রাত নামলেই রাস্তায় তেনাদের উপদ্রব, অবশেষে পুলিশের হাতে গ্রেফতার সাত-সাতজন 'ভূত'

  • হাতে লম্বা লম্বা নখ, গায়ে সাদা ঝোলা পোশাক, মাথাভর্তি উস্কোখুস্কো চুল
  • বেঙ্গালুরুর শরিফনগর এলাকায় গত কয়েকমাস ধরেই বাড়ছিল ভূতের উপদ্রব
  • অটোওয়ালা, ট্যাক্সিওয়ালা থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা -  অনেকেই এদের খপ্পরে পড়েছেন
  • অবশেষে ১০ নভেম্বর রাতে তাদের গ্রেফতার করল বেঙ্গালুরু পুলিশ

 

amartya lahiri | Published : Nov 11, 2019 7:15 PM IST / Updated: Nov 12 2019, 12:52 AM IST

বেঙ্গালুরুর যশোবন্তপুরের শরিফনগর এলাকা। গত কয়েক মাস ধরেই এই এলাকায় প্রবল ভূতের উপদ্রব। এলাকাবাসীর কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করতে গিয়ে বেঙ্গালুরু পুলিশ গ্রেফতার করল সাত-সাতজন 'ভূত'কে। জানা গিয়েছে ইউটিউব ভিডিও বানানোর নেশাতেই বুঁদ ছিল এই ভূতরা।

হাতে লম্বা লম্বা নখ, গায়ে সাদা ঝোলা পোশাক, মাথাভর্তি উস্কোখুস্কো চুল। শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে ঝড়ছে রক্ত। শরিফনগর এলাকা দিয়ে রাতে যেতে গিয়ে অনেক অটো-ট্যাক্সিওয়ালা বা বাইকআরোহীই এদের খপ্পরে পড়েছেন। কখনও কখনও ফুটপাথবাসীরা ঘুম ভেঙে উঠেই দেখেছেন তেনাদের। এমনকী এদের জন্য ট্রেন ধরতে যাওয়া মানুষও ভয়ে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। তবে রোজ রাতে তাদের দেখা মিলত না। সপ্তাহের শুধুমাত্র রবিবার ও সোমবারের মাঝের রাতেই হত তাদের উপদ্রব।

অবশ্যই এরা আসল ভূত নয়। এরা হল সাত তরুণ, বয়স ১৮ থেকে ২৫-এর মধ্যে। ভূতের ছদ্মবেশ নিয়ে শরিফনগর এলাকায় রাতে পথচলতি মানুষদের ভয় দেখাতো তারা। সাতজনের একজন আড়াল থেকে ভিডিও ক্যামেরায় বন্দি করত ভীত সন্ত্রসস্ত মানুষদের প্রতিক্রিয়া। এভাবেই প্র্যাঙ্ক বা মজা করে বোকা বানানোর ভিডিও বানাতো তারা ইউটিউবের জন্য।

বেঙ্গালুরু পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় কয়েকজন তাদেরকে ওই ভূতের উপদ্রব সম্পর্কে জানিয়েছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ ছিল এই জাতীয় ঠাট্টা করে ভয় দেখানোর ছলে তাদের অন্য কোনও উদ্দেশ্য রয়েছে। সম্ভবত চুরি বা অন্য কোনও অপরাধ মূলক লক্ষ্য রয়েছে। এই খবর পাওয়ার পরই ১০ নভেম্বর রাতে শরিফ নগর এলাকায় ফাঁদ পেতে একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে তার ফোনে প্রচুর ভিডিও মিলেছে। সবই ওই ভয় দেখানোর ভিডিও। ডিসিপি জানিয়েছেন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তার সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল ঘেঁটে পুলিশ নিশ্চিত হয়, শুধু ভয় দেখানো ও তার ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করাই তাদের উদ্দেশ্য ছিল।

এরপরই তাদের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বাধা দেওয়া (একটি ভিডিওতে তাদেরকে একটি অটোরিকশাকে রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বাধা দিতে দেখা গিয়েছে)-র মতো জামিনযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়। ফলে সহজেই তারা জামিনে মুক্ত হয়েছে। তাই বলে তাদের একেবারে ছেড়ে দেয়নি পুলিশ। ওই তরুণদের পাশাপাশি তাদের বাবা-মাদেরকেও ডেকে সতর্ক করেছে পুলিশ।

ডিসিপি-র মতে তাদের উদ্দেশ্য শুধু মজা করা হলেও, যে পদ্ধতিতে তারা মজাটা করছিল, তা বিপজ্জনক। রাস্তায় নেমে অটো বা বাইককে থামানোরর চেষ্টা করতো তারা। ভয় পেয়ে তারা না থামার চেষ্টা করে যদি জোরে গাড়ি চালিয়ে দিত তাহলে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। এছাড়া রাত্রিবেলা তারা যেভাবে ভূত সেজে উপস্থিত হচ্ছিল, তাতে দুর্বলহৃদয়ের কোনও ব্যক্তি অসুস্থও হয়ে পড়তে পারতেন। তাই সাত জনের ভূতগিরি এখন বন্ধ।

 

Share this article
click me!