ধীরে ধীরে থেমে গেল চিৎকার - খোখো খেলোয়াড়ের ধর্ষণকাণ্ড সমাধান করল গা ছমছমে অডিও রেকর্ড

উত্তরপ্রদেশের বিজনোরের রেল স্টেশন থেকে মিলেছিল জাতীয় পর্যায়ের খো খো খেলোয়াড়ের রক্তাক্ত দেহ। মৃতা খেলোয়াড়টির বান্ধবীর শেয়ার করা একটি অডিও ক্লিপের সাহায্যেই গ্রেফতার করা হল অভিযুক্তকে।
 

Asianet News Bangla | Published : Sep 14, 2021 1:36 PM IST

উত্তরপ্রদেশের বিজনোরের রেল স্টেশন থেকে মিলেছিল ২৪ বছর বয়সী এক জাতীয় পর্যায়ের খো খো খেলোয়াড়ের রক্তাক্ত দেহ। সিমেন্টের তৈরি রেলওয়ে স্লিপারের উপর পড়ে থাকা দেহটিতে যার-পর-নাই অত্যাচারের চিহ্ন ছিল। প্রথমে রেলের পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত করলেও, পরে বিজনোক পুলিশকে মামলাটি হস্তান্তর করা হয়েছিল। ৩ দিনের মধ্যে তারা রহস্যের সমাধান করে ফেলল। আর ই ক্ষেত্রে তাদের সবথেকে বেশি সাহায্য করল মৃতা খেলোয়াড়টির বান্ধবীর শেয়ার করা একটি অডিও ক্লিপ। যার ভিত্তিতে তারা মঙ্গলবার গ্রেফতার করল অভিযুক্তকে।

বিজনোর পুলিশ জানিয়েছে, নক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছিল গত ১০ সেপ্টেম্বর, দুপুর ২টো নাগাদ। দলিত সম্প্রদায়ের ওই মহিলা খো খো খেলোয়াড় একটি চাকরির ইন্টারভিউ দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। সেই সময়েই তার উপর নজর পড়েছিল অভিযুক্ত শাহজাদ ওরফে হাদিম-এর। তিনি ওই রেলস্টেশনেই শ্রমিক হিসেবে কাজ করত। সুযোগ বুঝে প্রতিশ্রুতিমান তরুণী খেলোয়াড়টিকে টেনে হিঁচড়ে সে নিয়ে গিয়েছিল ওই সিমেন্ট রেলওয়ে স্লিপারের স্তূপে। তরুণীর পরিবার অভিযোগ করেছে যে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। সেই বিষয়ে পুলিশ এখনও নিশ্চিত না হলেও তাকে যে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছিল, এই বিষয়ে তারা একশো শতাংশ নিশ্চিত। 

"

তবে একটা ভুল করে ফেলেছিল অভিযুক্ত শাহজাদ। তরুণীকে টেনে নিয়ে যাওয়ার সময়, তিনি তাঁর এক বান্ধবীর সঙ্গে ফোনে কথা বলছিলেন। শাহজাদ তাঁর উপর জোর খাটাতেই তিনি সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে শুরু করেছিলেন। তাঁর বান্ধবী ফোনের অপর প্রান্ত থেকে তা শুনতে পেয়েছিলেন। সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে করতে একসময় তিনি চুপ করে গিয়েছিলেন। পুলিশের দাবি, চেষ্টা করেন, ওই সময়ই অভিযুক্ত শাহজাদ তরুণীর দোপাট্টা এবং একটি দড়ি দিয়ে তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছিল। 

তাঁর বন্ধু অবশ্য ফোনের অপর প্রান্ত থেকে সেই কল রেকর্ড করে নিয়েছিলেন। সেই কল রেকর্ডিংটি পুলিশের সঙ্গে শেয়ার করেন তিনি। সেই প্রমাণের ভিত্তিতেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্ত শাহজাদ তরুণীকে হত্যার পর তাঁর মোবাইল ফোনটি নিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। বাড়িতে পৌঁছানোর পরই সে ফোনটি বন্ধ করেছিল কিন্তু তাতে ফোনের শেষ লোকেশন খুঁজে পেতে সমস্যা হয়নি পুলিশের যা ছিল শাহজাদের বাড়ি। তরুণীর চিৎকারের কল রেকর্ড এবং ফোনের শেষ লোকেশন - এটাই শেষ পর্যন্ত দুয়ে দুয়ে চার করে দিয়েছে। 

পুলিশ জানিয়েছে, ১০ তারিখ বিকালে এলাকাবাসী ওই সিমেন্টের স্লিপারগুলির উপর তরুণী খোলেয়াড়টির নিথর দেহ পেয়েছিল। একেবারে রক্তের পুকুরে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পড়েছিল তাঁর দেহ এমনকী একটা দাঁতও ভাঙা ছিল তাঁর। ঘটনাস্থল থেকে  পুলিশ একটি চটি এবং একটি শার্টের দুটি ভাঙা বোতামও পেয়েছিল। যা পরে শাহজাদের বলে প্রমাণিত হয়েছে। পুলিশের দাবি, তার শার্টেও রক্তের দাগ ছিল যা পরে তার স্ত্রী ধুয়ে দিয়েছিল। শাহজাদের পিঠে পুলিশ নখের আচড়ের দাগও পেয়েছে। যা মৃতা তরুণীর প্রতিরোধের চিহ্ন বলে মনে করা হচ্ছে। নখের চিহ্ন মৃতার ডিএনএ-র সঙ্গে মিলিয়ে দেখার জন্য নমুনা নিয়ে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। 

আরও পড়ুন - সভ্য -জগতে বাঁচল না 'বাস্তবের টারজান', জঙ্গল থেকে বের হতেই প্রাণ কাড়ল ক্যান্সার

আরও পড়ুন - এমন চাউমিন তৈরি করত দোকানদার, যে লেগে যেত নেশা - আপনিও ফাস্টফুড সেন্টারে এমন কিছু খাননি তো

আরও পড়ুন - আত্মঘাতী হামলার নেটওয়ার্ক চালাত, সেই জঙ্গিই হল তালিবানর গোয়ান্দা বিভাগের উপপ্রধান, দেখুন

পুলিশ আরও জানিয়েছে, শাহজাদের একটি মেয়েও রয়েছে। তবে, সে মাদকাসক্ত। মাদক কেনার জন্য রেলেস্টেশন থেকে জিনিসপত্র চুরিও করেছে সে। সেই ধরণের ঘটনার জন্য স্থানীয় থানায় তার বিরুদ্ধে চারটি অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।

Share this article
click me!