'এতটা নিষ্ঠুর হতে পারে', নির্ভয়াকে প্রথম দেখে কেঁদে ফেলেছিলেন ডাক্তারও

  • নির্ভয়ার আসামিদের ফাঁসির তোড়জোড় চলছে।
  • হয়তো শেষ পর্যন্ত একদিন ফাসি হয়েও যাবে।
  • কিন্তু তাও ডাক্তার বিপুল কান্ডওয়ালের মনের ক্ষত মিটবে না।
  • বিভীষিকাময় সেই রাতে তিনিই নির্ভয়াকে প্রথম চিকিৎসা করেছিলেন।

 

নির্ভয়ার আসামিদের ফাঁসির তোড়জোড় চলছে। বুধবার প্রথমে জানা গিয়েছিল, রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন জানানোয় ২২ তারিখ থেকে ফাঁসির দিন পিছিয়ে যেতে পারে। কিন্তু পরে আবার জানানো হয়, ২২ তারিখই ফাঁসি হবে। এই সব নাটকীয় পরিবর্তনের মধ্যে বারবার সেই অপাপবিদ্ধ মেয়েটার যন্ত্রনায় কুঁকড়ে থাকা মুখটা ভেসে উঠছে ডাক্তার বিপুল কান্ডওয়ালের। ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে তিনিই রক্তে ভেসে যাওয়া, দেহে সামান্য় জামাকাপড় থাকা ক্ষতবিক্ষত নির্ভয়াকে প্রথম দেখেছিলেন।

আরও পড়ুন - পৈশাচিক অত্যাচারের একমাত্র সাক্ষী, কেমন আছেন নির্ভয়ার সেই পুরুষ বন্ধু

Latest Videos

ওই রাতে মৃতপ্রায় নির্ভয়া-কে বাস থেকে ফেলে ছয় নরপিশাচ চম্পট দেওয়ার পর তাঁকে প্রথমে নিয়ে আসা হয়েছিল নয়াদিল্লির সফদরজং হাসপাতালে। সেখানে নির্ভয়ার অবস্থা দেখে চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে এসেছিল বিপুল কান্ডওয়ালেরও। সম্প্রতি, তিনি জানিয়েছেন 'আজ পর্যন্ত নির্মমতার এমন চিত্র তিনি আর কখনও দেখেননিট। নির্ভার অবস্থা দেখে তাঁর চেতনাও কাঁপল।

আরও পড়ুন - ফাঁসির আগের রাতে কেঁদে ভাসাল চার নরপিশাচ, শোনানো হল গীতা

বর্তমানে, ডাক্তার বিপুল কান্ডওয়াল দেরাদুন হাসপাতালে কর্মরত। তবে সেই রাতে তিনি ছিলেন সফদরজং হাসপাতালের এমার্জেন্সি বিভাগের দায়িত্বে। এক সর্বভারতীয় সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে তিনি বলেছেন, রাত তখন প্রায় দেড়টা হবে। সেই সময়, সাইরেন বাজিয়ে দ্রুতগতিতে এসে পৌঁছেছিল একটি অ্যাম্বুলেন্স। সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে জরুরি বিভাগে চিকিত্সার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। ডাক্তার কান্ডওয়াল এসে দেখেছিলেন তাঁর সামনে একটি ২১ বছরে মেয়ে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পড়ে আছে।

আরও পড়ুন - ভাঙল দাদু কালুরাম-এর রেকর্ড, নির্ভয়াকে ন্যায়বিচার দিয়ে কী বলছেন পবন জল্লাদ

তার শরীরের ছেঁড়া জামা-কাপড় সরিয়ে পরীক্ষা করতে যেতেই ডাক্তারবাবুর নিজেরই হৃদয় থমকে গিয়েছিল। বিপুল কান্ডওয়ালে জানিয়েছে তার আগে তিনি ওইরকম চোট আগে কখনও দেখেননি। চিকিৎসা করবে কী, মনে বারবার প্রশ্ন জাগছিল কেউ কীভাবে এতটা নিষ্ঠুর হতে পারে?

তারপর ফের পেশাদারি কাঠিন্যে নিজেকে মুড়ে কাজ শুরু করেছিলেন। রক্ত ​​বন্ধ করার জন্য তিনি প্রাথমিক অস্ত্রোপচার শুরু করেন। কিন্তু তাতে রক্ত ​​থামেনি। কারণ লোহার রড দিয়ে করা আঘাতের ক্ষতগুলি এত গভীর ছিল যে তার জন্য বড় ধরনের অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন ছিল। এমনকী, ছিঁড়েখুড়ে গিয়েছিল অন্ত্রও। তিনি তখনও জানতেন না কে ওই মেয়েটি। তারপর হাসপাতালে শুরু হয়েছিল পুলিশ ও সংবাদকর্মীদের ভিড়।

পরের দু-তিন সপ্তাহ দিন-রাত এক করে তাঁরা নির্ভয়া-কে সুস্থ করার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি প্যানেলও গঠন করা। তাতে ডাক্তার বিপুল কান্ডওয়াল-কেও রাখা হয়েছিল। পরে নির্ভয়ার অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে তাঁকে আরও এইমস-এ পাঠানো হয়। পরে সেখান থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরের হাসপাতালেও পাঠানো হয়। কিন্তু সমস্ত প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছিল।

তারপর সাত বছর কেটে গিয়েছে। সফদরজং হাসপাতাল থেকে দেরাদুনে চলে এসেছেন ডাক্তার বিপুল কান্ডওয়াল। কিন্তু, এখনও ওই রাতের নির্ভয়ার ছবিটা তাঁর মন থেকে মুছে ফেলতে পারেননি। আর রয়ে গিয়েছে নির্ভয়া-কে না বাঁচাতে পারার একরাশ আক্ষেপ।

 

Share this article
click me!

Latest Videos

লজ্জা মমতার! জঙ্গিদের স্বর্গরাজ্য এই বাংলা!| Suvendu Adhikari #shorts #shortsvideo #suvenduadhikari
PM Modi Live : কুয়েতে Gulf Spic-এর ভারতীয় কর্মীদের সঙ্গে আড্ডা মোদীর, দেখুন সরাসরি
পুলিশের তৎপরতায় বানচাল ডাকাতির প্ল্যান! গ্রেফতার ২ অপরাধী, চাঞ্চল্য Birbhum-এ
Suvendu Adhikari: 'কত বড় জিহাদি, রামনবমীর মিছিলে ঢিল মেরে দেখাও', হুঙ্কার শুভেন্দুর
খাদান নিয়ে Dev কে বিশ্রী আক্রমণ রাজের, দেবের পাশে দাঁড়িয়ে পাল্টা দিলেন Aritra Dutta Banik