লকডাউনের মরশুমে যেভাবে দেশজুড়ে সংকটে পড়েছেন পরিযায়ী শ্রমিক থেকে শুরু করে দিন-আনা দিন-খাওয়া মানুষগুলো, তাতে করে অচিরেই খাবার নিয়ে দাঙ্গা বেধে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করলেন অর্থনীতিবিদ প্রণব সেন। দেশের প্রাক্তন মুখ্য় পরিসংখ্য়ানবিদের মতে, লকডাউনের মরশুমে যদি সবার জন্য় খাবার নিশ্চিন্ত করা না-যায়, তাহলে খাদ্য়দাঙ্গা বেধে যাওয়া অসম্ভব কিছু নয়। আর অর্তনীতিবিদ জঁ দ্রেজ সরকারের কাছে দেশের শস্য় গুদামগুলো খুলে দেওয়ার আর্জি জানালেন।
লকডাউনের সময়ে পরিযায়ী শ্রমিকরা কেউ পাড়ি দিয়েছেন দুশো কিলোমিটার, কেউ-বা সাতশো কিলোমিটার। কাঁধে ঘুমন্ত বাচ্চা আর হাতে পোঁটলা নিয়ে অভুক্ত শরীরে তাঁদের সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার ভিডিয়ো দেখে শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। শুধু তাই নয়, এই দীর্ঘপথে তাঁদের একটু খাবার বা জল না-জুটলেও জুটেছে পুলিশের বেদম মার। কোথাও আবার পুলিশ তাঁদের কপালে লিখে দিচ্ছে-- লকডাউন অমান্য় করেছি, তাই আমার কাছে কেউ আসবেন না। এমনকি, সোমবার একটি ভিডিয়ো কার্যত ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, বাচ্চা ও মহিলা-সহ পরিযায়ী শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের সবাইকে একজায়গায় বসে রাসায়নিক স্প্রে করা হচ্ছে!
ইতিমধ্য়েই বেশ কয়েকজন পরিযায়ী শ্রমিক ও তাঁদের পরিবার পরিজনদের মৃ্ত্য়ুর খবরও এসেছে। মনে করা হচ্ছে, সংখ্য়াটা কুড়ির কাছাকাছি। এবং তা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, ভিনরাজ্য়ে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকরা এই মুহূর্তে কার্যত নিঃস্ব। খাবার না-পেলে এবার তাঁরা যে কোনও পথ অবলম্বন করতে পিছ-পা হবেন না।
এই পরিস্থিতিতে অমর্ত্য় সেনের সহলেখক ও অর্থনীতিবিদ জঁ দ্রেজ সরকারের কাছে দেশের শস্য় গুদামগুলো খুলে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন বলে খবর। কারণ, লকডাউন চলতে থাকলে, নিম্নবিত্ত মানুষগুলোর পক্ষে খাবার জোগাড় করার মতো অর্থ আর অবশিষ্ট থাকবে না।