আল-ফালাহ ইউনিভার্সিটির ছাত্র মির্জা শাদাব বেগ, ২ বিস্ফোরণের মূলচক্রীর তথ্য পুলিশের হাতে

Published : Nov 20, 2025, 02:08 PM IST
আল-ফালাহ ইউনিভার্সিটির ছাত্র মির্জা শাদাব বেগ, ২ বিস্ফোরণের মূলচক্রীর তথ্য পুলিশের হাতে

সংক্ষিপ্ত

দিল্লি বিস্ফোরণের তদন্তে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন (IM) অপারেটিভ মির্জা শাদাব বেগের নাম আবার সামনে এসেছে। আল-ফালাহ ইউনিভার্সিটির এই B.Tech গ্র্যাজুয়েট ২০০৭-০৮ সালের বিস্ফোরণ, IED তৈরি এবং আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে জানা গেছে।

নয়াদিল্লি। দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের তদন্তে একটি বড় তথ্য ফাঁস হয়েছে। আল-ফালাহ ইউনিভার্সিটি, যা এতদিন একটি সাধারণ প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি হিসেবে পরিচিত ছিল, এখন সে সম্পর্কে চমকপ্রদ তথ্য সামনে এসেছে। পুলিশের গোপন রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ইউনিভার্সিটি একটি গভীর জঙ্গি নেটওয়ার্কের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। এই ইউনিভার্সিটি থেকেই পড়াশোনা করা কুখ্যাত মির্জা শাদাব বেগ, যে ভারতে ২০০৭-০৮ সালের মধ্যে হওয়া একাধিক ধারাবাহিক বিস্ফোরণের মূলচক্রী ছিল। শাদাব বেগ, যে ২০০৭ সালে ইলেকট্রনিক্সে B.Tech করেছিল, সে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের (IM) একজন গুরুত্বপূর্ণ অপারেটিভ ছিল। তার ইঞ্জিনিয়ারিং জ্ঞান তাকে IED এবং উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন বোমা তৈরিতে সাহায্য করেছিল। তদন্তকারী সংস্থাগুলোর মতে, তার প্রযুক্তিগত জ্ঞান IM-এর জন্য একটি বড় অস্ত্র হয়ে উঠেছিল।

আল-ফালাহ ইউনিভার্সিটি কি 'টেরর গ্রুমিং গ্রাউন্ড' ছিল?

রিপোর্ট অনুযায়ী, শুধু বেগই নয়, আরও অনেক অভিযুক্ত এই ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যুক্ত বলে জানা গেছে। এর ফলে এই সন্দেহ আরও জোরালো হচ্ছে যে, ইউনিভার্সিটিটিকে সন্ত্রাসবাদী নিয়োগ এবং পরিকল্পনার জন্য গোপনে ব্যবহার করা হচ্ছিল।

মির্জা শাদাব বেগের জঙ্গি কার্যকলাপের কাহিনি- ২০০৮ বিস্ফোরণের সঙ্গে যোগসূত্র কী?

বেগ ২০০৮ সালের জয়পুর, আহমেদাবাদ এবং সুরাট বিস্ফোরণে জড়িত ছিল। সে কর্ণাটকের উডুপি থেকে ডেটোনেটর কিনে ভাটকল ভাইদের কাছে পৌঁছে দিয়েছিল। দিল্লি পুলিশের মতে, আহমেদাবাদ হামলার আগে সে ১৫ দিন শহরে থেকে এলাকা পর্যবেক্ষণ (রেকি) করে এবং তিনটি দলকে প্রশিক্ষণ দেয়। ২০০৭ সালের গোরখপুর বিস্ফোরণেও তার নাম উঠে আসে। IM নেটওয়ার্ক ভেঙে যাওয়ার পর সে পালিয়ে যায় এবং শেষবার ২০১৯ সালে তাকে আফগানিস্তানে দেখা গিয়েছিল। শুধু তাই নয়, এই সেই বেগ যে আল-ফালাহ ইউনিভার্সিটি থেকে B.Tech ইলেকট্রনিক্স নিয়ে পড়াশোনা করে এবং নিজের ইঞ্জিনিয়ারিং জ্ঞান বোমা বানানোর কাজে লাগায়।

দিল্লি বিস্ফোরণে আফগানিস্তান যোগসূত্রই কি সবচেয়ে বড় সূত্র?

