গত ফেব্রুয়ারি মাসে সিএএ বিরোধী আন্দোলনে তখন উত্তাল গোটা দেশ। এদেশে দাঁত তেমন ভাবে ফোঁটাতে পারেন করোনাভাইরাস। সেই সময় বেঙ্গালুরুতে আয়োজিত আসাদুদ্দিন ওয়েইসির সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী সভায় আচমকা মাইক হাতে পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দিয়ে শোরগোল তুলে দিয়েছিলেন ১৯ বছরের অমূল্যা লেওনা। এই মন্তব্যের জন্য গ্রেফতার হতে হয়েছিল অমূল্যাকে। গত প্রায় চার মাসে একাধিকবার নিম্ন আদালত ও বেঙ্গালুরু হাইকোর্টে তাঁর জামিনের আর্জি খারিজ করা হয়। অবশেষে ১১০ দিনে জেলে কাটানোর পর মুক্তি পেলেন অমূল্যা।
গত ফেব্রুয়াতিরে বেঙ্গালুরুর সিএএ-বিরোধী সভায় আচমকাই মাইক হাতে পাকিস্তানের সমর্থনে স্লোগান দেন অমূল্যা। এই স্লোগানের পরেই সেদিনের সিএএ বিরোধী সভার পরিবেশ দ্রুত পাল্টে যায়। ওয়েইসি দ্রুত অমূল্যর মন্তব্য থেকে দূরত্ব তৈরি করে জানিয়ে দেন, তিনি তা সমর্থন করেন না। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪ এ ধারায় দেশদ্রোহিতায় অভিযুক্ত করা হয় অমূল্যকে। ডিসিপি বেঙ্গালুরু (পশ্চিম) বি রমেশ বলেন, ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলায় তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা সংক্রান্ত ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা, ১৫৩ এ ও বি (বিভিন্ন গোষ্ঠী, সম্প্রদায়ের মধ্যে বিদ্বেষ, শত্রুতা ছড়ানো ) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অমূল্যাকে জামিন না দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন খোদ কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা। অমূল্যার বাবাও জানিয়েদেন, তিনি মেয়েকে রক্ষা করবেন না। এদিকে অমূল্যর দেশবিরোধী স্লোদানের পরেই তাঁর চিক্কামাগালুরের বাড়িতে হামলা করে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। হামলাকারীরা বিজেপির লোক বলে দাবি করেন অমূল্যার বাবা।
সিএএ বিরোধী সভায় পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান দেওয়ায় এর আগেও বহুবার বেঙ্গালুরুর বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটে খারিজ হয়েছে অমূল্যা জামিনের আবেদন। গত ১০ জুনও নগর দায়রা আদালতে তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করা হয়। দাবি করা হয় জামিনে মুক্তি পেয়েই পালাবেন অমূল্যা। তবে বেঙ্গালুরুর অপর এক বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট বৃহস্পতিবার অমূল্যার জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। বেঙ্গালুরু পুলিশ গত ৯০ দিনে এই মামলার চার্জশিট দাখিল করতে না পারাই আদালত অমূল্যার জামিন মঞ্জুর করেছে বলে জানা যাচ্ছে।
সংবাদিকতার স্নাতক স্তরের ছাত্রী অমূল্যা। প্রথম থেকেই নাগরিকত্ব বিরোধী আইনের প্রতিবাদ করতে পথে নেমেছিলেন তিনি। গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।