রবিবার রাত ১২টা ৫ মিনিট নাগাদ দুই লাইনে ট্রেন চালু হয়। প্রথম ট্রেন চলার পরে হাত জোড় করে ভগবানকে ধন্যবাদ দিতে দেখা যায় রেলমন্ত্রীকে।
শুক্রবার রাতের স্মৃতি এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে। করমণ্ডল এক্সপ্রেস বিপর্যয়ের পর কেটে গিয়েছে দু'দিনেরও বেশি। অবশেষে ৫১ ঘন্টা পর পর প্রথম ট্রেন চলল বালেশ্বর রুটে। ভয়াবহ দুর্ঘটনার ধাক্কা কাটিয়ে আবার ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে রেল পরিষেবা। রবিবার রাতে বালেশ্বর জেলার বাহানাগা স্টেশন থেকে আপ এবং ডাউন লাইনে চলল প্রথম প্যাসেঞ্জার ট্রেন। ঘটনাস্থলেই উপস্থিত ছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। শুক্রবার থেকেই বালেশ্বরে দুর্ঘটনা স্থলে ছিলেন তিনি। রবিবার রাত ১২টা ৫ মিনিট নাগাদ দুই লাইনে ট্রেন চালু হয়। প্রথম ট্রেন চলার পরে হাত জোড় করে ভগবানকে ধন্যবাদ দিতে দেখা যায় রেলমন্ত্রীকে। টুইট করে পরিষেবা স্বাভাবিক হওয়ার কথা জানান অশ্বিনী বৈষ্ণব।
এদিন রেলমন্ত্রী বলেন,'দুর্ঘটনায় যাঁদের প্রাণ গিয়েছে তাঁদের ফিরিয়ে আনতে পারব না। কিন্তু উদ্ধারকারী দল এবং রেলকর্মীরা যেভাবে মনের জোর রেখে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন, লড়াই করলেন, তাঁদের সকলকে কুর্নিশ জানাচ্ছি।' প্রসঙ্গত, এর আগেও সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন,'দুর্ঘটনার কারণ চিহ্নিত করা গিয়েছে। কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি বালেশ্বর ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখবেন। কে বা কারা এর জন্য দায়ী তাও জানা গিয়েছে।' তিনি আরও বলেন,'ইলেকট্রনিং ইন্টারলকিং সিস্টেম পরিবর্তনের কারণেই এই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। আপাতত আমাদের প্রথম কাজ পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে এনে রেল পরিষেবা স্বাভাবিক করা।' শুধু তাই নয়, রবিবার ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষের জবাবে রেলমন্ত্রী স্পষ্ট জানান,'কবচের এর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই, যেটা আগের দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন। উনি এই বিষয় যতটা জানেন তার উপর ভিত্তি করেই বলেছেন। কিন্তু বিষয়টা সেরম নয়। এক্ষেত্রে পুরোটাই পয়েন্ট মেশিনের উপর নির্ভর করছে। ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং-এর উপর নির্ভর করছে। মূলত ইলেক্ট্রনিক ইন্টারলকিং-এ পরিবর্তনের কারণেই এই দূর্ঘটনা ঘটেছে। কারা এই কাজ করেছে তা তদন্ত সাপেক্ষ। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেছেন তা ঠিক নয়।'
দুর্ঘটনার জেরে উপড়ে গিয়েছে বালেশ্বর রুটের বাহানাগা স্টেশনের কাছের রেললাইন। ছাড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ট্রেনের বগির ভাঙা অংশ। দুর্ঘটনার জেরে প্রচুর ট্রেন বাতিল হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরাও। এই পরিস্থিতিতে যত তারাতারি সম্ভব ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক করা যায় ততই মঙ্গল। তবে কবে থেকে আবার স্বাভাবিক হবে পরিষেবা? শনিবার অবশেষে এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন রেলমন্ত্রী। শনিবার রাতে অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন,'উদ্ধারকাজ সম্পন্ন হয়েছে। আজ রাত থেকেই রেললাইন পুনরুদ্ধারের কাজ শুরু করে দেওয়া হচ্ছে। রবিবার সকাল থেকে লাইন পরিষ্কার, লাইন পুনর্নির্মাণ এবং ওভারহেড তারে বিদ্যুতের কাজ চলবে। সোমবার সকাল থেকে শুরু হবে সিগন্যালিং সিস্টেম পুনরুদ্ধারের কাজ। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় করা করা হচ্ছে সমস্ত কাজ।'