দেশজুড়ে করোনাআতঙ্কে ছুটি হয়ে যাচ্ছে স্কুল-কলেজ। খাঁ-খাঁ করছে বাজার-দোকান-হোটেল। এমনকি, আংশিক বন্ধ হয়ে গিয়েছে আদালতও। একসঙ্গে অনেকের সমবেত হওয়া আটকাতে মঠ-মন্দিরেও একত্রে বসে সন্ধ্য়ারতি দেখা বা ভোগ খাওয়ার পালা উঠে যেতে বসেছে অনির্দিষ্ট কালের জন্য়। এমতাবস্থায়, সিএএ আর এনআরসি বিরোধী জমায়েতে হাজির হওয়া বিক্ষোভকারীরা সাফ জানিয়ে দিচ্ছেন-- করোনার চেয়েও মারাত্মক ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ছি, তাই উঠে যাওয়ার প্রশ্নই নেই।
দিল্লির শাহিন বাগে অবস্থানরত বিক্ষোভকারীরা যেমন জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও মূল্য়েই তাঁরা উঠবেন না, তেমনই জানিয়ে দিয়েছেন বিলাল বাগের বিক্ষোভকারীরাও। বেঙ্গালুরুর বিলালবাগে সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভ চলছে ৩৯ দিন ধরে। সেখানকার বিক্ষোভকারীর স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করছেন তাঁরা। কিন্তু তাঁরা তাঁদের অবস্থান-বিক্ষোভ থেকে সরবেন না। জনৈক বিক্ষোভকারীর কথায়, "আমরা করোনাভাইরাস নিয়ে চিন্তিত নই।" কিন্তু করোনা নিয়ে যেখানে গোটা বিশ্ব শঙ্কিত, যেখানে স্কুল-কলেজ বা বিভিন্ন জায়গায় জনসমাগম ঠেকাতে বিধি-নিষেধ আরোপ হচ্ছে, মানুষ নিজেই আর ভয়ে বাড়ি থেকে বেরুচ্ছে না, সেখানে এই ধরনের মঞ্চ থেকে সহজেই ছড়াতেই পারে করোনা ভাইরাস, তাহলে? ওই ব্য়ক্তির যুক্তি, "আমরা করোনা ভাইরাসের কথা শুনেছি। বিষয়টা জানিও। আমরা এখানে সতর্কতামূলক ব্য়বস্থাও নিচ্ছি। আমরা কোনও কোল্ড ড্রিঙ্ক বা ঠান্ডা জল খাচ্ছি না। আমরা চেষ্টা করছি গরম জল খাওয়ার। কিন্তু আমরা যে ভাইরাসের তিন ভাইরাসের (সিএএ, এনআরসি, এনপিআর) বিরুদ্ধে লড়ছি, তা করোনার চেয়েও মারাত্মক। তাই অবস্থান ছেড়ে উঠবার কোনও প্রশ্নই নেই।"
বিলালবাগের আরও এক বিক্ষোভকারীর সঙ্গে কথা বলা গেল, যিনি আবার ডাক্তারির পড়ুয়া। তাঁর কথায়, "বিক্ষোভকারীরা যদি করোনার ভয়ে বাড়িতে বসে থাকেন, তাহলে তাদের তো দেশের বাইরেই ছুড়ে ফেলা দেওয়া হবে দু-দিন বাদে।"
এদিকে কর্নাটকের স্বাস্থ্য় শিক্ষা মন্ত্রী সুধাকর জানান, "বিলাল বাগের বিক্ষোভ নিয়ে আমি মুখ্য়মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবো। তারপর যা ব্য়বস্থা নেওয়ার তা নেবো।" তাই প্রশ্ন উঠেছে, শাহিন বাগ থেকে বিলাল বাগ, যেখানে যেখানে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে, এবার কি সেখানে করোনাকে ঢাল করে বিক্ষোভকারীদের উঠিয়ে দেওয়ার হবে?