপায় তা সত্যি হবে। দারিদ্র্যপীড়িত পরিস্থিতি থেকে সফল হওয়ার জন্য তার এই নিখুঁত দৃঢ় সংকল্পই তাকে আলাদা করে তুলেছে। এখন সে নিজে শুধু স্বপ্ন দেখছে না, তার ব়্যাপের মাধ্যমে, তার চারপাশে দেখা কঠিন জীবনযাপনে বাধ্য হওয়া মানুষগুলোর সমস্যা, সমাজের সামনে তুলে ধরার প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছে সে।
 

PREV
click me!

Recommended Stories

নতুন শ্রম আইনে আপনার বেতনের পরিমাণ খুব বেশি কমবে না,কারণ জানাল মন্ত্রক
যাত্রীদের সমস্যার 'ক্ষতে' ১০০০০ টাকার 'মলম'! IndiGo ভাউচার ঘোষণা করল