সন্দীপ মজুমদার, হাওড়া- করোনার আবহের মধ্য়ে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গেল হাওড়ায়। করোনায় আক্রান্ত হয়ে স্বামীর মৃত্যু হয়েছিল। স্বামীর দেহ নিয়ে শ্মশানে গিয়ে অন্তোষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর বাড়ি ফেরেন স্ত্রী। এরপর যা ঘটল তা পুরোপুরি অবিশ্বাস্য বলে মনে করছেন অনেকে। বাড়ি ফিরে প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে আত্মঘাতী হলেন মহিলা। প্রতিবেশীর কাছ থেকে খবর পেয়ে বন্ধ ঘরের দরজা ভেঙে মা ও ছেলের দেহ উদ্ধার করল পুলিশ।
আরও পড়ুন-করোনা আবহে স্বাস্থ্যকর্মীর মৃত্যু, হাসপাতালেই চিকিৎসা ছাড়াই মৃত্য়ুর অভিযোগ করল পরিবার
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে উলুবেড়িয়ার রাজাপুর থানা এলাকায়। জানাগেছে, রঘুনাথপুর এলাকার বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের দেবনাথ দে পেশায় কারখানার শ্রমিক ছিলেন। কয়েকদিন ধরে অসুস্থ বোধ করায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। করোনা আবহে নিয়ম অনুযায়ী করোনা সংক্রান্ত রিপোর্ট না আসায় মৃত দেবনাথবাবুর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে তাঁর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এরপরই স্বাস্থ্য দফতর দেবনাথ দের মৃতদেহ সৎকারের জন্য হাওড়ার শিবপুর শ্মশান ঘাটে পাঠিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন-বিধিনিষেধে বদল নেই, করোনা আতঙ্কের মাঝে ফের খুলল তারাপীঠ
পুলিশ সূত্রে খবর, শিবপুর শ্মশান ঘাটে স্বামীর অন্তোষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করেন তাঁর স্ত্রী। তারপর বাড়ি ফেরেন দেবনাথ দের স্ত্রী অনুশ্রী দেবী। বাড়িতে ফিরেই দরজা বন্ধ করে দেন। ওই বাড়ি থেকে করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় কেউ আর দেখতে যাওয়ার সাহস পাননি। দীর্ঘক্ষণ বাড়ি থেকে কোনও সাড়া শব্দ না পেয়ে সন্দেহ হয় প্রতিবেশীদের। প্রতিবেশীরা জানালা দিয়ে দেখেন বছর আঠারোর প্রতিবন্ধী ছেলে প্রিতম মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আছেন। এরপরই পুলিশে খবর দেন তাঁরা। পুলিশ পৌঁছে বন্ধ ঘরের দরজা ভেঙে মা ও ছেলের দেহ উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন-মোবাইল কেনার টাকা নেই, অনলাইনে পড়াশুনা থেকে বঞ্চিত প্রত্যন্ত গ্রাম
মা ও ছেলের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। স্বামী করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কারনে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন স্ত্রী অনুশ্রী দেবী। সেকারণে প্রতিবন্ধী ছেলেকে শ্বাসরোধ করে খুন করে। পরে নিজেই আত্মঘাতা হন তিনি। ঘটনায় পুলিশ অস্বাভাবিক মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।