Ram Mandir: বাবরি মসজিদ থেকে রাম মন্দির তৈরির বিতর্কিত দিনগুলি, একনজরে দেখে নিন শতাব্দী প্রাচীন ইতিহাস

অযোধ্যা রাম জন্মভূমি নিয়ে বহু বিতর্ক রয়েছে। প্রাচীনকাল থেকেই রয়েগেছে বিতর্ক। আসুন মন্দিরে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার প্রাককালে দেখে নেওয়া যাক অযোধ্যার বিতর্কিত দিনগুলি।

Saborni Mitra | Published : Jan 12, 2024 1:28 PM IST

অযোধ্যা রাম মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠার কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে। তবে এই অযোধ্যা রাম জন্মভূমি নিয়ে বহু বিতর্ক রয়েছে। প্রাচীনকাল থেকেই রয়েগেছে বিতর্ক। আসুন মন্দিরে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার প্রাককালে দেখে নেওয়া যাক অযোধ্যার বিতর্কিত দিনগুলি।

১. ১৫২৮

বিতর্কিত স্থানে মন্দির ভেঙে একটি মসজিদ নির্মাণের নির্দেশ দেন বাবরের সেনাপতি মীর বাকি। স্থানীয় হিন্দুদের দাবি মসজিদের একটি গম্বুজের নিচের জায়গাটি ছিল ভগবান শ্রীরামের জন্মস্থান।

২. ১৮৫৩

মন্দির ভেঙে যে স্থানে মসজিদ তৈরি হয়েছিল সেখানে ১৮৫৩ সালে ব্রিটিশ প্রশাসন একটি বেড়া দিয়ে দিয়েছিল। কারণ এই এলাকা নিয়ে সাম্প্রদায়িক অশান্তি সেই সময় থেকেই তৈরি হয়েছিল।

৩. ১৮৮৫

মোহন্ত রঘুবীর দাস ছিলেন অযোধ্যার পুরোহিত। তিনি রামায়ন বিশেষজ্ঞও ছিলেন। তিনি ফৈজাবাদ আদালতে একটি মামলা করে দাবি করেন বাবরি মসজিদের চত্বরের বাইরে চবুতারায় রামচন্দ্রের জন্মস্থান। মোঘল আক্রমণের পর সেখানে মন্দির তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তারও আগে সেখানে মন্দির ছিল। কিন্তু তাঁর আবেদন বাতিল হয়ে যায়।

৪. ১৯৪৯-৫০

১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হয়। তার দুপবছর পর আবারও রাম মন্দির ও বাবরি মসজিদ ঘিরে তৈরি হয় বিতর্ক। ১৯৪৯ সালের ২২ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ চত্ত্বরে প্রতিষ্ঠা করা হয় একটি রাম মূর্তি। তারপরই বেশ কয়েকটি এলাকায় এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে গোটা চত্ত্বরও সিল করে দেওয়া হয় প্রশাসনের তরফে।

৫. ১৯৫০

ফৈজাবাদ সিভিল কোর্টে দুটি পিটিশন দাখিল হয়েছিল। একটি বিতর্কিত জমিতে পুজোর অনুমতি চেয়েছিল। অন্য আবেদন মূর্তি স্থাপনের আর্জি জানান হয়েছিল। মন্দির পক্ষের নেতা গোপাল সিং বিশারদ দ্বারস্থ হন ফৈজাবাদ কোর্টে। বাবরি মসজিদ সংলগ্ন স্থানে যেখানে মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল সেখানে পুজোর করার অধিকার দাবি করেন। পাশাপাশি মূর্তি না সরানোর আর্জিও জানান হয়।

তাঁর পক্ষেই রায় দেয় ফৈজাবাদ আদালত।

৬. ১৯৫১

এর পরের বছরই উত্তর প্রদেশের গোবিন্দবল্লভ পন্থ শাসিত কংগ্রেস সরকার আদালতের এই ইঞ্জাংশান তোলার আবাদেন জানিয়ে মামলা করে। পাল্টা বিতর্কিত স্থানে পুজোপাঠ করতে চেয়ে মামলা করেন রাম জন্মভূমি মন্দির ট্রাস্টের প্রধান পরমহংস রামচন্দ্র দাস। এই ট্রাস্ট আবার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সঙ্গে যুক্ত ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালে তিনি মামলা তুলে নিয়েছিলেন।

৭. ১৯৮৬

আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে গঠিত হয় বাবরি মসজিদ অ্যাকশান কমিটি।

