তামাক সেবন বন্ধ করুন, ক্যান্সার-সহ হারাতে হতে পারে দৃষ্টিশক্তিও

  • সিগারেটে নিকোটিন-সহ ৫৬টি বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে
  • পরোক্ষ ধূমপানের প্রভাবে বিশ্ব জুড়ে প্রতি বছর প্রায় ৬,০০,০০০ মানুষ মারা যায়
  • পরোক্ষ ধূমপানের কারণে শিশুরা নিউমোনিয়া ও অ্যাজমায় আক্রান্ত হয়ে পড়ছে
  • ধূমপানের ফলে ক্যান্সারের প্রবণতা ছাড়াও হারাতে পারেন দৃষ্টিশক্তি

deblina dey | Published : May 31, 2020 6:58 AM IST

ধূমপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর, একথা আমারা সকলে জানলেও মেনে চলি না। গবেষণায় দেখা গিয়েছে সিগারেটে নিকোটিন-সহ ৫৬টি বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ রয়েছে। ২০১০ এ একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে বিশ্বের ১৯২টি দেশে গবেষনা করা হয়েছিল। সেই রিসার্চ অনুযায়ী, নিজে ধূমপান না করলেও পরোক্ষ ধূমপানের প্রভাবে বিশ্ব জুড়ে প্রতি বছর প্রায় ৬,০০,০০০ মানুষ মারা যায়। এর মধ্যে ১,৬৫,০০০ সংখ্যক শিশু।

পরোক্ষ ধূমপানের কারণে শিশুরা নিউমোনিয়া ও অ্যাজমায় আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। ফলে ক্রমশ বাড়ছে মৃত্যুর ঝুঁকি। এছাড়া পরোক্ষ ধূমপানের কারণে হৃদরোগ, ফুসফুসের ক্যান্সার সহ শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত রোগও দেখা দেয়। গবেষণায় এও বেরিয়ে এসেছে যে, পরোক্ষ ধূমপান পুরুষের তুলনায় নারীর উপর বেশি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৮১,০০০ জন নারীর মৃত্যু হয়। 

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস প্রতি বছর ৩১ মে তারিখে বিশ্বজুড়ে পালন করা হয়। বিশ্বজুড়ে ২৪ ঘণ্টা সময়সীমা ধরে তামাক সেবনের সমস্ত প্রক্রিয়া থেকে বিরত থাকাতে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে এই দিনটি প্রচলিত হয়েছে। এছাড়াও এই দিনটির মূল উদ্দেশ্য তামাক ব্যবহারের ব্যাপক প্রাদুর্ভাব এবং স্বাস্থ্যের উপর এর নেতিবাচক প্রভাবের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করানো। বর্তমানে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ৬০ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর কারণ হিসেবে বিবেচিত। 

ধূমপান বা তামাক সেবনের প্রভাবের কারণে প্রায় ৬,০০,০০০ অ-ধূমপায়ী ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সদস্য রাষ্ট্রসমূহ ১৯৮৭ সালে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস চালু করে। বিগত বিশ বছরে, দিবসটি সরকার, জনস্বাস্থ্য সংগঠন, ধূমপায়ী, উৎপাদনকারী, এবং তামাক শিল্পের কাছ থেকে উদ্যম এবং প্রতিরোধ উভয়ের মাধ্যমে বিশ্ব জুড়ে পালিত হয়ে আসছে।

ধূমপান যে শুধু ক্যান্সারের প্রবণতা বৃদ্ধি করে তা নয় ধূমপান কেড়ে নিতে পারে আপনার দৃষ্টিশক্তিও। শুনতে অবাক লাগলেও বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি একদমই বাস্তব। ধূমপানের ফলে  শুধু রেটিনাই ক্ষতিগ্রস্থ হয় না, চোখে ছানি পড়ার সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়। যারা অতিরিক্ত ধূমপান করেন তাঁদের চোখে ছাঁনি পড়ার সম্ভাবনা কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
একজন মানুষের পক্ষে দৃষ্টিহীন হয়ে বেঁচে থাকার সমস্যা কতটা, সেটা যারা ভুক্তভোগী তারাই জানেন। মার্কিন আই স্পেশালিস্টদের মতে, ধূমপানের সরাসরি প্রভাব পড়ে চোখের রেটিনার উপর। আর একমাত্র এই রেটিনার কারণেই আমরা দেখতে পাই। ধূমপানের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হয় চোখের সেই গুরুত্বপূর্ণ অংশটিই।  আর ক্রমাগত রেটিনার ক্ষতির ফলেই দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে ফেলে মানুষ।

এছাড়াও ধূমপান বা তামাক জাতিয় দ্রব্য সেবনের ফলে দেখা দেয় ফার্টিলিটির সমস্যা। সেই সঙ্গে দেখা যায় হরমোনের সমস্যাও। ছেলেদের স্পার্ম কাউন্ট কমে যাওয়ার সব থেকে বড় কারণ হল এই ধূমপান। মেয়েদের মধ্যেও ধূমপানের প্রবৃত্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে দিনের পর দিন। এই কারণে মেয়েদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের সমস্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তামাক সেবনের ফলে চোখের সমস্যা ছাড়াও চেহাড়ায়া দ্রুত ছাপ পড়ে বয়েসের। এর কারণ, ধূমপান বা তামাক সেবনের সরাসরি প্রভাব পড়ে ফুসফসে। যা প্রভাব ফেলে আপনার ত্বকে। এর ফলে হতে পারে ড্রাই আইজের মত সমস্যাও। ধূমপান যারা না করেন তাঁদের মধ্যেও ড্রাই আইজের মত সমস্যা দেখা যায়, তবে যারা ধূমপান করেন তাদের মধ্যে এর প্রবণতা বেশি।

Share this article
click me!