Guru Gobind Singh Jayanti 2022: ঐতিহ্য সংরক্ষণে ছিলেন বদ্ধপরিকর, গুরু নানকের গুরু পর্বের ইতি টানেন তিনি

গুরু নানকের গুরু পর্বের ইতি টানেন গুরু গোবিন্দ সিং। চালাতে জানতেন বন্দুক, তরোয়াল। জানতেন একাধিক ভাষা। ঐতিহ্য সংরক্ষণে ছিলেন বদ্ধপরিকর। গুরুর আপ্তবাক্যগুলি নিয়ে সুসংগঠিত করেন "গ্রন্থ সাহিব"। আর পরবর্তী "গুরু" হিসাবে তিনি  "গ্রন্থ সাহিব"কে নিযুক্ত করেন ও গুরু পর্বের ইতি টানেন। 

Web Desk - ANB | Published : Jan 9, 2022 6:45 AM IST

গুরু নানকের গুরু পর্বের ইতি টানেন গুরু গোবিন্দ সিং। চালাতে জানতেন বন্দুক, তরোয়াল। জানতেন একাধিক ভাষা। ঐতিহ্য সংরক্ষণে ছিলেন বদ্ধপরিকর। গুরুর আপ্তবাক্যগুলি নিয়ে সুসংগঠিত করেন "গ্রন্থ সাহিব"। আর পরবর্তী "গুরু" হিসাবে তিনি  "গ্রন্থ সাহিব"কে নিযুক্ত করেন ও গুরু পর্বের ইতি টানেন। লিখছেন অনিরুদ্ধ সরকার।
গুরু নানক বরাবরই গুরুর আবশ্যকতা নিয়ে কথা বলতেন। বলতেন গোঁড়া ধর্মীয় মনোভাবকে ত্যাগ করতে। নানক পরবর্তী পঞ্চম শিখগুরু অর্জুন ছিলেন শিখ সমাজে ব্যাপক জনপ্রিয়। বৃহত্তর শিখ সমাজ প্রতিষ্ঠায় তাঁর বিশেষ ভূমিকা ছিল। পঞ্চম এই শিখগুরু হরমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। মোগল সম্রাট আকবর অর্জুনকে পছন্দ করলেও জাহাঙ্গীরের কোপদৃষ্টি পড়ে তাঁর ওপর। জাহাঙ্গীর  প্রথমদিকে তেমন কিছু না করলেও পরবর্তীকালে বিদ্রোহী শাহজাদা খসরুকে সমর্থন দেওয়ার কারণে জাহাঙ্গীর  মৃত্যুদণ্ড দেন অর্জুনকে। 
 
 
অর্জুনের রক্ত শিখ সম্প্রদায়কে একত্রিত করে ও পঞ্জাবে জাতীয়তাবাদের বীজ বপন করে।  আধ্যাত্মিকতার সাথে যুক্ত হয় অধিকার রক্ষার লড়াই। মোঘল প্রশাসকদের স্বেচ্ছাচার থেকে নিপীড়িত হিন্দু ও মুসলমানদের রক্ষা করার  জন্য হাতে এরপর হাতে তরবারী তুলে নেন নবম শিখ গুরু তেগ বাহাদুর।  পরিণামে ১৬৭৫ সালে তেগ বাহাদুরের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন সম্রাট ঔরঙ্গজেব। 
 
 
পিতার মৃত্যুর পর তার ইচ্ছা অনুসারেই মাত্র নয় বছর বয়সে গুরুর আসনে বসেন গোবিন্দ সিং। বয়সে কম হলেও তার নেওয়া পদক্ষেপগুলিই শিখ বিশ্বাসকে মহিরুহে পরিণত করে। তিনি ছিলেন মেধাবী ছাত্র।একাধারে যেমন শেখেন সংস্কৃত, হিন্দি, পাঞ্জাবি তেমনি শেখেন ফারসি, ইংরেজির মত বিদেশি ভাষা। অন্যদিকে রপ্ত করেন ঘোড়ায় চড়া। এর পাশাপাশি তিনি বন্দুক চালানোও শেখেন। 
 
 
দীর্ঘদিন ধরে নানকের বোধিপ্রাপ্তি থেকে তাঁর পিতার মৃত্যুদণ্ড অবধি শিখদের সংগ্রাম নিয়ে রচিত ইতিহাসকে তিনি একত্রিত করেন। দাদু হরগোবিন্দের মতো বিপ্লবী কন্ঠে জোর গলায় তিনি আওয়াজ তুললেন, "যো বোলে সো নিহাল..." আর শিখদের রক্ষা করতে হাতে তুলে নিলেন তলোয়ার। পরিবর্তন এল শিখ সম্প্রদায়ের সাধারণ বৈশিষ্ট্যেও। শাসকের নিপীড়ন থেকে অসহায় এবং সাধারণকে রক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠা করলেন এক সেনা বাহিনী । যা "খালসা বাহিনী" নামে পরিচিত।  
 
 
ইংরেজ ও বিধর্মীদের বিরুদ্ধে চলতে লাগল সশস্ত্র সংগ্রাম। গুরু গোবিং সিং ঐতিহ্য সংরক্ষণে ছিলেন বদ্ধপরিকর। গুরুর আপ্তবাক্যগুলি নিয়ে সুসংগঠিত করেন "গ্রন্থ সাহিব"। এরপরই গুরু গোবিন্দ সিং নেন এক ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। তিনি সর্বসমক্ষে ঘোষণা করেন, " আর মানুষ গুরুর প্রয়োজন নেই। গুরু পর্বের এখানেই সমাপ্তি টানা হোক। এর পরবর্তী 'গুরু' হিসাবে আমি  'গ্রন্থ সাহিব'কে নিযুক্ত করলাম।" আজও শিখদের গুরু তাই "গ্রন্থসাহিব"। অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরে গেলে দেখা মেলে সেই "গ্রন্থসাহিবের"।

 

Share this article
click me!