মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (Mamata Banerjee) 'এখন ইউপিএ (UPA) নেই' মন্তব্য নিয়ে তীব্র নিন্দা অধীর রঞ্জন চৌধুরীর (Adhir Ranjan Choudhury)। তাঁর দাবি, এটা পুরোনো ষড়যন্ত্র, মমতার পিছনে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)।
'এখন কোনও ইউপিএ (UPA) নেই' - বুধবার শরদ পওয়ারের (Sharad Pawar) সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (Mamata Banerjee) এই মন্তব্য কাঁপিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস (Congress) নেতৃত্বাধীন ইউপিএ-র ভিত। যা নিয়ে আগেই মমতাকে জবাব দিয়েছেন কংগ্রেস নেতা কেসি বেনুগোপাল (KC Venugopal)। এবার আর কোনও রাখঢাক না করে মমতার তীব্র সমালোচনা করলেন কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Choudhury)। তাঁর দাবি, এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুরোনো ষড়যন্ত্র। আর, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) সমর্থনেই মমতার শক্তি বেড়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিজেপির গোপন আঁতাত রয়েছে বলে অভিযোগ করে বিজেমূল তত্ত্ব খাড়া করেছিল কংগ্রেস ও বামেরা। নির্বাচনে মানুষ সেই প্রতিপাদ্য গ্রহণ করেনি। এদিন, মমতার ওই মন্তব্যের পর আরও একবার সেই বিজেমূলের তত্ত্বই আউরেছেন কংগ্রেস নেতা। অধীর বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি জানেন না ইউপিএ কী? আমি মনে করি তিনি পাগলামি শুরু করেছেন। তিনি মনে করছেন, সমগ্র ভারত 'মমতা, মমতা' স্লোগান দিতে শুরু করেছে। কিন্তু ভারত মানে বাংলা নয় এবং বাংলা মানেই ভারত নয়। গত নির্বাচনে তাঁর কৌশল ধীরে ধীরে ফাঁস হচ্ছে।'
অধীরের আরও অভিযোগ, বিজেপির সঙ্গে একটি আপাত জোটে রয়েছে মমতার নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। কারণ অ্যাজেন্ডা অনুসারে দুই দল, দুই দলের সহকারী। গোটা ভারতেই সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের রাজনৈতিক খেলাটা বিজেপি এবং মমতা একসঙ্গেই যে খেলছে, তা এখন দিনের আলোর মতো প্রকাশ পাচ্ছে বলে দাবি করেছেন তিনি। বিশদে ব্যাখ্যা করে অধীর বলেন, এনআরসি (NRC) নিয়ে বিজেপি তার অবস্থান পরিবর্তন করেছিল। ভোট চলে যেতেই আর তার নামগন্ধ নেই। অর্থাৎ, বিজেপির এনআরসির ভয়ে নির্বাচনে লাভবান হয়েছে তৃণমূল। তাই, মমতা এখন যা বলছেন, সবের সঙ্গেই একমত বিজেপি।
বিজেপিকে খুশি রাখতে, মমতার বর্তমান অবস্থানকে তিনি 'মিলে সুর মেরা তুমহারা, তো সুর বনে হামারা' বলেছেন। অধীরের দাবি, দীর্ঘদিন আগে থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ইউনাইটেড প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স বা ইউপিএ ভাঙতে চেয়েছিলেন। তিনি জানান, ইউপিএ সরকারে তৃণমূলের ৬ জন মন্ত্রী ছিল। ২০১২ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইউপিএ থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করার জন্য কিছু অজুহাত তৈরি করেছিলেন। আসলে তিনি সেইসময়ই ইউপিএ সরকারকে ভাঙতে চেয়েছিলেন। তবে সেইসময় অন্যান্য দল অবিলম্বে সরকারকে সমর্থন করায়, তিনি তাঁর পরিকল্পনায় সফল হননি। এটা মমতার পুরোনো ষড়যন্ত্র বলেই দাবি করেছেন কংগ্রেস নেতা। তাঁর দাবি, বর্তমানে মোদীজি মমতার পিছনে আছেন বলেই তাঁর শক্তি বেড়েছে। তাই, তিনি কংগ্রেসকে দুর্বল করার জন্য মরিয়া হয়ে পড়েছেন।