রাবণের অহংঙ্কার থাকেনি, মমতারও থাকবে না
বিস্ফোরক মন্তব্য কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগে কী হবে বিজেপির রণনীতি
একান্ত সাক্ষাৎকারে এশিয়ানেটকে কী জানালেন বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক
২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে রাজ্যে আরও তীব্র হয়েছে রাজনৈতিক হিংসা। সম্প্রতি হাওড়ায় বিজেপির সমাবেশ চলাকালীন শিখ যুবক বলবিন্দর সিং-এর সঙ্গে পুলিশি বর্বরতার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে বিজেপি ফের মমতা সরকারের বিপুদ্ধে তুষ্টিকরণ ও হিংসার রাজনীতি করার অভিযোগ এনেছে। এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা বাংলার ইনচার্জ কৈলাস বিজয়বর্গীয় এশিয়নেট নিউজ-এর হিন্দি প্রতিবেদককে একান্ত সাক্ষাৎকারে মমতা সরকারের ব্যর্থতা, বিজেপির পরবর্তী কৌশল-সহ বিভিন্ন বিষয়ে খোলামেলা কথা বললেন -
প্রশ্ন: আপনি দীর্ঘদিন ধরে বাংলায় বিজেপি সরকার গঠনের জন্য সক্রিয়। সরকার কি হবে?
উত্তর: হ্যাঁ, একশোভাগ সরকার গঠিত হবে। দুই-তৃতীয়াংশ গরীষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করব।
প্রশ্ন: মমতা সরকার কি তুষ্টিকরণের নীতি নিয়ে চলছে?
উত্তর: মমতাজি এই ভুলটিই করছেন। তুষ্টিকরণের জন্য মমতার প্রতি মানুষের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এর জন্য মমতাজির বিরুদ্ধে মানুষের মধ্যে বিদ্বেষ তৈরি হয়েছে। এই কারণেই তিনি হিংসার রাজনীতি শুরু করেছেন।
প্রশ্ন: সিপিআই এবং কংগ্রেসও কি প্রতিদ্বন্দ্বী?
উত্তর: না, দুই দলের মিলিত ভোট মাত্র ৮-৯ শতাংশ। আমাদের লড়াই সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে। বিজেপি এবং টিএমসির ভোট শতাংশের মধ্যে ২-৩ শতাংশ পার্থক্য রয়েছে। এটি কভার করতে পারলেই আমাদের সরকার গঠন হবে।
প্রশ্ন: বিজেপি প্রতিবাদ কি চলতেই থাকবে? বাংলায় কি সবকিছু ঠিক নেই? শিখ যুবকের সঙ্গে যা হয়েছে সেই সম্পর্কে কী বলবেন?
উত্তর: বাংলায় মাত্র ৩০ শতাংশ লোকের (সমর্থনের) সরকার রয়েছে। মমতা সরকার মাত্র ৩০ শতাংশ ভোট ব্যাঙ্ক নিয়ে চিন্তিত। তাই তাদের বিরুদ্ধে জনরোষও রয়েছে। শিখ সম্প্রদায়ও ওই ৭০ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। সুতরাং তাদের অপমান নিয়েও চিন্তা করবেন না (মমতা)। এই ক্ষেত্রে সরকারের উচিত ক্ষমা চাওয়া।
প্রশ্ন: বাংলায় প্রতিবাদের বিষয়গুলি কী কী?
উত্তর: দারিদ্র্য, বেকারত্ব, কৃষকরা উৎপাদনের মূল্য পান না, তুষ্টকরণ নীতি রয়েছে, হিংসার রাজনীতি রয়েছে। জনসাধারণকে এ সমস্ত কিছুর জন্য ভুগতে হচ্ছে। সেই কারণেই জনগণ এমন একটি সরকার চায় যা স্বচ্ছ, সুষ্ঠু, ন্যায্য, যা সবার পক্ষে কাজ করে। যেখানে কোনও তুষ্টিকরণ নেই। সবকা সাথ সবকা বিশ্বাস আছে। জনগণ মনে করেন মোদীজির নেতৃত্বেই এ ধরণের সরকার গঠন করা যেতে পারে। অতএব, বিজেপি এবং মোদীজির প্রতি জনগণের বিশ্বাস বেড়েছে।
প্রশ্ন: বিক্ষোভ চলাকালীন অরবিন্দ মেননের সঙ্গে পুলিশ যা করেছে, তাতে কি বিজেপি ভয় পাচ্ছে? কৌশল কি বদলে ফেলা হবে?
উত্তর: না, আমরা ভয় পাওয়ার বান্দা নই। আমরা ভেঙে পড়ার বা পালানোর লোক নই। আমরা রুখে দাঁড়াই। আমরা সব সমস্যার মোকাবিলা করব। যদি বলিদান দিতে হয়, তবে বলিদান দেব। সেনা জওয়ানদের মতো আমরা অবিচল থেকে কাজ করে যাব। বাংলা দেশের অঙ্গ, এখানে আমরা অরাজকতা অবসানের জন্য লেগে থাকব। উন্নয়নের জন্য নিয়োজিত থাকব।
প্রশ্ন: মমতা সরকার কি বিজেপিকে দমন করার চেষ্টা করছে?
উত্তর: হ্যাঁ, বাংলায় আগে থেকেই এটা ঘটছে। বিরোধীদের দমন-পিড়ন করা হয়। সিপিএম সরকারের সময় এমনটাই হয়েছিল। তারপর সিপিএম-এর সঙ্গে হয়েছিল। তারপর কংগ্রেসের শক্তি কমানো হয়েছে। কংগ্রেসের লোকদের হত্যা করা হয়েছিল। এখন বিজেপিকে দমন করার চেষ্টা চলছে। তবে বিজেপি কর্মীরা ভিন্ন মাটির তৈরি। বিজেপিকে যত দমানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, বিজেপির শক্তি ততই বাড়ছে।
প্রশ্ন: শিখ যুবকের যে ঘটনাটি ঘটেছে, সেই সম্পর্কে কী বলবেন?
উত্তর: কখনও কখনও সরকার ইচ্ছে করে এমন ভুল করে। কখনও কখনও ভুল করেই ভুল হয়ে যায়। যখন অনিচ্ছাকৃত ভুল হয়, তখন সরকার তার নিজের ভুল মেনে নেয়। ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে তাকে রক্ষা করাটাই স্পষ্ট বলে দেয় যে সরকার এক শ্রেণির মানুষের প্রতি দায়বদ্ধ নয়। এটি দেখায় যে সরকার অহঙ্কারী। আমরা যা করেছি ঠিক করেছি এই অহং প্রকট হয়ে যায়। রাবণের অহংঙ্কার থাকেনি, এই সরকারেরও থাকবে না। বিজেপি এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে।