
এবার সিবিআই-এর খাঁড়া সত্যপাল মালিকের ওপর। জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন রাজ্যপাল সত্যপাল মালিককে নোটিশ পাঠিয়ে বিমা কেলেঙ্কারি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য নোটিশ পাঠিয়েছে বলে শুক্রবার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। অন্যদিকে সত্যপাল মালিক সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কিছু স্পষ্টীকরণের জন্য তাঁকে এজেন্সির আকবর রোড গেস্টহাউসে উপস্থিত হতে বলেছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, তিনি রাজস্থান যাচ্ছেন , সেই কারণেই এজেন্সির থেকে আগামী ২৭-২৯ এপ্রিল পর্যন্ত সময় চেয়েছেন।
এর আগে গত বছরই সত্যপাল মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল সিবিআই। জম্মু ও কাশ্মীরের কিরু জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের সঙ্গে সম্পর্কিত ২ হাজার ২০০ কোটি টাকার সরকারি কর্মীদের জন্য একটি গ্রুপ মেডিক্যাল ইন্স্যুরেন্স স্কিমের চুক্তি ও ২.২০০ কোটি টাকার বেসামরিক কাজের চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগে দুটি এফআইআর দায়ের হয়েছিল। সেই মামলাতে জেরা করা হয়েছিল। সূত্রের খবর এই দুটি ফাইল পাশ করার জন্য তাঁকে ৩০০ টাকা ঘুষের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। এবার সেই বিষয় নিয়েই সিবিআই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়।
সত্যপাল মালিক আগেই বলেছিলেন ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে এই ফাইলগুলি পাশ করার জন্য তাঁকে ৩০০ কোটি টাকা ঘুষের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি সত্যপাল মালিক বলেছিলেন, এই ফাইলগুলি পাশ করানোর জন্য তাঁকে আরএসএস ও বিজেপি নেতা রাম মাধব অর্থের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। যদিও রাম মাধব এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সত্যপাল মালিকের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেছেন।
২০১৮ সালে সত্যপাল মালিক জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যপাল ছিলেন। সেই সময় তিনি শিল্পপতি অনিল আম্বানির মালিকানাধীন কোম্পানির একটি চুক্তি বাতিল করে দিয়েছিলেন। পাশাপাশি জম্মু ও কাশ্মীরের সরকারি কর্মচারী ও তাদের পরিবারের জন্য একটি চিকিৎসা বিমা প্রকল্প চালু করার ক্ষেত্রে যে কেলেঙ্কারিতে অভিযুত্ত ট্রিনিটি পুনর্বিমা দালালসহ রিলায়েন্স জেনারেল ইন্স্যুরেন্সকে নাম দিয়েছে। সত্যপাল মালিক বিমা প্রকল্পে জালিয়াতির অভিযোগ করেছিলেন। যা নিয়ে পরবর্তীকালে সিবিআই তদন্ত হয়েছিল।
সত্যপাল মালিক একজন রাজনীতিবিদ। ২০১৭ সালে বিহারের রাজ্যপাল ছিলেন। পরে ২০১৮ তাঁকে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যপালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তিনি ২০১৯ সালে ভূস্বর্গ থেকে ৩৭০ ধারা বাতিলের সময়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন। সত্যপাল মালিক ১৯৭৪ সালে রাজনীতিতে পা রাখেন। তিনি মীরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলে। ১৯৭৪ সালে তিনি বিধায়ক হন। ১৯৮৪ সালে কংগ্রেসে যোগ দেন। রাজ্যসভার সাংসদ হন। তিন বছর পরে বোফর্স কেলেঙ্কারির কারণে পদত্যাগ করেন। তিনি ১৯৮৮ সালে ভিপি সিংএর নেতৃত্বাধীন জনতা দলে যোগ দেন। ১৯৯৮ সালে আলিগড় থেকে সাংসদ হন। ২০০৪ সালে বিজেপিতে যোগ দেন , কিন্তু নির্বাচনে হেরে যান চরণ সিংএর ছেলের কাছে। সম্প্রতি সত্যপাল মালিক একটি নিউজ পোর্টালে সাক্ষাৎকারে পুলওয়ামা হামলার জন্য তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকেই দায়ী করেছিলেন। পাশাপাশি বলেছিলেন এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে মুখ বন্ধ রাখতে বলেছিলেন।