পুলিশের মতে, বেগের আফগানিস্তান যোগসূত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আধিকারিকরা এটাও খতিয়ে দেখছেন যে, ২০০০ সালের লালকেল্লা হামলার সঙ্গেও তার কোনো যোগসূত্র ছিল কি না। দিল্লি বিস্ফোরণের একদিন আগে গ্রেফতার হওয়া ডঃ মুজাম্মিল শাকিলও আফগানিস্তানে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিয়েছিল এবং দুজনেই একই ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেছিল। তদন্তকারী সংস্থাগুলো এখন ২০০৭, ২০০৮ এবং সাম্প্রতিক দিল্লি বিস্ফোরণের সমস্ত সূত্র মেলানোর চেষ্টা করছে।

আল-ফালাহ ইউনিভার্সিটি কি সন্ত্রাসবাদী নেটওয়ার্কের 'হাব' ছিল?

দিল্লি পুলিশের গোপন রিপোর্টে স্পষ্টভাবে লেখা আছে যে, জঙ্গি কার্যকলাপের শিকড় আল-ফালাহ ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যুক্ত। সম্প্রতি গ্রেফতার হওয়া ডঃ মুজাম্মিল শাকিল—যাকে দিল্লি বিস্ফোরণের ঠিক একদিন আগে ধরা হয়েছিল—সেও এই ইউনিভার্সিটি থেকেই পড়াশোনা করেছিল এবং আফগানিস্তানে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নেওয়ার কথা সামনে এসেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে যে মির্জা শাদাব বেগও এখানকার ছাত্র ছিল, যে ২০০৭ সালে ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে। এরপর সে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনে (IM) যোগ দেয় এবং বোমা তৈরিতে দক্ষ একজন অপারেটিভ হয়ে ওঠে।

মির্জা শাদাব বেগ আসলে কে?

উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ের বাসিন্দা বেগ বেশ কয়েক বছর ধরে পলাতক। সে ২০০৮ সালে IM নেটওয়ার্ক ফাঁস হওয়ার পর আত্মগোপন করে।

তদন্তকারী সংস্থাগুলোর মতে-

  • সে ২০০৮ সালের জয়পুর বিস্ফোরণে জড়িত ছিল।
  • সে উডুপি (কর্নাটক) থেকে ডেটোনেটর কিনেছিল।
  • ভাটকল ভাইদের—রিয়াজ ও ইয়াসিনকে বিস্ফোরক সরবরাহ করেছিল।
  • আহমেদাবাদ-সুরাট বিস্ফোরণের পরিকল্পনায় সে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
  • দিল্লি বিস্ফোরণের ১৫ দিন আগেই সে শহরে পৌঁছে এলাকা পর্যবেক্ষণ (রেকি) করেছিল।

শেষবার তাকে ২০১৯ সালে আফগানিস্তানে দেখা গিয়েছিল এবং তার মাথার ওপর এখনও ১ লক্ষ টাকার পুরস্কার রয়েছে।

দিল্লি বিস্ফোরণের সঙ্গে কি আফগানিস্তানেরও যোগসূত্র আছে?

  • তদন্তকারী আধিকারিকদের দাবি, দিল্লি বিস্ফোরণ এবং আফগানিস্তান নেটওয়ার্কের মধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ যোগসূত্র সামনে আসছে।
  • সিনিয়র আধিকারিকরা বলছেন যে লালকেল্লা বিস্ফোরণের সঙ্গেও এর যোগ থাকতে পারে।
  • ২০০৭-০৮ সালের বিস্ফোরণ এবং সাম্প্রতিক বিস্ফোরণের ধরনের মধ্যে মিল রয়েছে।
  • আফগানিস্তানে IM নেটওয়ার্ক সক্রিয় থাকার জোরালো প্রমাণ রয়েছে।

ভারতে হওয়া একাধিক বিস্ফোরণের কলকাঠি কি আফগানিস্তানে বসে থাকা কোনো নেটওয়ার্ক নাড়ছিল?

এটা কি শুধু শুরু?

আল-ফালাহ ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যুক্ত দুই বড় সন্দেহভাজনের পর পুলিশের সন্দেহ যে আরও অনেক নাম সামনে আসতে পারে। এই পুরো বিষয়টি আর শুধু দিল্লি বিস্ফোরণের তদন্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই।

PREV
Read more Articles on
click me!

Recommended Stories

বীর বাল দিবস ২০২৫: বৈভব সূর্যবংশীকে সর্বোচ্চ পুরস্কার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর
আদমশুমারি ২০২৭: ৩০ লক্ষ কর্মী, ১১,৭১৮ কোটি টাকা বাজেট, শুরু হতে চলেছে মহাযজ্ঞ