বিনা বাধায় তিন নম্বর কক্ষপথ পার হল চন্দ্রযান ৩। তবে চন্দ্র অভিযানের পথে এখনও আরও দুটি পাঁচিল রয়েছে চন্দ্রযানের সামনে।
মহাশূন্যে চাদের পথে আরও একটি দুর্ভেদ্য বাধা অতিক্রম করে নিজের ছন্দে এগিয়ে যাচ্ছে চন্দ্রাযান ৩। সোশ্যাল মিডিয়া বার্তা দিয়ে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জানিয়েছে নির্ধারিত সময়সূচীর মধ্যেই চন্দ্রযান ৩ তৃতীয় কক্ষপথ-উত্থাপন কৌশল সম্পন্ন করেছে। ইসরো আরও জানিয়েছে তৃতীয় কক্ষপথ পার হওয়ার বিষয়টিও বেঙ্গালুরুর থেকে সফলভাবে সঞ্চালিত হয়েছে। পরের আর্থাৎ চতুর্থ কক্ষপথ উত্তরোন পর্ব আগামী ২০ জুলাই দুপুর ২টো থেকে ৩টের মধ্যে সফল ভাবে সম্পন্ন হবে বলেও মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের তরফ থেকে আশা করা হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত চন্দ্রযান ৩ চাঁদের লক্ষ্যে নির্ধারিত পথেই পাড়ী দিচ্ছে। তবে চন্দ্র অভিযানের পথে এখনও আরও দুটি পাঁচিল রয়েছে চন্দ্রযানের সামনে। আর সেই দুটি পাঁচিল পার হতে পারে আর কোনও বাধা থাকবে না চন্দ্রযানের সামনে। কক্ষপথের পরিবর্তনের সময়ই যে কোনও মহাকাশ যানকে একাধিক সমস্যার সমাধান করতে হয়। তাই কক্ষপথের পরিবর্তন নিয়ে চিন্তিত থাকেন বিজ্ঞানীরা। তবে এখনও পর্যন্ত পরপর তিনটি কক্ষপথ বিনা বাধায় পার হয়েছে। আর মাত্র দুটি কক্ষপথ পরিবর্তন করতে হবে মহাকাশযানটিকে
।
গতকাল অর্থাৎ সোমবার ইসরো জানিয়েছিল চন্দ্রযান ৩ এই নিয়ে পরপর দুটি কক্ষপথ পরিবর্তন করল। ইসরো জানিয়েছ বর্তমানে চন্দ্রযান ৩ বর্তমানে অবস্থান করছে ৪১৬০৩ কিলোমিটার গুণ ২২৬ কিলোমিটার কক্ষপথে। মঙ্গলবার বিকেল দুপুর ২টো থেকে বিকেল ৩টের মধ্যে চন্দ্রযান আবারও আবারও কক্ষপথ পরিবর্তন করবে। পৃথিবীর মাধ্যকর্ষণ শক্তির গণ্ডি ছাড়িয়ে চাঁদের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য এই চন্দ্রযান ৩কে আরও তিনবার কক্ষপথ পরিবর্তন করতে হবে। তারপরই চাঁদের পথে এগিয়ে যেতে আর কোনও বাধা থাকবে না।ট
ভারতের এই মহাকাশযানটি দুটি মহাকাশীয় বস্তুর মধ্যে প্রায় ৩৮৪০০০ কিলোমিটার জুড়ে চাঁদে তার গতিপথ শুরু করার আগে পৃথিবীর চারপাশে লুক করে কয়েকটি কক্ষপথে উত্থাপনের কৌশলের মধ্যে দিয়ে যায়। ভারতের এই মুন মিশনের খরচ প্রায় ৬১৫ কোটি টাকা। ইসরো আরও জানিয়েছে, উৎক্ষেপণেক মাত্র ৯০০ সেকেন্ডের মধ্যেই মহাকাশযান LVM-3 থেকে আলাদা হয়ে যায়।একবার মহাকাশযানটি চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ ক্ষেত্রে প্রবেশ করলে, এটি ধীরে ধীরে তার উচ্চতা কমাতে এবং চাঁদের চারপাশে একটি বৃত্তাকার কক্ষপথে প্রবেশ করার জন্য গতি কমিয়ে ফেলবে। চন্দ্রযান ৩র সফল উৎক্ষেপণ ইসরোর সঙ্গে ভারতে বিশেষ সম্মান দিয়েছে। আমেরিকা, রাশিয়া, চিনের পরে ভারত হবে চতুর্থ দেশ যাদের মহাকাশ যান চাঁদের মাটি স্পর্শ করবে। চন্দ্রযান -৩এর ল্যান্ডারের নাম বিক্রম আর রোভারের নাম প্রজ্ঞান। ৪০ দিন পরে আগামী ২৩ অগস্টের মধ্যে চাঁদের মাটি স্পর্শ করবে চন্দ্রযান ৩। LVM3 মহাকাশ যান নির্ঘারিত কক্ষপথে প্রবেশ করেছে।
জাতীয় মহাকাশ সংস্থা টুইট করে আগেই জানিয়েছিল মিশনটি সফলভাবে পরিচালনা করার জন্য যা যা পরীক্ষার প্রয়োজন ছিল সব কিছুই করা হয়েছে। লঞ্চ ভেইকেল মার্ক ৩ থেকে উৎক্ষেপন করবে। এটি একখনও পর্যন্ত ভারতের সবথেকে বড় রকেট। ইসরোর মতে প্রোপেলন্টা মডিউল ল্যান্ডার ও রোভারকে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত চন্দ্র কক্ষপথে নিয়ে যাবে। এতে চাঁদের কক্ষপথ থেকে পৃথিবীর মেরু পরিমাম করার জন্য একটি স্পেকট্রো পোলারিমেট্রি পোলেডও যুক্ত করা হয়েছে। পৃথীবী থেকে প্রায় ৩ লক্ষ ৮৪ হাজার কিলোমিটার দূরে নিয়ে যাওয়া যাবে চন্দ্রযান ৩কে। ২০১৯ সালেও ভারত চন্দ্রযান ২ পাঠিয়েছিল। কিন্তু সেবার চন্দ্রযান ২ চাঁদের মাটি স্পর্শ করতে ব্যার্থ হয়। চাঁদে অবতরণের আগেই যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। অতীতের ভুলত্রুটি এবার শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করেছে ভারত। আগের অরবিটরটি এখনও চাঁদকে প্রদক্ষিণ করছে। তাই এবার ভারত কোনও অরবিটর পাঠাচ্ছে না। আগের বারের অরবিটরটির সাহায্য নেবে ল্যান্ডার আর রোভার।