আর্টিকেল ১৪২: বিচার বিভাগের হাতে 'পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র'! ধনখড়ের বক্তব্যে বিতর্ক

Published : Apr 18, 2025, 01:20 PM IST
আর্টিকেল ১৪২: বিচার বিভাগের হাতে 'পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র'! ধনখড়ের বক্তব্যে বিতর্ক

সংক্ষিপ্ত

Article 142: আর্টিকেল ১৪২ কি ন্যায়বিচারের হাতিয়ার নাকি গণতন্ত্রের উপর 'পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র'? সুপ্রিম কোর্টের আদেশ নিয়ে তোলপাড়, কেন উপরাষ্ট্রপতি ধনখড় বললেন যে বিচার বিভাগ সুপার সংসদ হয়ে গেছে? জেনে নিন এই সাংবিধানিক রহস্য।

Article 142: ভারতীয় গণতন্ত্র এক নতুন সাংবিধানিক মোড়ে দাঁড়িয়ে। সম্প্রতি ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় সুপ্রিম কোর্টের এক রায়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেছেন যে সংবিধানের আর্টিকেল ১৪২ এখন বিচার বিভাগের হাতে 'পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র' হয়ে উঠেছে, যা গণতান্ত্রিক ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। ১২ই এপ্রিল সর্বোচ্চ আদালত এক গুরুত্বপূর্ণ রায়ে নির্দেশ দিয়েছে যে রাজ্যপাল কর্তৃক রাষ্ট্রপতির কাছে প্রেরিত কোনো বিধেয়কের উপর রাষ্ট্রপতিকে তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই আদেশ কেবল সংবিধানের ব্যাখ্যাকে নতুন অর্থই দেয়নি, বরং একটি সাংবিধানিক বিতর্কেরও সূত্রপাত করেছে।

আর্টিকেল ১৪২ কি? "পূর্ণ ন্যায়বিচার"-এর সাংবিধানিক ক্ষমতা

ভারতীয় সংবিধানের আর্টিকেল ১৪২ সুপ্রিম কোর্টকে এমন ক্ষমতা দেয় যাতে এটি "পূর্ণ ন্যায়বিচার" নিশ্চিত করার জন্য যেকোনো আদেশ, রায় বা নির্দেশ জারি করতে পারে। এর বৈশিষ্ট্য:

  1. পূর্ণ ন্যায়বিচারের অধিকার: আদালত প্রয়োজনে আইনের পরিধির বাইরে গিয়েও রায় দিতে পারে।
  2. সারাদেশে কার্যকর: এমন কোনো আদেশ সারা দেশে প্রযোজ্য বলে বিবেচিত হবে।
  3. সহায়ক ক্ষমতা: আদালত এই অধিকারবলে কোনো ব্যক্তিকে তলব করতে পারে, নথিপত্র আনতে পারে বা আদালত অবমাননার জন্য শাস্তিও দিতে পারে।

ধনখড়ের তীব্র প্রশ্ন: "সুপ্রিম কোর্ট কি সুপার সংসদ হয়ে গেছে?"

রাজ্যসভার প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে গিয়ে উপরাষ্ট্রপতি ধনখড় বিচার বিভাগের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি বলেছেন: “এখন আমাদের এমন বিচারক আছেন যারা আইন তৈরি করবেন, নির্বাহী বিভাগের কাজ করবেন, এবং নিজেদের 'সুপার সংসদ' ভাববেন – কিন্তু তাদের উপর কোনো জবাবদিহিতা থাকবে না।” তিনি আর্টিকেল ১৪২-কে গণতন্ত্রের জন্য একটি ২৪x৭ 'পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র' বলে উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে এটি আইনসভা এবং নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতার উপর হস্তক্ষেপ করছে।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কেন বিতর্কের সৃষ্টি করল?

এই রায়ের মূল কারণ সেই মামলা, যেখানে বিরোধী দল শাসিত রাজ্য – যেমন কেরালা, তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা এবং পাঞ্জাব – রাজ্যপালদের দ্বারা বিধেয়ক অনুমোদনে বিলম্বকে চ্যালেঞ্জ করেছিল। 'তামিলনাড়ু বনাম রাজ্যপাল' মামলায় সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে বলেছে: “রাষ্ট্রপতিকে রাজ্যপাল কর্তৃক প্রেরিত বিধেয়কের উপর তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যাতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ব্যাহত না হয়।”

রাষ্ট্রপতির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে

ধনখড় দৃঢ়ভাবে বলেছেন যে রাষ্ট্রপতির পদ ভারতীয় সংবিধানের আত্মা। “রাষ্ট্রপতি সংবিধানের রক্ষা, সংরক্ষণ এবং পালনের শপথ নেন। কোনো প্রতিষ্ঠান, এমনকি বিচার বিভাগও, তাদের নির্দেশ দিতে পারে না যে তারা কত সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবেন।”

সংবিধানের তিন স্তম্ভের মধ্যে ভারসাম্য না সংঘাত?

এই বিষয়টি কেবল আইনি নয়, বরং গণতন্ত্রের আত্মা এবং সংবিধানের গঠনের সাথে জড়িত। প্রশ্ন উঠেছে, বিচার বিভাগ কি আর্টিকেল ১৪২ ব্যবহার করে তার সীমা লঙ্ঘন করছে, নাকি গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করছে?

PREV
click me!

Recommended Stories

Indian Railways: এবার তৎকাল টিকিট বুকিংয়ের নিয়মে বড়সড় রদবদল, জানিয়ে দিল রেল
রজস্বলা নাবালিকাকে একটা স্যানিটারি ন্যাপকিন দিতে ব্যর্থ ইন্ডিগো, বাবার কাতর আর্জির ভিডিয়ো ভাইরাল