দুর্ভাগ্যজনক তথ্য সামনে এল। টাইমস অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত রিপোর্টে জানা গিয়েছে বিশ্বের মধ্যে একমাত্র ভারতেই করোনা ভাইরাসের টিকা নেওয়ার খরচ সবথেকে বেশি। ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়েসীদের যে টিকা দেওয়া হচ্ছে, তাতে খরচ পড়ছে প্রতি ডোজ ৭০০ থেকে ১৫০০ টাকা। কো উইন অ্যাপে দেওয়া তথ্য অন্তত সেকথাই বলছে।
বেসরকারি হাসপাতালগুলি নিজেদের ইচ্ছামতো টাকা নিচ্ছে করোনা টিকার জন্য বলে অভিযোগ। যেখানে ৪৫ বছরের উর্দ্ধে করোনা টিকা দিতে খরচ পড়ছিল ২৫০ টাকা, সেখানে প্রায় ছয় গুণ দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়েসীদের ক্ষেত্রে।
সেরাম ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ডের খরচ পড়ছে প্রতি ডোজ ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, সেখানে কোভ্যাক্সিন যা ভারত বায়োটেকের তৈরি, তার খরচ পড়ছে ১২৫০ থেকে ১৫০০ টাকা। কো উইন ওয়েবসাইট জানাচ্ছে চারটি বেসরকারি হাসপাতাল গ্রুপ আপাতত করোনা টিকা দেওয়ার দায়িত্ব পেয়েছে। এগুলি হল অ্যাপোলো, ম্যাক্স, ফর্টিস ও মণিপাল।
প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় যেখানে ১৫০ টাকায় প্রতি ডোজ ভ্যাকসিন মিলছিল, সেখানে হঠাৎ করে কেন দাম বাড়িয়ে দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলি একমত হয়েছিল যে ১০০ টাকার ভ্যাকসিন দেওয়ার খরচ বহন করবে। তবে এখন বেসরকারি হাসপাতালগুলি করোনা টিকা দেওয়ার জন্য কোভিশিল্ডের প্রতি ডোজ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকার দাম ধার্য করেছে।
বেসরকারি হাসপাতালগুলির দাবি শুধু করোনা টিকার দাম নয়, এতে যোগ হচ্ছে টিকা পরিবহণের খরচ, জিএসটি ও সংরক্ষণের খরচ। সব মিলিয়ে দাম বেড়ে যাচ্ছে। এছাড়াও ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য হাসপাতাল কর্মীদের পিপিই কিট, গ্লাভস, স্যানিটাইজারের খরচ রয়েছে, যা টিকার দামের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। ফলে দাম বেড়ে যাচ্ছে।
এদিকে, ভ্যাকসিনের দামের বৈষ্যম্য নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেখানে ভ্যাকসিনের দাম পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছিল। বলা হয়েছিল এটি ১৪ অনুচ্ছেদের (আইনের সাম্যতা) পরিপন্থী। এবং ২১ অনুচ্ছেদের (জীবন ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার সুরক্ষা) প্রতিরোধ নিশ্চয়তা করা জরুরি। তবে এখনও দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্য চাহিদা মত টিকার যোগান না থাকার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে। অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতাল ও রাজ্য সরকারগুলিকে কেন্দ্রের থেকে বেশি টাকায় টিকা কিনতে হচ্ছে বলেও সরব হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে ভ্যাকসিন সরবরাহের ৫০ শতাংশ বিনামূল্য রাজ্যগুলিকে সরবরাহ করা হবে। তবে বাকি ৫০ শতাংশ ভ্যাকসিন নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।