জ্ঞানবাপী মসজিদ বিতর্ক অব্যাহত। তারই মধ্যে এলাহবাদ হাইকোর্ট জানতে চাইল জ্ঞানবাপী মসজিদের সম্প্রতি পাওয়া শিবলিঙ্গের বয়স নির্ধারণ করা যায় কিনা। তা নিয়ে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার মতামত জানতে চেয়েছে।
জ্ঞানবাপী মসজিদের শিবলিঙ্গের বয়স নির্ধারণ করার বিষয় এখনও কোনো সিদ্ধান্তে আসেনি এলাহবাদ হাইকোর্ট। তবে আদালত আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার প্রধানের কাছে জানতে চেয়েছে শিবলিঙ্গ বা কাঠামোটির কোনও ক্ষতি না করে সেটির কার্বন ডেটিং, গ্রাউন্ড নেনিট্রোটিং ব়্যাডার বা জিআরপি পরীক্ষা করা যায়নি কিনা। এই বিষয়ে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার প্রধানের কাছে থেকে এই বিষয়ে একটি লিখিত মতামাত চেয়েছে। খনন ও অন্যান্য পদ্ধতিতে যদি কাঠামোটির বয়স নির্ধারণ করা হয় তাহলে সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিনা তাও জানতে চেয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। কাঠামোটির সম্পূর্ণ নিরাপদ মূল্যায়ন করা যাবে কিনা - সেই বিষয়ে সংস্থার প্রধানের মতামতও জানতে চেয়েছে।
জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে আদালতের নির্দেশিত একটি সমীক্ষার সময়ই কাঠামোটি পাওয়া গিয়েছিলেন মসজিদ প্রাঙ্গনের একটি পুকুরের মধ্যে। তারপর থেকেই হিন্দু পক্ষ সেটিকে শিবলিঙ্গ বলে দাবি করেছে। অন্যদিকে মুসলিম পক্ষ জানিয়েছে এটি একটি ঝর্না জাতীয় জিনিস। যা দীর্ঘ দিন ধরেই পুকুরের মধ্যে পড়ে ছিল।
বিচারপতি জেজে মুনিরের বেঞ্জ গত ১৪ অক্টোবর বারানসীর জেলা জজের আদেশের বিরুদ্ধে গিয়ে হিন্দুপক্ষের দায়ের করা দেওয়ানি পুরর্বিবেচনার পিটিশনে এই আদেশ দিয়েছিল। সেই সময় বিচারক উদ্ধার হওয়া কাঠামোরটির বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চেয়ে হিন্দুপক্ষ যে আর্জি জানিয়েছিল তা খারিজ করে দিয়েছিল। জেলা বিচারক বলেঠিলেন যে সুপ্রিম কোর্ট যেহেতু শিবলিঙ্গ পাওযার জায়গাটিকে রক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে তাই বৈজ্ঞানিক তদন্তের আবেদনের অনুমতি দেওয়া যায় না। আদালতের আরও পর্যবেক্ষণ ছিল যে সেভাবে কাঠামোটির বৈজ্ঞানিক তদন্ত চাওয়া হয়েছে তা হলে কাঠামোটির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
যাইহোক এই রায়ের বিরুদ্ধেই হিন্দু পক্ষ এলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। কিন্তু এখনও কাঠামোটির বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার রায় দেয়নি কোর্ট। তবে কাঠামোটির বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করা হলে সেটির ক্ষতি হবে কিনা তা জানতে চেয়েছে।
চলতি বছরের শুরুতেই পাঁচ হিন্দু মহিলা মসজিদ কমপ্লেক্সের ভিতরে প্রার্থনার অনুমতি চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল। তাঁরা বছরভর প্রার্থনার আবেদন জানিয়েছিল। সেই সময়ই আদালতের ভিরতে একটি ভিডিও সমীক্ষাও করা হয়েছিল। সেই মামলার শুনানি এখনও চলছে।
সেই রায় দিতে গিয়ে বারানসী আদালত বলেছেন, কার্বন ডেটিং-এর মতো কোনও পরীক্ষার নির্দেশ দিলে তা সুপ্রিম কোর্টের আদেশ লঙ্ঘন করা হবে। কারণ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মসজিদের ভিতরের অংশ সিল করা রয়েছে।
গত মাসে পাঁচ জন হিন্দু আবেদনকারীর মধ্যে চারজন শিবলিঙ্গ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়ে বৈজ্ঞানিক তদন্তের আবেদন জানিয়েছিল। বৈজ্ঞানিক তদন্তের অর্থ হল কার্বন ডেটিং টেস্ট। তারা দাবি করেছিল শিবলিঙ্গের বয়স নির্ধারণ করা জরুরি। মহিলাদের দাবি ছিল জ্ঞানবাপী মসজিদের ভিতরে হিন্দু দেবদেবীর প্রাচীন মূর্তি রয়েছে।