দেবনাহল্লির বিদালুরু গ্রামের কলেজ ছাত্রী কাভানাকে বারবার অন্য বর্ণের পুরুষের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে যেতে নিষেধ করেছিলেন তাঁর বাবা। কারণ, তাঁর ভয় ছিল যে, সমাজে তাঁর বদনাম হতে পারে।। মেয়ে কথা না শোনায় ভয়ঙ্কর কাণ্ড করে বসলেন তিনি।
বাড়িতে না জানিয়ে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিল বাড়ির ছোট মেয়ে ৷ এরপরেই প্রকাশ্যে আসে যে, বাড়ির বড় মেয়েও প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছে এক ভিনজাতের ছেলের সঙ্গে। সে-ও পালিয়ে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় মেয়েকে গলা কেটে খুন করলেন বাবা ৷ ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুর একটি প্রত্যন্ত গ্রামে। দেবনাহল্লি তালুকের বিদালুরু গ্রামে পরিবারের সঙ্গে বাস করতেন ২০ বছর বয়সি কলেজছাত্রী কাভানা। তাঁকে বারবার অন্য বর্ণের পুরুষের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে যেতে নিষেধ করেছিলেন তাঁর বাবা মঞ্জুনাথ। মেয়ে কথা না শোনায় ভয়ঙ্কর কাণ্ড করে বসলেন তিনি।
মঞ্জুনাথের দুই কন্যাসন্তান। দুজনেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। গত মঙ্গলবার কাউকে না জানিয়ে নিজের প্রেমিকের সঙ্গে বাড়ি ছেড়ে চলে যায় ছোট মেয়ে ৷ পরে পুলিশকে বিষয়টি জানালে প্রেমিক-সহ তাঁকে থানায় ধরে নিয়ে আসা হয় । মঞ্জুনাথের ছোট মেয়ে থানায় বলেছিলেন যে, তিনি প্রেমিকের সঙ্গে চলে যেতে চান। তবে নাবালিকা হওয়ায় মঞ্জুনাথের ছোট মেয়েকে হোমে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ।
ছোট মেয়ের ওই ঘটনার পর বড় মেয়ের ভালোবাসার সম্পর্কের কথা জানতে পারেন মঞ্জুনাথ। তার ভয় ছিল যে, বড় মেয়ে কাভানাও ছোট মেয়ের মতো প্রেমিকের সঙ্গে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে পারে৷ পাশাপাশি, বড় মেয়ের প্রেমিক অন্য জাতের হওয়ায় এই সম্পর্কের ক্ষেত্রে মঞ্জুনাথের ঘোরতর আপত্তি ছিল, কারণ, তাঁর ভয় ছিল যে, সমাজে তাঁর বদনাম হতে পারে। এই নিয়ে বাবা এবং মেয়ের মধ্যে ঘোরতর বিবাদ বাধে। ছোট মেয়ের পালিয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবেও বড় মেয়েকে দায়ী করতে থাকেন বাবা। এরপরেই ঘুমন্ত অবস্থায় প্রথমে মেয়ের গলা কেটে দেন তিনি, তার পায়ে ও হাতে একাধিকবার ছুরির কোপ বসাতে থাকেন। পরে তাঁর মাথায় লাঠির বাড়ি মেরে নির্মমভাবে হত্যা করেন বাবা। এরপর, বিশ্বনাথপুর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন করেন তিনি। দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ ।
সূত্রের খবর, অভিযুক্ত মঞ্জুনাথ একটি মুরগির দোকানে কাজ করেন। মুরগি কাটার ছুরি দিয়েই মেয়ের গলা কেটে নৃশংসভাবে তাঁকে হত্যা করেন তিনি। এই ঘটনায় বিশ্বনাথপুর থানার তরফে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং কাভানা-র মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষ হওয়ার পর দেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। থানায় আত্মসমর্পণ করা মঞ্জুনাথকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন বিশ্বনাথপুর থানার আধিকারিকরা।