হত্যার উদ্দেশ্যেই কী ভূস্বর্গে ফিরিয়ে আনা কাশ্মীরি পণ্ডিতদের? জঙ্গি হানার পর প্রশ্ন কেন্দ্রকে

কাশ্মীরি  হিন্দু পন্ডিতকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কাশ্মীরের সোপিয়ান জেলায়।সূত্রের খবর  দক্ষিণ কাশ্মীরের চৌধুরী গুন্ড এলাকার পুরান কৃষাণ ভাটকে তার বাসভবনের সামনে গুলি করার ঘটনায় এখন উত্তাল সারা দেশ ।

Bhaswati Mukherjee | Published : Oct 15, 2022 12:12 PM IST

কাশ্মীরি  হিন্দু পন্ডিতকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর  ঘটনায় আবার চাঞ্চল্য ছড়ালো  কাশ্মীরের সোপিয়ান জেলায়।পুরান কৃষাণ ভাট নামে  এক কাশ্মীরি পন্ডিতকে   মাসদুয়েক আগে গুলিবিদ্ধ করা হয় প্রকাশ্যে। বাসভবনের সামনে প্রথমে আক্রমণ করা হয় তাকে,  পরে তাকে লক্ষ্য করে প্রকাশ্যে গুলি চালানো হয় তার শরীরে  । গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় তার শরীর। দক্ষিণ কাশ্মীরের "চৌধুরী গুন্ড" এলাকার এই  ঘটনায়  শিহরিত দেশবাসী । গুলি লাগার পর তাকে ওই অবস্থায়  তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় সোপিয়ান হাসপাতালে।  সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর , ডাক্তাররা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অপরাধী কে বা করা তা প্রথম থেকেই স্পষ্ট ছিল প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে। তাই ঘটনার পরেই এলাকা ঘেরাও করে,  শুরু হয় তল্লাশি।  কিন্তু অপরাধীদের ধরা যায়নি এখনো।


বেশ কিছুদিন আগেই সোপিয়ান জেলার আপেল বাগানে সন্ত্রাসবাদীদের হাতে কাশ্মীরি পন্ডিতদের হত্যার ঘটনায় স্তব্ধ হয়ে গেছিলো গোটা দেশ।  তার কিছুদিন পর আবার এমন ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনিক গাফিলতির। গত অক্টোবর থেকেই কাশ্মীরে চলেছে একের পর এক হত্যালীলা। যাদের খুন হতে হচ্ছে তাদের বেশিরভাগই  কাশ্মীরি পন্ডিত ও বাকিরা কাশ্মীরি শ্রমিক। ঐ মাসেই  ৫ দিনে  ৭ জন নিহত হয় গুলিবিদ্ধ হয়।  যার মধ্যে একজন ছিলেন কাশ্মীরি পণ্ডিত, একজন শিখ ও বাকি  দুজন  অভিবাসী হিন্দু।তারও আগে ১৬ই অগাস্ট আপেল বাগানে  সুনীল কুমারের মৃত্যুর ঘটনাও শিউরে দিয়েছিলো আমাদের। .সুনীল কুমারের পরিবারকেও শেষ করে দেওয়া হয়েছিল সুকৌশলে। তার মৃত্যর কিছুদিন পর তার ভাই পিন্টু কুমারকেও হত্যা করা হয়েছিল নৃশংসভাবে। 

কৃষাণ ভাটেরও দুটি ১২বছরের ও ১০ বছরের সন্তান আছে যারা যথাক্রমে ক্লাস ৭ ও ক্লাস ৫ এ পড়ে। তার এক আত্মীয় জানান যে তিনি তার ঘর থেকেও খুব একটা  বের হতেন না । আর  গত বছরের অক্টবরের ঘটনার পর থেকে শুধু তিনি নন কাশ্মীরের অনেক হিন্দুই ঘরবন্দি হয়েই থাকতেন। 

তবে অগাস্ট মামলার দায়টি যদিও অনেকে কাশ্মীরি হিন্দুই "কাশ্মীর ফ্রিডম ফাইটারস', নামে  আলবদরের একটি শাখার উপর চাপান। এই সন্ত্রাসবাদী দলটি আবার   কটাক্ষের সুরে একটি বিবৃতি দিয়ে জানান যে যেসমস্ত কাশ্মীরি পন্ডিত ভাইরা স্বাধীনতা দিবসের "তরঙ্গ সমাবেশে " অংশ নেবার জন্য উৎসাহিত ছিলেন তাদের উচিত শিক্ষা দিতেও তাদের এমন কার্যক্রম। 

সূত্রের খবর  সীমান্তের ওপার থেকে প্রচুর পরিমাণে ছোট অস্ত্র ও গোলাবারুদ পাচার করা হয় কাশ্মীরে  এবং এই ঘটনাটি একটি স্পষ্ট সূচক দিচ্ছে  যে এই ধরনের হত্যা এবং গ্রেনেড নিক্ষেপের বিচ্ছিন্ন ঘটনা আগামী দিনে বৃদ্ধি পাবে। 

মে মাসে, সন্ত্রাসীরা বুদগামের একটি অফিসে ঢুকে ৩৬  বছর বয়সী রাহুল ভাটকে গুলি করে হত্যা করে, একজন কাশ্মীরি পণ্ডিত যিনি  ওখানে চাকরি করতে গেছিলেন তিনি এইরকম সন্ত্রাসবাদীদের হামলার সময় উপত্যকা ছেড়ে পালতে বাধ্য হয়। 

এই হত্যাকাণ্ডের ফলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রতিবাদের ঝড় ওঠেছে কাশ্মীরে । কাশ্মীরি পণ্ডিতরা বিক্ষোভ করেছ এখন।  তারা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে  স্লোগান দিচ্ছেন  এবং প্রশ্ন করছেন যে তাদের হত্যা করার জন্যই তাদের উপত্যকায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে কিনা। 

Share this article
click me!