১১৪ ফুট লম্বা একটি যিশু খ্রিস্টের মুর্তি বসানোর প্রস্তাব। আর তাই নিয়ে সোমবার কর্নাটকের কনকপুরা কপালিবেত্তা-য় ধুন্ধুমার ঘটালো বিজেপি, আরএসএস-সহ বেশ কয়েকটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। আর এই নিয়ে ঘুরিয়ে তাদের তাড়া করল সিএএ বিতর্ক। গীতিকার জাভেদ আখতার এদিন বলেন, বিজেপি একদিকে বলছে ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হওয়া খ্রিস্টানদের ভারতের নাগরিকত্ব দেবে, আর অন্যদিকে যিশুমুর্তি বসানোর বিরোধিতা করছে।
যিশুর মূর্তি স্থাপনটি কনকপুরার সাংসদ তথা কংগ্রেসের বিশিষ্ট নেতা ডি কে শিবকুমার-এর প্রকল্প। এদিন এই নিয়ে বিজেপি-আরএসএস'এর ঝামেলা করা বিষয়ে তিনি বলেছেন, খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের গ্রামবাসীরাই এই মূর্তি চেয়েছেন। তিনি বিধায়ক হিসেবে সহায়তা করেছেন। এর জন্য জমি অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে সবকিছু একেবারে বৈধ উপায়েই করা হয়েছে বলে তাঁর দাবি।
কপালিবেত্তার হারোবেলা গ্রামে মূর্তিটি বসানোর কথা। হারোবেলা খ্রিস্টান অধ্যুষিত একটি গ্রাম। প্রায় ৪০০ বছর ধরে এই খ্রিস্টানরা এই গ্রামে বসবাস করছে। ক্রিসমাসের দিন ডি কে শিবকুমার জমির নথি এই মূর্তিটি স্থাপনের দায়িত্ব থাকা ট্রাস্টের হাতে তুলে দেন।
এদিন হারোবেলা গ্রামে হাজারেরও বেশি বহিরাগত বিজেপি-আরএসএস সমর্থক এসে, এই প্রকল্পের বিরোধিতা করেন। স্থানীয় প্রশাসন অবশ্য প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করেছিল। তাই বড় কোনও বিপদ ঘটেনি।
এদিকে এদিন সকালের ঘটনার পরই গীতিকার জাভেদ আখতার টুইট করেন। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের সমর্থনে বিজেপি এবং আরএসএস-এর দেওয়া যুক্তিকে ব্যবহার করেই তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করেন। সিএএ -বিল নিয়ে বিরোধিতার জবাবে দুই ডানপন্থী সংগঠনই বারবার ধর্মীয় নিপীড়নের শিকার হওয়া মানুষদের প্রতি সহানুভূতী প্রদর্শনের প্রসঙ্গ তুলেছেন। এবার নিজেরাই সেই ধর্মীয় নিপীড়নের অংশ হওয়াতে তাদের যুক্তিই বুমরাং হয়ে আসছে।
প্রস্তাবিত যিশু মূর্তিটি কিন্তু বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ যিশুর মূর্তি হতে চলেছে। শক্ত গ্রানাইট পাথরে তৈরি মূর্তিটির উচ্চতা হবে ১১৪ ফুট। আর মূর্তির তলায় আরও ১৩ ফুট উচ্চতার সিঁড়ি থাকবে। ইতিমধ্যে এই শিঁড়িটি তৈরি হয়ে গিয়েছে। ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরো-র বিখ্যাত 'ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার' মূর্তিটির পাদদেশের উচ্চতা ২৬ ফুট। তা বাদ দিলে মূর্তিটির উচ্চতা ৯৮ ফুট। কাজেই মূর্তিটি ভবিষ্যতে পর্যটনের দিশাও দিতে পারে।