পুলিশ-হত্যা ছিল বিকাশ দুবের পূর্বপরিকল্পিত, খোঁজ চলছে সর্ষের মধ্যের ভূতটা কে

কুখ্যাত মাফিয়া বিকাশ দুবে ও তার দলবলের গুলিতে প্রাণ গিয়েছে আট পুলিশকর্মীর

২৫টি পুলিশের দল খুঁজলেও এখনও অধরা বিকাশ

তবে তার সঙ্গে সঙ্গে খোঁজ চলছে সর্ষের মধ্যে ভূতেরও

পুলিশি অভিযানের বিষয়ে আগাম সতর্ক করেছিল কে

amartya lahiri | Published : Jul 5, 2020 10:32 AM IST

শুক্রবার কানপুরে কুখ্যাত মাফিয়া বিকাশ দুবে ও তার দলবল নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে আট পুলিশকর্মীকে। তারপর থেকে সে নিখোঁজ। ২৫টি পুলিশের দল তার সন্ধান চালাচ্ছে। তার সন্ধানের পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশ পুলিশকে এখন তাদের স্থানীয় কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে হচ্ছে। কারণ, সর্ষের মধ্য়েই ভূত কারা, তা জানাটা এই মামলায় দারুণ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পুলিশ রবিবার বিকাশ দুবের গ্যাং-এর এক সদস্য দয়াশঙ্কর অগ্নিহোত্রী-কে গ্রেফতার করেছে। তাকে জিজ্ঞাসা করেই জানা গিয়েছে, স্থানীয় থানারই একটি সূত্র বিকাশ দুবে কে পুলিশি অভিযানের বিষয়ে আগাম সতর্ক করে দিয়েছিল।

আপাতত প্রধান সন্দেহভাবজন চৌবাপুর থানার স্টেশন ইনচার্জ বিনয় তিওয়ারি। তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শুধু তিনিই নন, সন্দেহের তালিকায় রয়েছে চৌবাপুর থানার সকল পুলিশ কর্মীই। সকলকেই পুলিশি তদন্তের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। মাফিয়াদের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার অভিযোগে যদি কেউ দোষী সাব্যস্ত হয় তাহলে সেই পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের বড়কর্তারা।

গ্রেফতারির পর দয়াশঙ্কর অগ্নিহোত্রী দাবি করেছে, পুলিশি অভিযানের কিছু আগেই এই অভিযান সম্পর্কে বিকাশ দুবে-কে থানায় থেকে ফোনে জানানো হয়েছিল। এরপরই বিকাশ প্রায় ২৫-৩০ জনকে ফোন করেছিল। আর তারপর দলবল নিয়ে তৈরি হয়েছিল পুলিশের জন্য। তারা কাছাকাছি আসতেই শুরু হয়েছিল পুলিশের উপর স্বয়ংক্রিয় বন্দুক থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি বর্ষণ। দয়াশঙ্করের আরও দাবি সংঘর্ষের সময় সে বাড়ির ভিতরে থাকায় তিনি সেই সময়ের ঘটনা কিছু জানেন না।

কুখ্যাত মাফিয়া বিকাশ দুবে

রাহুল তিওয়ারি নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বিকাশ দুবে-র বিরুদ্ধে তাঁকে হত্যা করার চেষ্টার অভিযোগ করার পরই, গত শুক্রবার কানপুরের শিবরাজপুর, বিলহৌর এবং চৌবাপুরের তিনটি পুলিশ দল বিকাশ দুবেকে ধরতে যৌথ অভিযান চালিয়েছিল। কিন্তু, বিকু গ্রামে সেই অভিযান চালাতে গিয়ে একে-৪৭'এর গুলিতে নিহত হন ৮ পুলিশকর্মী। ডিএসপি দেবেন্দ্র মিশ্র ছাড়া তিনজন সাব-ইন্সপেক্টর এবং চার কনস্টেবলের মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে গুলিবিদ্ধ দেবেন্দ্র মিশ্রকে বিকাশ দুবের আত্মীয় প্রেম প্রকাশ পাণ্ডের বাড়িতে টেনে নিয়ে গিয়ে সামনে থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।

কিন্তু,  চৌবাপুর থানার স্টেশন ইনচার্জ বিনয় তিওয়ারি-কে কেন সন্দেহ করা হচ্ছে? পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনা যে পূর্ব পরিকল্পিত সেই বিষয়ে তারা একেবারে নিশ্চিত। তিন দিক থেকে ঘিরে ধরে পুলিশের উপর গুলি চালানো, একটি রাস্তা কেটে দিয়ে ভোরের ঠিক আগে আরেকটি অন্ধকার রাস্তা দিয়ে পুলিশদের চলতে বাধ্য করা - সবই ইঙ্গিত করছে বিকাশ দুবে পুলিশি অভিযান সম্পর্কে আগেই খবর পেয়েছিল। আর অগ্নিহোত্রীর বয়ান তো আছেই। এর মধ্যে বিনয় তিওয়ারি-র বিভিন্ন সন্দেহজনক আচরণ, তাঁকে এই তালিকার একেবারে প্রথমে রেখেছে। প্রথমত, রাহুল তিওয়ারি অভিযোগ জানাতে গেলে, তিনি বিকাশ দুবের বিরুদ্ধে অভিযোগ নথিবদ্ধ করতে অস্বীকার করেছিলেন। তারপর যখন ডিএসপি দেবেন্দ্র মিশ্রের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়, সেই সময়ও দুষ্কৃতীদের গুলি ছোড়ার সামান্য কিছু আগেই তিনি পালিয়েছিলেন।

 

Share this article
click me!