৮.১৯৮৯

বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সহসভাপতি ও এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি দেবকীনন্দন আগরওয়াল এলাহাবাদ আদালতের লখনৌ বেঞ্চে মামলা করেন। তাঁর দাবি ছিল ১৫২৮ সালে বাবরের হানায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল রামমন্দির। আর সেখানেই তৈরি হয় বাবরি সমজিদ। ফৈজাবাদ জেলার গেজেটে প্রদত্ত একাধিক তথ্য তুলে ধরেন তিনি। তারপর আদালত মসজিদ সংলগ্ন এলারায় পুজো চালু রাখার নির্দেশ দেয়। এই ঘটনার পরেই রাজীব গান্ধী ভিএইচপিকে রামমন্দিরের শিলান্যাসের অনুমতি দেয়। ও রামমন্দিরের প্রধান ইট স্থাপন করা হয়।

 

৯. ১৯৯২

৬ ডিসেম্বর ভেঙে ফেলা হয় বাবরি মসজিদ। গোটা দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে হিংসার আগুন। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে জারি করা হয় রাষ্ট্রপতি শাসন। ভেঙে দেওয়া হয় উত্তর প্রদেশের কল্যাণ সিং এর সরকার।

১০. ১৯৯৩

দিল্লিতে কংগ্রেস সরকার তৈরি হয়। প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিমা রাও অযোধ্যার বিশেষ জমি অধিগ্রহণ অ্য়াক্ট পাশ করেন। তাতেই বিতর্কিত জমি সরকারি সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হয়। এই প্রতিবাদে পিটিশন জমা করেন মসজিদ পন্থীরা।

১১. ১৯৯৪

ইসলাম ধর্ম পালনের জন্য মসজিদ অত্যাবশ্যক নয়। এই ঘোষণা করে ৬৭.৭ একরের মধ্যে ২.৭৭ একরের বিতর্কিত জমি অধিগ্রহণ করে সরকার।

১২. ১৯৯৬

এলাহাবাদ আদালত এই মামলার সাক্ষীদের মৌখিক বিবৃতি নেওয়া শুরু করে।

১৩.২০০২-০৫

এলাহাবাদ হাইকোর্টে মামলা শুরু হয়। হিন্দুদের দাবি মেনে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়াকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। রিপোর্টে বলা হয় বিতর্কিত স্থানে পরিকাঠামো রয়েছে। যার সঙ্গে সাদৃশ্য রয়েছে অতি প্রাচীনকালের হিন্দু মন্দিরের।আর সেই বছরই লালকৃষ্ণ আদবানিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে সিবিআই চার্জশিট পেশ করে।। এই পরিস্থিতিতে অশান্তি এড়াতে বিতর্কিত এলাকায় সবরকম ধর্মীয় কর্যকলাপ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।

১৪. ২০০৯

প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর কাছে রিপোর্ট পেশ করে লিবারহান কমিশন।

১৫. ২০১০

এলাহাবাদ হাইকোর্ট বিতর্কিত জমিকে তিনভাগে ভাগ করে। একটি ভাগ দেওয়া হয় সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকে। একটি অংশ পায় নির্মোহী আখড়া। বাকি অংশ দেওয়া হয় রামলালাকে। হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় হিন্দু মহাসভা ও সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড।

১৭. ২০১১- ২০১৬

হাইকোর্টের রায়ই জারি রাখে সুপ্রিম কোর্ট। বিজেপি নেতা সুব্রাহ্মন স্বামী বিতর্কিত এলাকায় রামমন্দির তৈরির অনুমতি চান। ওই বছরই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ৫ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ গঠন করা হয়। তৈরি হয় মধ্যস্থতাকারী প্যানেল। কিন্তু প্যানেল মধ্যস্থতা করতে ব্যার্থ হয়।

১৮. ৯ নভেম্বর ২০১৯

রাম জন্মভূমি মামলায় ঐতিহাসিক রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। বিতর্কিত জমি দেওয়া হয় হিন্দুদের। অযোধ্যাতেই ৫ একর জমি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় মুলসিমদের।

১৯. ২০২০

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপস্থিতিতে অযোধ্যা রাম মন্দিরের ভিত্তি প্রস্তর অনুষ্ঠান হয়েছিল। রামলালার মূর্তি একটি ফাইবারের মন্দিরে স্থানান্তর করা হয়েছিল।

২০. ২০২৩- ২০২৪

পরের বছর থেকেই রাম মন্দির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল। ২০২৩ সালে রাম মন্দিরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের দিন ঘোষণা করা হয়েছিল। আগামী ২২ জানুয়ারি প্রাণ প্রতিষ্ঠান অনুষ্ঠান হবে। তবে মন্দির নির্মাণ কাজ শেষ হবে আগামী বছর।

Read more Articles on
Share this article
click me!