চিনের বিদেশ মন্ত্রক মুখে পূর্ব লাদাখের বিস্তীর্ণ সীমান্ত থেকে সেনা সরিয়ে আনা হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু কাজে একদমই অন্য ছবি প্রকাশ পাচ্ছে। সোমবার সন্ধ্যায় চিনা সেনার অনুপ্রবেশের চেষ্টার ফলে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল প্যাংগং-এর দক্ষিণ প্রান্ত। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আবারও আগ্রাসনের প্রমান দিল চিনের পিপিলস লিবারেশন আর্মির সদস্যরা। ভারতীয় সেনাবাহিনী সূত্রে খবর প্যাংগংএর উত্তর প্রান্তে ফিঙ্গার ফোর এলাকায় আরও শক্তি বাড়াচ্ছে লাল ফৌজ।
সূত্রের খবর প্যাংগং-এর উত্তর প্রান্তে বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই ঘাঁটি তৈরি করে বসেছিল লাল ফৌজ। সোমবারের ঘটনার পর থেকেই সেই এলাকায় আরও নতুন নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় ভারতের দিক থেকে খুব ভালো করেই দেখা গেছে চিনা সেনার গতিবিধি। ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর ফিঙ্গার এলাকায় তৈরি হয়েছে নতুন বেশ কয়েকটি সেনা শিবির, বাড়ানো হয়েছে চিনের সৈন্য সংখ্যা। সেনা বাহিনীর মধ্যে বিশেষ তৎপরতা শুরু হয়েছে। সোমবারের পর থেকে ভারতীয় সেনা বাহিনীর সঙ্গে আর নতুন করে চিনা বাহিনী সংঘাতে জড়ায়নি। বেশ কয়েকটি এলাকায় সামান্য দূরত্ব বজায় রেখেই দুই দেশের সেনা বাহিনী অবস্থান করছে। তবে ভারতীয় জওয়ানরা চিনা বাহিনীর গতিবিধির ওপর রীতিমত গুরুত্ব দিয়ে নজর রাখছে।
প্যাংগং-এর উত্তর প্রান্তে চারটি ফিঙ্গার এলাকায় রয়েছে। আর এই ফিঙ্গার দখল নিয়েই দুই বাহিনীর মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ভারত ৮ টি ফিঙ্গার এলাকাকেই নিজের বলে দাবি করে। কিন্তু চিন ভারতের সেই দাবি মানতে নারাজ। বর্তমানে চিনা সেনারা ৪ও ৫ নম্বর ফিঙ্গার এলাকায় রীতিমত ঘাঁটি তৈরি করে অবস্থান করছে। দীর্ঘ দিন ধরেই এই এলাকায় ভারত একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করে এসেছে। এই এলাকায় খুব করণ টহল দিয়েছে চিনা সেনা। কিন্তু গত এপ্রিল মাস থেকেই এই এলাকায় আচমাকাই চিনা সেনা তৎপরতা বাড়িয়ে দিয়েছে।
সামরিক ও কূটনৈতিক বঠকে চিন একাধিকবার স্পষ্ট করে দিয়েছে যে প্যাংগং-এর দখলদারি ছাড়তে তারা নারাজ। এই অবস্থায় ফিঙ্গার ফোর এলাকায় চিনের নির্মাণকাজ নিয়েও একাধিকবার প্রশ্ন তুলেছে ভারত। কিন্তু কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ভারত চিনা সেনার মোকাবিলা করার জন্য প্যাংগং লেক এলাকায় বেশ কয়েক পাহাড়ে ঘাঁটি তৈরি করে অবস্থান করছে। ওই এলাকাগুলি ভারতীয় ভূখণ্ডের মধ্যেই পড়ে। ওই এলাকাগুলি থেকে চিনের নিয়ন্ত্রণে থাকা মোলডো, স্প্যানগুর গ্যাপ আর গ্যারিসনকে খুব ভালো করে দেখা যায়। চিনা সেই এলাকাগুলি খালি করার দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু চিনা আগ্রাসন প্রতিহত করতে ভারত ওই এলাকাগুলি থেকে সেনা সরিয়ে নিতে নারাজ।