'ওরা সবাই ব্রাহ্মণ। আর ব্রাহ্মণদের সংস্কার থাকে। ওদের কোণঠাসা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।' এই মন্তব্য ঘিরে নতুন করে দানা বাঁধে বিতর্ক।
বিতর্কের মুখে দাঁড়িয়েছিলেন ধর্ষকদের পাশে। বিলকিস বানোর ধর্ষকদের সমর্থনে তাঁদের 'সংস্কারি ব্রাহ্মণ' আখ্যাও দিয়েছিলেন। এবার আসন্ন গুজরাট নির্বাচনে পদ্ম বাহিনীর রথের সারথী হলেন গোধরার সেই বিধায়ক চন্দ্রসিংহ রাউলজিই। গুজরাতের বিধানসভা নির্বাচনে গোধরা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে চন্দ্রসিংহ রাউলজিকেই প্রার্থী করল বিজেপি। উল্লেখ্য, বিলকিস বানোর ধর্ষকদের জামিন দেওয়ার বিষয় গঠিত কমিটিরও সদস্য ছিলেন এই চন্দ্রসিংহ রাউলজি।
গত ১৫ অগাস্ট বিলকিস বানোর ধর্ষনের অভিযোগে ১১ সাজাপ্রাপ্তকে জামিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গুজরাট সরকার। জেলের বাইরে ধর্ষকদের ফুল মালা দিয়ে বরণ করার দৃশ্য দেখা যায়। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পরে। সারা দেশ জুড়ে ওঠে বিতর্কের ঝড়। এই পরিস্থিতিতে গোধরার বিধায়ক চন্দ্রসিংহ রাউলজি বলেছিলেন 'ওরা সবাই ব্রাহ্মণ। আর ব্রাহ্মণদের সংস্কার থাকে। ওদের কোণঠাসা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।' এই মন্তব্য ঘিরে নতুন করে দানা বাঁধে বিতর্ক। কিন্তু এত ঘটনা এত বিতর্কের পরও গোধরা বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির প্রার্থী হলেন ধর্ষকদের পাশে দাঁড়ানো বিধায়কই।
সম্প্রতি একটি সর্বভারতীয় সংবাদমধ্যমের সাক্ষাৎকার ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন মহলে। সাক্ষাৎকারটি ছিল বিলকিস বানোকে ধর্ষণের জন্য ১৪ বছর সংশোধনাগারে থাকা গোভিন্দ নাই-এর। সংবাদ মাধ্যমের সামনে সে বলে,"আমরা নির্দোষ। কখনও দেখেছেন কাকা এবং ভাইপো একে অপরের সামনে ধর্ষণ করছে? হিন্দুদের মধ্যে কি এই ধরনের ঘটনা ঘটে? না ঘটে না।" এই সাক্ষাৎকার প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয় শোরগোল। ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র টুটে মোদী সরকারকে বিঁধে লেখেন, "এই কথা বলছে বিলকিস বানোর ধর্ষক এবং নির্দোষদের খুনি। মোদী-শাহ সরকারের জন্য সে ছাড়া পেয়ে গেল।"
প্রসঙ্গত, দেশের ৭৬ তম সব স্বাধীনতা দিবসের দিন বিলকিস বানো-কাণ্ডে দোষীসাব্যস্ত ১১ জন আসামীকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গুজরাত সরকার। সিবিআই-এর মতে 'বিরল থেকে বিরলতম' আখ্যাপ্রাপ্ত অপরাধের জন্য যেখানে দোষীদের যাবজ্জীবন সাজার রায় দিয়েছিল সিবিআই-এর বিশেষ আদালত সেখানে কোন যুক্তিতে ১১ জনকেই মুক্তির সিদ্ধান্ত নিল গুজরাত সরকার তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
মঙ্গল সুপ্রিম কোর্টে জমা দেওয়া আবেদনপত্রে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মিত্র বলেছেন, বিলকিস বানো-কাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত ১১ জন অপরাধীকে মুক্তি দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত গুজরাত সরকার নিয়েছে তা পুণরায় খতিয়ে দেখুক আদালত। রাজ্যের হাতে থাকা ক্ষমতার যেন অপপ্রয়োগ না হয়।
আরও পড়ুন -
তুরুপের তাস ফিরহাদের মন্তব্য, ফের একবার জামিন খারিজ, আরও ১৪ দিন জেল হেফাজতে কেষ্ট