১০ বছর ধরে আলোহীন ঘরে বন্দি উচ্চশিক্ষিত ৩ ভাইবোন, মা-এর মৃত্যুর পর কী এমন ঘটল

ঘরে সূর্যের আলো ঢোকার কোনও জায়গা নেই

চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে বাসি খাবার, খবরের কাগজ, মল

তারমধ্যেই শুয়ে ছিলেন অপুষ্টিতে তিন ভাইবোন

কিন্তু কেন, কী জানালেন তাঁদের বাবা

 

amartya lahiri | Published : Dec 28, 2020 3:29 PM IST / Updated: Dec 28 2020, 09:05 PM IST

অন্ধকার ঘরে সূর্যের আলো ঢোকার কোনও জায়গা নেই। চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে বাসি খাবার এবং খবরের কাগজ। মেঝেতে মাখামাখি মল। তারমধ্য়েই শুয়ে রয়েছে অপুষ্টিতে ভোগা দুটি পুরুষ ও একজন মহিলা। তাদের চুল জট পাকানো, মুখ ভর্তি লম্বা দাড়ি। রবিবার সন্ধ্যায় গুজরাতের রাজকোটের অভিজাত কিষাণপাড়া এলাকার এক বাড়ির দরজা ভেঙে এরকমই দৃশ্য দেখে আঁতকে উঠেছিলেন 'সাথী সেবা গ্রুপ' নামে এক এনজিও-র ককর্মীরা।

জানা গিয়েছে ওই তিনজন, হলেন অমরিশ মেহতা (৪২), মেঘনা মেহতা (৩৯) এবং ভাবেশ মেহতা (৩০)। সম্পর্কে তারা ভাইবোন। বড় ভাই অমরিশ বিএ, এলএলবি পাস, আগে আইনজীবী হিসাবে কাজ করতেন। মেজবোন মেঘনার মনোবিজ্ঞানে স্নাতকোকত্তর ডিগ্রি রয়েছে। আর ছোট ভাই ভাবেশ অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেচেন। আগে প্রতিশ্রুতিমান ক্রিকেটার হিসাবে তাঁর নাম-ডাক ছিল। কিন্তু, প্রায় ১০ বছর আগে তাঁদের মা-এর মৃত্যুর পরই এই তিন ভাইবোন বাইরের জগত থেকে একেবারে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁরা মানসিকভাবে অসুস্থ বলে অনেকে জানিয়েছেন।

এনজিও কর্মকর্তাদের এই তিন ভাইবোনের বাবা নবীনভাই মেহতা জানিয়েছেন, প্রায় দশ বছর তাদের মায়ের মৃত্যুর পর থেকেই তাঁরা নিজেদের ওই ঘরে বন্দি করে নিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, ১৯৮৬ সালে তাঁদের মা অসুস্থ হয়ে পড়ার পর থেকেই তাঁর সন্তানের মধ্যে ব্য়াপক পরিবর্তন এসেছিল। তারা বাইরে বাইরের জগতের সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেন। নবীনভাই মেহতার আরও দাবি, প্রতিদিনই তিনি ওই ঘরের বাইরে তাদের খাবার রেখে দিতেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, লোকে বলে কয়েকজন আত্মীয়ই তাঁর সন্তানদের উপর কালো যাদু করেছে।

তবে তাদের পাড়া-র্প্রতিবেশীরা অবশ্য নবীনভাই মেহতার দিকেই আঙুল তুলেছেন। তাঁদের দাবি, বাবাই আসলে অন্ধবিশ্বাসী। কালো যাদুর হাত থেকে রক্ষা করার দোহাই দিয়ে তিনিই তাঁর সন্তানদের ওই ঘরে আটকে রেখেছিলেন। এমনিতে 'সাথী সেবা গ্রুপ' গৃহহীন ব্যক্তিদের উদ্ধার করে তাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দেয়। এই ক্ষেত্রে তাদের ঘর থেকেই তিনজনকে উদ্ধার করতে হল। তবে তারা এই বিষয়ে এখনও পুলিশকে কিছু জানায়নি। তারা জানিয়েছে প্রথমে ওই তিনজনকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হবে। তারপরই তাদের বন্দিদশার কারণ অমুসন্ধান করার কথা ভাবা হবে।   তাত্ক্ষণিক জরুরি যত্ন প্রয়োজন।

Share this article
click me!